বার্তা ডেস্ক ॥ বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি দপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান। শনিবার দুপুরে রংপুর নগরীর সিটি বাজারে বাজার মনিটরিংয়ে এসে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বর্তমান বাজার পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে উল্লেখ তিনি বলেন, ভোক্তা অধিদপ্তর, বিএসটিআই, জেলা প্রশাসন, পুলিশ, চেম্বার প্রতিনিধি ও বাজার মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে করে ভোক্তাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। সেই সঙ্গে বাজারে নকল ও ভেজাল পণ্য বিক্রি বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবুও সরকারের যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান বাজার মনিটরিং ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে কাজ করছে তাদের মধ্যে কিছুটা সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য করা গেছে। আগামীতে সে সব বিষয়ে কী করা যায় তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সব চেয়ে বড় বিষয় হলো বাজার নিয়ন্ত্রণ বা ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীদের সততার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা সারা দেশে যৌথ মনিটরিং কার্যক্রম চালাচ্ছি। তবে সুখবর হলো ঢাকায় যে বেগুন ১০০- সেটি রংপুরে ৩০ টাকা। পেঁয়াজের দাম বাজারে সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। লেবুর ডজন ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্য বাড়লে গণমাধ্যমকর্মীরা সেটি প্রচার করেন, কিন্তু দাম কমে গেলে তা প্রচার করেন না। ফলে অন্য এলাকার ব্যবসায়ীরা সেটির সুযোগ নিয়ে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন।
শফিকুজ্জামান বলেন, ঈদের আগে লাচ্ছা সেমাইয়ের খুব চাহিদা থাকে। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী বিএসটিআইয়ের সিল লাগিয়ে ভেজাল সেমাই বাজারে বিক্রি করেন। আমরা লাচ্ছা সেমাইয়ের বাজার মনিটরিং করছি। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেল অস্বাস্থ্যকর ড্রামে করে বিক্রি করা হচ্ছে। তেলগুলো কোন কোম্পানির, তা মানসম্মত কিনা তা বুঝতে পারছি না। যেসব পণ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে- এ নিয়ে আমরা সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছি।
বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক এসএম ফেরদৌস আলম বলেন, সয়াবিন তেল বিক্রির অন্যতম শর্ত হলে সেখানে ভিটামিন ‘এ’ মিশ্রণ করে বাজারজাত করতে হবে। নামি-দামি কোম্পানিগুলো তাই করে তেল বিক্রি করছে। কিন্তু খোলাবাজারে তা করা হচ্ছে না- এটি অনৈতিক কাজ। মানুষ এসব তেল কিনে যেমন প্রতারিত হচ্ছে, তেমনি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। আমরা ক্রমান্বয়ে সয়াবিন তেলকে প্যাকেটজাত ও বোতলজাত অবস্থায় নিয়ে যেতে কাজ করছি। খোলা তেল ব্যবহারে আমাদের জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শামিমুল হক, যুগ্ম সচিব জাকির হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান প্রমুখ।