বার্তা ডেস্ক ॥ বরিশালে দেড় মাসের এক শিশুর চিকিৎসার জন্য ফার্মেসি থেকে আনা ইনজেকশন মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল অভিযোগ তুলে তার স্বজনরা দাবি করেছেন, ওই ওষুধ প্রয়োগ করায় শিশুটির অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাকে এখন বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার পূর্ব সোহাগদল এলাকার বাসিন্দা টেইলার্স কর্মচারী মিরাজের সঙ্গে চার বছর আগে বিয়ে হয় একই এলাকার তাসলিমা বেগমের। আয়ান নামে দেড় মাসের শিশুটি এই দম্পতির প্রথম সন্তান।
গত ৮ মার্চ জ্বর নিয়ে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয় শিশু আয়ান। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ‘আলট্রাপাইম ৫০০’ ইনজেকশন দিতে বললে হাসপাতালের সামনের ফার্মেসি থেকে ওষুধটি নিয়ে আসেন স্বজনরা। এরপর নিয়ম মেনে প্রতিদিন দুইবেলা সেই ইনজেকশন শিশুটিকে দিতে থাকেন হাসপাতালের নার্সরা। তবে আটটি ইনজেকশন দেওয়ার পর আয়ানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্বজনরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তখন বিষয়টি ঘাঁটতে গিয়ে তারা জানতে পারেন, তিনটি ইনজেকশনের মেয়াদ ছিল না।
স্বজনদের দাবি, শিশুটির দেহে ওই তিনটি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে। ফলে আয়ান এখন নতুন করে আবার অসুস্থ। তার এমন অসুস্থতায় এদিক-ওদিক ছোটোছুটি করে দিশেহারা পুরো পরিবার।
যদিও এমন অভিযোগ মানতে নারাজ হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স রোজিনা বেগম। তিনি বলেন, সব কিছু চেক করে দেওয়া হয়েছে। পুশ করার সময় ওষুধের মেয়াদ যাচাই করে নেন তারা।
আর মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো ওষুধই বিক্রি হয় না বলে দাবি করেছেন ইয়ামিন মেডিকেল হল নামে ফার্মেসিটির স্টাফরা।
যদিও অভিযোগ পেয়ে ইয়ামিন মেডিকেল হলে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় নির্ধারিত মূল্য কেটে অধিক দামে ওষুধ বিক্রির প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক অপূর্ব অধিকারী।
তিনি জানান, আয়ানের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কারও দায়িত্বে অবহেলা থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।