rocket
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114বার্তা ডেস্ক ॥ বরিশালের উজিরপুরে আগাম প্রচার নেই। এরপরও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ব্যবসায়ীরা সমবেত হোন উপজেলার করিম উদ্দিনের মেলা। শতবর্ষী এই মেলা কোনো প্রচার ছাড়ায় বসে আসছে। মেলাটি একটি গ্রামে অনুষ্ঠিত হলেও উৎসবের আমেজ থাকে উপজেলাজুড়ে।উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে বামরাইল ইউনিয়নের পূর্ব ধামসর গ্রামের মধ্য বসে করিম উদ্দিনের মেলা।
স্থানীয় লোকজন জানান, ‘করিম উদ্দিনের মেলা শত বছর ধরে বসে আসছে। অনেকের বাপ-দাদারাও ছোটবেলা থেকে এই মেলা দেখে বড় হয়েছেন। তাদের বাপ-দাদারাও পূর্বপুরুষের কাছ থেকে একই কথা শুনেছেন। মাঘ মাসের শেষ দিকে বসে মেলাটি, চলে ফাল্গুন মাসের ১৭ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত।’
মেলায় ঘুরতে আসা স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠ মাইকেল পান্ডে বলেন, ‘বাপ-দাদার মুখ থেকে শুনে ধারণা করা হয়, করিম উদ্দিনের মেলাটি প্রায় ১৫০ বছর আগের পুরোনো। আগে ঘোড়দৌড় অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। এই মেলার আগাম কোনো প্রচারণা নেই। শত বছর ধরে মাঘ মাসের শেষ দিনে পূর্ব ধামসর গ্রামের ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে এ এখানে পসরা সাজান।’
আর মেলাটি শুধু মেলা প্রাঙ্গণেই সীমিত নয়, বছরের পর বছর ধরে এ উপলক্ষে জামাতা ও আত্মীয়স্বজনকে আমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করার প্রথাও যথারীতি চলে আসছে। বাড়িতে বাড়িতে বানানো হয়েছে খই, মুড়কি, নারকেলের ও চালের আটার নাড়ু। মেলা থেকে দই-মিষ্টি কিনে নিয়ে মুড়কি দিয়ে খাওয়ার প্রথাটিও ধরে রেখেছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) করিম উদ্দিনের মেলায় দেখা গেছে, হরেক পণ্য নিয়ে পসরা সাজিয়েছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। মিষ্টান্ন, খেলনা, চুড়ি, ফিতা, আলতা থেকে গৃহস্থালির জিনিসপত্র। জিলাপি ভাজা হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০টির বেশি দোকানে, বিক্রিও হচ্ছে অনেক। মেলা ঘোরা শেষে জিলাপি কিনেই বাড়ি ফিরতে হয় অনেক মানুষের। আরো আছে ‘ঝুড়ি মেলার’ ঐতিহ্য।
বগুড়া জেলা থেকে কাঠের তৈরি খাট, পালং এবং খেলনা এনেছেন আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘প্রায় ১৫ বছর ধরে এই মেলায় কাঠের খেলনা বিক্রি করে আসছেন তারা। এখানে অনেক লোকের সমাগম হয়। বিক্রিও ভালো হয়। এই মেলায় কাঠের তৈরি বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করবো।’
মেলায় এসেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এই করিম উদ্দিনের মেলা। এখানে এলে সব ধরনের জিনিস পাওয়া যায়। প্রতি বছরই আসা হয়। মেলার ঐতিহ্যবাহী গুড়ের জিলাপি আমার খুব পছন্দের।’
করিম উদ্দিনের মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: এনায়েত হোসেন বলেন, ‘১৫ দিনব্যাপীর এই মেলা গত বুধবার শুরু হয়েছে। তবে ফার্নিচারসহ লেপ-তোষকের দোকানপাট মাসব্যাপী থাকবে। কমিটির মাধ্যমে মেলা পরিচালনা করা হয়। গ্রামের জনসাধারণের সম্মতিতে গঠন করা হয় কমিটি। মেলা থেকে উপার্জিত আয় গ্রামের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে, গ্রামের মানুষের কর পরিশোধে ও সেবামূলক কাজে ব্যয় করা হয়।’
বামরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ধামসর গ্রামের বাসিন্দা ইউসুফ হোসেন বলেন, ‘কোনো ঘোষণা ও মাইকিং ছাড়াই প্রতি বছরই মাঘ মাসের শেষের দিকে মেলা বসে। আগে মেলা উপলক্ষে গান-বাজনা, সার্কাসও হতো। তবে সীমাবদ্ধতার কারণে এবার তা হচ্ছে না।’