Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the rocket domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
১৩ বছর পর ৬ র‌্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে পুনঃতদন্তের আদেশ - আজকের বার্তা
আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

১৩ বছর পর ৬ র‌্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে পুনঃতদন্তের আদেশ


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪ ৮:১৭ অপরাহ্ণ ১৩ বছর পর ৬ র‌্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে পুনঃতদন্তের আদেশ
Spread the love

বার্তা ডেস্ক ॥   ঝালকাঠিতে ছয় র‌্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে তৎকালীন কলেজ ছাত্র লিমনকে হত্যাচেষ্টার মামলা পুনঃতদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালতের বিচারক এএইচএম ইমরানুর রহমান এ আদেশ দেন। এর আগে ছয় র‌্যাব সদস্যকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম নারাজি দাখিল করেন। আজ বুধবার দুপুরে নারাজির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে অংশ নেন লিমনের মায়ের আইনজীবী আক্কাস সিকদার।

লিমনের মায়ের আইনজীবী জানান, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। এ সময় তৎকালীন কলেজছাত্র লিমন হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়। লিমনকে বাঁচাতে তার একটি পা কেটে ফেলেন চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় লিমনের মা বাদী হয়ে ২০১১ সালের ১০ এপ্রিল তৎকালীন বরিশাল র‌্যাব-৮ এর ডিএডি লুৎফর রহমানসহ ছয় র‌্যাব সদস্যর নামে ঝালকাঠির আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি প্রথমে রাজাপুর থানার তৎকালীন এসআই আব্দুল হালিম তালুকদার তদন্ত করেন। তিনি ২০১২ সালের ১৪ আগস্ট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। লিমনের মা ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন দায়ের করেন। আদালত রিভিশন মঞ্জুর করে পুনরায় মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে পিবিআই এর প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম ২০২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, লিমন গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা সত্য, তবে কারা তাকে গুলি করেছে তার কোনো সাক্ষী-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ কারণে তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম আদালতে নারাজি দাখিল করেন। লিমনের মায়ের দাবি, তার ছেলে কোনো সন্ত্রাসী ছিল না। একটি ভালো ছেলেকে র‌্যাব গুলি করে পঙ্গু করে দিয়েছে। এ ঘটনার তিনি সুষ্ঠু ও সঠিক বিচার দাবি করেন।

উল্লেখ্য র‌্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক পা হারানো লিমন হোসেন ২০১৩ সালে এইচএসসি, ২০১৮ সালে আইন বিষয়ে অনার্স, ২০১৯ সালে এল এল এম পাস করেন। ২০২০ সালে লিমন হোসেন সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে সহকারী প্রভাষক হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। ২০২২ সালে লিমন যশোরের অভয়নগর থানার এক কলেজছাত্রীকে বিয়ে করেন।

লিমন হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, র‌্যাব অন্যায়ভাবে আমাকে গুলি করে পঙ্গু করে দিয়েছে। আমি অনেক কষ্ট করে মানুষের ভালোবাসায় পড়ালেখা শেষ করেছি ঠিকই কিন্তু আমার পা হারানোর কষ্ট ভুলতে পারছি না। যতদিন বেঁচে আছি ততদিন যারা আমাকে পঙ্গু করেছে তাদের বিচার দাবি করবো।

২০১১ সালে ঘটনার পর লিমনকে সন্ত্রাসী দাবি করে র‌্যাব লিমনসহ আটজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে এবং সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছিল। সেই দুটি মামলাতেই লিমনসহ সব আসামি আদালত থেকে ২০১৮ সালে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছিল। ঘটনার শুরু থেকে লিমনকে আইনি সহায়তা দিচ্ছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং ঝালকাঠির কয়েকজন আইনজীবী।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র নিয়োজিত লিমনের মায়ের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আক্কাস সিকদার বলেন, ঘটনার পর রাজাপুর থানা পুলিশ লিমন হত্যাচেষ্টা মামলা তদন্ত করে চূড়ান্ত রিপোর্ট (তথ্যগত ভুল) দাখিল করে র‌্যাব সদস্যদের অব্যাহতির সুপারিশ করে এবং লিমনসহ পুরো পরিবারকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে।

অপরদিকে পিবিআই প্রায় চার বছর তদন্ত করে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট (সত্য) দাখিল করে। পিবিআইর তদন্ত কর্মকর্তার রিপোর্টে লিমনকে একজন শান্তশিষ্ট ছাত্র হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে- র‌্যাব এবং সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির মধ্যে লিমন গুলিবিদ্ধ হয়েছে ঠিকই কিন্তু কে তাকে গুলি করেছে তা চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও বলেন, পিবিআই তদন্ত করে আসল ঘটনা জানতে পেরেছে ঠিকই কিন্তু রাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের তদবিরে চূড়ান্ত রিপোর্ট দিতে বাধ্য হয়েছে। তবে আমার কাছে রিপোর্টটি সত্যের কাছাকাছি মনে হয়েছে। কোনো সংস্থার কাছ থেকে আমরা ন্যায় বিচার না পেলেও মহামান্য হাইকোর্ট থেকে একদিন ন্যায় বিচার ঠিকই পাবো।