Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the rocket domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
দূষণে দেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার অকাল মৃত্যু - আজকের বার্তা
আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

দূষণে দেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার অকাল মৃত্যু


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৪ ৮:০৭ অপরাহ্ণ দূষণে দেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার অকাল মৃত্যু
Spread the love

বার্তা ডেস্ক ॥  নানা ধরনের দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটছে। বায়ুদূষণ, অনিরাপদ পানি, নিম্নমানের স্যানিটেশন ও হাইজিন এবং সীসা দূষণ বছরে এই মৃত্যু হচ্ছে। ফলে বছরে ৫ দশমিক ২ বিলিয়ন দিন অসুস্থতায় অতিবাহিত করতে হয় এসব মানুষদের।

পরিবেশগত কারণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপির ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। ঘরের এবং বাইরের বায়ূদূষণ স্বাস্থ্যের ওপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা ৫৫ শতাংশ অকাল মৃত্যুর জন্য দায়ী। এটি ২০১৯ সালের জিডিপির ৮ দশমিক ৩২ শতাংশের সমপরিমাণ।

বিশ্বব্যাংকের ‘দ্যা বাংলাদেশ কান্ট্রি এনভায়রনমেন্ট অ্যানালাইসিস (সিইএ)’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধীর ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত সেমিনারের মাধ্যমে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিস এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক। বক্তব্য দেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ আনা লুইসা গোমেন লিমা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ উদ্বেগজনক মাত্রার দূষণ এবং পরিবেশগত স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে- যা তুলনামূলক বেশি ক্ষতি করেছে দরিদ্র, পাঁচ বছরের কম কয়সি শিশু, বয়স্ক এবং নারীদের।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের অনেক বড় ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নদীর কারণে বাংলাদেশ ডাউনে অবস্থিত হওয়ায় প্লাস্টিকসহ নানা বর্জ্য ভেসে আসছে। এ নিয়েও কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনসহ অনেক ক্ষেত্রে কোনো অবদান না রাখলেও ক্ষতির বোঝা ঘারে নিতে হচ্ছে বাধ্য হয়েই। সেই সঙ্গে জলবায়ু তহবিলের যে অর্থ পাওয়া যাচ্ছে তার ৪০ শতাংশই হচ্ছে ঋণ। এটা কাম্য হতে পারে না। আমাদের দেশের উন্নয়নে সবুজ বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশের জন্য পরিবেশের ঝুঁকি মোকাবিলা একই সঙ্গে উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার। আমরা পৃথিবীর নানা দেশে দেখেছি যে পরিবেশের ক্ষতি করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলে তা টেকসই হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির গতিপথ টেকসই রাখতে এবং শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নতি করতে বাংলাদেশ কোনোভাবেই পরিবেশকে উপেক্ষা করতে পারবে না। উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে পরিবেশের ক্ষয় রোধ এবং জলবায়ু সহিষ্ণু নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্বব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন, পরিবেশ দূষণ শিশুদের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। সীসা বিষক্রিয়া শিশুদের মস্তিকের বিকাশে অপরিবর্তনীয় ক্ষতি করছে। ফলে বছরে প্রাক্কলিত আইকিউ ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ২০ মিলিয়ন পয়েন্ট। গৃহস্থালিতে কঠিন জ্বালানির মাধ্যমে রান্না বায়ূদূষণের অন্যতম উৎস এবং তা নারী ও শিশুদের বেশি ক্ষতি করছে। শিল্পের বর্জ্য এবং অনিয়ন্ত্রিত প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন বর্জ্য এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসা অপরিশোধিত ময়লাযুক্ত পানির কারণে দেশের নদীগুলোর পানির গুণগত মানের মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।

তিনি বলেন, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সময়মতো এবং জরুরি হস্তক্ষেপ, উন্নত পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) এবং সীসা দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রতি বছর এক লাখ ৩৩ হাজারের বেশি অকালমৃত্যু ঠেকাতে পারে। সবুজ বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ, রান্নায় সবুজ জ্বালানি ব্যবহার এবং শিল্পকারখানা থেকে দূষণ রোধে কঠোর নিয়ন্ত্রণ বায়ুদূষণ কমাতে পারে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং এই রিপোর্টের সহকারী প্রণেতা আনা লুইসা গোমেজ লিমা বলেন, সময়মতো এবং সঠিক নীতি ও কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরিবেশ দূষণের ধারা পাল্টে ফেলতে পারে। পরিবেশ সুরক্ষা জোরদারে পদক্ষেপ এবং রান্নায় সবুজ জ্বালানির জন্য বিনিয়োগ ও অন্যান্য প্রণোদনা, সবুজ অর্থায়ন বাড়ানো, কার্যকর কার্বন মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং সচেতনতা বাড়ানো দূষণ কমাতে পারে এবং এর ফলে সবুজ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব।