আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার: জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে নিতে হবে পদক্ষেপ


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: নভেম্বর ০১, ২০২৩ ৮:০৫ অপরাহ্ণ অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার: জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে নিতে হবে পদক্ষেপ
Spread the love

বার্তা ডেস্ক ॥ দেশে বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগের চিকিৎসায় কার্যকারিতা হারাচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক। বিষয়টি উদ্বেগজনক। দেশে গত তিন বছরেই আগের তুলনায় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বেড়েছে ৩১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ফলে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স। জানা যায়, ২০১৪ সালে প্রতি হাজার রোগীর মধ্যে প্রতিদিন অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ছিল ১৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ; ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৪ দশমিক ১১ শতাংশে; ২০২০ সালে তা ২৫ দশমিক ৩৪ শতাংশে এসে পৌঁছায়। ২০২১ সালে প্রতি হাজারে দৈনিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের হার বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ শতাংশে। যেহেতু এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, সেহেতু এর অপব্যবহার রোধ করতে হবে। ২০১৯ সালে বিশ্বে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের সঙ্গে সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪৯ লাখ ৫০ হাজার; যার মধ্যে ১২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ সরাসরি রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়ার কারণেই মারা গেছে।

জানা যায়, সম্প্রতি সবজিতেও ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ লক্ষ করা গেছে। উদ্বেগের বিষয় হলো, শুধু চিকিৎসাক্ষেত্রে নয়; উৎপাদন বাড়াতে দেশের পোলট্রি, ডেইরি ও ফিশারিজ শিল্পেও ক্ষতিকারক অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। জীবন রক্ষাকারী অতি প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার হওয়া উচিত পরিমিত ও প্রয়োজন অনুযায়ী। দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ও নির্বিচার ব্যবহারের কারণে এখন আর সাধারণ মানের কোনো অ্যান্টিবায়োটিকে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

গরিব মানুষ অর্থের অভাবে চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে নিকটবর্তী ওষুধের দোকানে কর্মরত লোকদের পরামর্শে ঘনঘন অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেন। কাজেই গরিব মানুষ যাতে স্বল্প অর্থের বিনিময়ে বা বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা দরকার। বাণিজ্যিক চিন্তা থেকেও অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে। সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিকের দাম বেশি। কাজেই বেশি দামি ওষুধ বিক্রিতে বেশি লাভ করার সুযোগ থাকে। এ বিষয়ে চিকিৎসক সমাজকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সমীক্ষা থেকে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ সম্পর্কে জানানোর ফলে তাদের মধ্যে সফলতা এসেছে ৩৫ শতাংশ। অন্যদিকে সেবাদানকারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সফলতা পাওয়া গেছে মাত্র ৬ শতাংশ; আর সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করার চেষ্টা করে সফলতা এসেছে ১২ শতাংশ। কাজেই শিক্ষার্থীদের অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করা হলে তাদের মাধ্যমে পরিবারের অন্য সদস্যরা এ বিষয়ে সঠিক বার্তা পাবে। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের প্রভাব, এর অপব্যবহার, কীভাবে দিন দিন অ্যান্টিবায়োটিক মাটি-পানির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে-এসব বিষয়েও জনগণকে সচেতন করতে হবে।