Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the rocket domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
পায়রা সেতুর টোল প্লাজায় জরিমানা ফাঁকি দিতে বিকল্প সড়কে পণ্যবাহী ট্রাক - আজকের বার্তা
আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

পায়রা সেতুর টোল প্লাজায় জরিমানা ফাঁকি দিতে বিকল্প সড়কে পণ্যবাহী ট্রাক


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪ ৭:০৯ অপরাহ্ণ পায়রা সেতুর টোল প্লাজায় জরিমানা ফাঁকি দিতে বিকল্প সড়কে পণ্যবাহী ট্রাক
Spread the love

বার্তা ডেস্ক ॥  পটুয়াখালী-ঢাকা মহাসড়কের লেবুখালী এলাকায় পায়রা নদীর ওপর স্থাপিত পায়রা সেতু ও স্থাপিত ওজন স্কেল ফাঁকি দিতে মালামাল বোঝাই ভারী ট্রাকগুলো বিকল্প সড়ক ব্যবহার করছে। প্রায় ২০ কিলোমিটার ঘুরে একটি ফেরি ও পাঁচটি জরাজীর্ণ বেইলি ব্রিজ ব্যবহার করে পটুয়াখালীতে যাতায়াত করছে যানবাহন।

এতে পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে একাধিক সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অপরদিকে পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। পটুয়াখালী সড়ক বিভাগ এক হাজার ১১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে পায়রা নদীর ওপর এক হাজার ১৭০ মিটার দীর্ঘ ও ১৯.৭৬ মিটার প্রস্থের সেতুটি নির্মাণ করে এবং ২০২১ সালের ২৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করেন।

দৃষ্টি নন্দন এ সেতুটি চালুর পর সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাথে রাজধানী ঢাকার নিরবিচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ গড়ে ওঠে। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমুল পরিবর্তন ঘটে। এছাড়াও ধান, তরমুজসহ এ জেলায় উৎপাদিত নানাবিধ কৃষিজপণ্য ট্রাকযোগে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহজেই পৌছে যাচ্ছে।

প্রথম দিন থেকেই সেতুটিতে টোল আদায় চালু হলেও এ টোল আদায় সিস্টেমকে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজ করা হয় গত বছরের আগস্ট মাসে। এ সিস্টেম চালুর ফলে এ সেতু পারাপারে ট্রাকগুলোকে ওজন স্কেলের ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ওজন স্কেল পার হলেই ট্রাককে সেতুটি পারাপারের অনুমতি দেয়া হচ্ছে নতুবা ট্রাকগুলো পারপার হতে পারছে না। এছাড়াও ওজন স্কেল পারাপারের জন্য ভাড়াও নির্ধারণ করা হয়েছে। ৬ চাকার ট্রাকের স্বাভাবিক লোড ক্যাপাসিটি হচ্ছে ২২ টন, ১০ চাকার ৩০ টন, ১৪ চাকার ৪০ টন, ১৮ চাকার ৪৭ টন, ২২ চাকার ৪৯ টন এবং ২৬ চাকার ৫২ টন। এ ওজন সীমার ১ টন পর্যন্ত অতিরিক্ত ওজনের জন্য ৫ হাজার ও পরবর্তী প্রতি টনের জন্য ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। ট্রাকগুলো অধিক মালামাল বোঝাইয়ের কারনে সেতুটির ওজন স্কেলে জরিমানা গুনতে হয় বিধায় টোল ডিজিটাইলইড হওয়ার পর থেকেই এ সড়কের ট্রাকগুলোর অধিকাংশই প্রায় ২০ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরে পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ সড়কের পায়রাকুঞ্জ ফেরি পারাপার হয়ে পটুয়াখালী শহরের চৌরাস্তায় আসে এবং সেখান থেকে কুয়াকাটাসহ জেলার অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে মালামাল পরিবহন করে।

পায়রা সেতুর টোল অপারেশন ম্যানেজার মইনুল হাসান বলেন, গত বছরের আগস্টে টোল ব্যবস্থা ডিজিটালাইজড করার পর থেকে সব ধরনের ট্রাকের ওজন স্কেল দিয়ে যাতায়াত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অতিরিক্ত ওজনের মালামাল বহনের জন্য ট্রাককে জরিমানা গুণতে হয়। জরিমানা এড়াতে বেশিরভাগ ট্রাক বিকল্প সড়ক ব্যবহার করছে। এটি প্রতিদিন কমপক্ষে তিন লাখ টাকার রাজস্ব কম আদায় হচ্ছে।

রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ডিজিটালাইজড সিস্টেম চালুর পর সেতু থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসে ৯ কোটি ৯৩ লাখ টোল আদায় হয়েছে।

পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, পায়রা ব্রিজ টোল প্লাজা এড়িয়ে পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ সড়কে ভারী ট্রাক চলাচলের কারণে সড়কের কিছু অংশ ধসে গিয়ে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ওই সড়কে পাঁচটি স্টিলের বেইলি ব্রিজ রয়েছে এবং সেগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ। ১০ টনের বেশি পণ্যবাহী যানবাহন যাতে ওইসব সেতু পারাপার হতে না পারে সেজন্য নির্দেশনা সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড ও দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে এ সড়কে ভারী ট্রাক চলাচল করায় সড়কটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।

পটুয়াখালী সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী এএম আতিক উল্লাহ জানান, পায়রা সেতুর টোল এড়িয়ে পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করায় সড়কের অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। আর ওই সড়কটি কাঠামোগতভাবে দুর্বল। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরো জানান, পায়রাকুঞ্জ ফেরি ঘাটে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করে দেখেন, এ সময় ১৯১টি ভারী ট্রাক পারাপার হয়েছে। তবে পায়রা সেতুতে টোল ব্যবস্থা ডিজিটালাইজড হওয়ার আগে মাত্র দিনে মাত্র ১০/১২টি ট্রাক পারাপার হতো বলে ফেরিতে কর্মরত শ্রমিকরা জানান।

ওই শ্রমিকরা আরো জানান, ৫ টন ট্রাকে ২০ থেকে ২৫ টন পণ্য পরিবহন করা হয় এবং এ কারণে অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হয়। তাই অনেকেই এখন এই ফেরি পার হয়ে বিভিন্ন স্থানে মালামাল পরিবহন করেন।

বিকল্প সড়কেকে চলাচলকারী এক ট্রাক চালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, বিভিন্ন সেতুর টোলসহ আনুষাঙ্গিক ব্যয়বৃদ্ধির কারণে ইতোমধ্যেই আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। আমরা ট্রাকে কিছু বাড়তি পণ্য পরিবহন করে এই অতিরিক্ত খরচ মেটানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু পায়রা সেতু পার হলে জরিমানা দিতে হবে। এতে আমাদের আরো আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এ কারণে আমরা বিকল্প সড়ক ব্যবহার করছি। এদিকে ১১ কিলোমটিার দীর্ঘ পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ সড়কটিতে ভারী যানবাহন চলাচল করায় সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে এবয় হালকা ও ভারী যানবাহনগুলো প্রায়ই সড়কটির গর্তে আটকে যায়।