rocket
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114বার্তা ডেস্ক ॥ মহানগরীর একাধিক খাল সংস্কার ও পুণঃ খনন শুরুর হলেও তা নগরীর পানি বদ্ধতা নিরশনে কতটুকু সহায়ক হবে।শেষ পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশাল মহানগরীর ৭টি খালের প্রায় ১৯ কিলোমিটার অংশ পুণঃ খনন সহ সংস্কার কাজ শেষ করতে যাচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২০২২ সালে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় ১০ কোটি টাকা বরাদ্ব দিলেও বিদায়ী নগর পরিষদের আপত্তির মুখে কাজ করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। এমনকি এ লক্ষ্যে দুবার দরপত্র আহবান করেও নগর ভবনের লিখিত আপত্তির কারণে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া যায়নি। অপরদিকে সিটি করপোরেশনও একটি দাতা সংস্থার প্রকল্পের আওতায় নগরীতে বিভিন্ন খালের ৭ কিলোমিটার অংশ পুণঃ খনন সহ সংস্কার কাজ শুরু করেছে। আগামী জুনের মধ্যে এসব খাল সংস্কার প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা থাকলেও তা সম্ভব হবে না কার্যাদেশ প্রদানে বিলম্ব সহ পাশের বিপুল সংখ্যক অবৈধ স্থাপনা সহ জঞ্জাল অপাসারন ও নানামুখি প্রতিবন্ধকতায়।
এসব খাল সংস্কার হলে প্রায় ৫৮ বর্গ কিলোমিটারের বরিশাল মহানগরীর পানি বদ্ধতা সমস্যার অনেকটাই সমাধান মেলার কথা। তবে নগরীর দেড়শ কিলোমিটার ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিস্কার না করা সহ পাশে প্রবাহমান কির্তনখোলা নদীর তলদেশ ভড়াট হয়ে অনেকটা উচু হয়ে যাওয়ায় খালগুলোর পানি সঠিকভাবে গ্রহন করতে না পারায় সমস্যা থেকে কুব সহসা রেহাই নাও মিলতে পারে বলেও মনে করছেন পানি বিশেষজ্ঞগন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড দীর্ঘদিন ধরেই নগরীর ৭টি খালের প্রায় ১৯ কিলোমিটার এলাকা সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও তা সম্ভব হয়নি নগর ভবনের বাঁধার কারণেই। তবে গত জুনে ৪র্থ নগর পরিষদের নির্বাচনের পরেই মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড নতুন করে দরপত্র আহবান এবং আর্থিক ও কারিগড়ি মূল্যায়ন শেষে ডিসেম্বরে কার্যাদেশ প্রদান করে।
কার্যাদেশ অনুযায়ী নগরীর সাগরদী খালের ৯ কিলোমিটার খননে ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, রূপাতলী খালের ১ কিলোমিটারের জন্য ২৮ লাখ টাকা, চাঁদমারি খালের দেড় কিলোমিটার খননে ৩২ লাখ টাকা, ভাটার খালের ১৬০ মিটার খননে ৪ লাখ টাকার অনুমোদন মিলেছে। পাশাপাশি পলাশপুর খালের ১.৭ কিলোমিটার খননে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, আমানতগঞ্জ খালের ২.৫ কিলোমিটার খননে ১ কোটি ৯ লাখ টাকা ও নগরীর প্রান কেন্দ্রের জেল খালের ২ কিলোমিটার খননে ২৮ লাখ ৬৭ হাজার টাকার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তবে মূল প্রকল্পে এসব খালের পাড়ে ওয়াকওয়ে ও ঘাটলা নির্মান এবং সৌন্দয্য বর্ধন সহ আরো বেশ কিছু স্থাপনা নির্মানের কথা থাকলেও দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর তা বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্থ হওয়ায় ব্যায় বৃদ্ধির ফলে সেসব কাজ অপতত স্থগিত রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতে তহবিল প্রাপ্তি সাপেক্ষ নতুন কোন প্রকল্পের আওতায় খননকৃত খালগুলোর আরো সংস্কার সহ সৌন্দর্য বর্ধনের চিন্তা করা হতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে।
অপরদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশন দাতা সংস্থা ‘কেএফডব্লিউ’র আর্থিক সহায়তায় নগরীর বিভিন্ন খালের ৭.১০ কিলোমিটার অংশের পুণঃ খনন সহ সংস্কার কাজও শুরু করেছে। এসব খালের কিছু অংশে ওয়াকওয়ে সহ পরিবেশ ও জনবান্ধব স্থাপনা নির্মানের কথা রয়েছে।
অপরদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের তরফ থেকে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে নগরীর ২৪টি খাল সংস্কারে প্রায় সোয়া ২শ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্পÑপ্রস্তাবনা, ডিপিপি দাখিলের পরে তা পরিকল্পনা কমিশন তা ফেরত দেয়। বিগত নগর পরিষদ দায়িত্ব গ্রহনের পরে নগরীর ছোট বড় ৩৬টি খাল খনন, সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনে প্রায় ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকার আরেকটি ডিপিপি দাখিলের পরে পরিকল্পনা কমিশন থেকে তা অনুমোদন না করে প্রথম পর্যায়ে খালের সংখ্যা কমিয়ে প্রকল্প ব্যায় অর্ধেক করে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সম্ভাব্যতা সমিক্ষা ও নকশা সহ পুনরায় দাখিলের জন্য ফেরত পাঠায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পরিকল্পনা কমিশনের দিক নির্দেশনা অনুসরন না করে প্রকল্পব্যায় দ্বিগুনেরও বেশী বৃদ্ধি করে ২ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকার একটি ডিপিপি দাখিল করে বিগত নগর পরিষদ। ফলে তা আর বিবেচনা লাভ দুরের কথা মন্ত্রনালয় ও পরিকল্পনা কমিশন থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করে ডিপিপি’টি ফেরত পাঠায় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে নগর ভবন থেকে নগরীর একাধিক খাল সংস্কার ও পুণঃ খননের আরো একটি প্রকল্প-প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে আছে বলে জানান হয়েছে।
তবে নগরীর খাল সংস্কার সহ পুণঃ খননের চলমান প্রকল্প দুটি নগরীর পানিবদ্ধতার নিরশনে কতখানি সহায়ক হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন নগরবীদগন। এ নগরীর প্রায় দেড়শ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা ড্রেনগুলো নিয়মিত আবর্জনামূক্ত না করার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই নগরীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায়ও পানি জমে যাচ্ছে। অনেক নগরবাসী এখনো ড্রেনকে ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহার করেন। নগরীর বিভিন্ন রাস্তার পাশে বালু ও খোয়া সহ বিভিন্ন নির্মান সামগ্রী দিনের পর দিন ফেলে রাখলেও নগর ভবনের দায়িত্বশীলগন অনেক সময়ই সেচ্ছা অন্ধত্বে ভোগেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। নগরীর নবগ্রাম রোডের বটতলা বাজার থেকে হাতেম আলী কলেজ পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা গত ১০ বছর ধরে ইট,বালু আর খোয়াতে ঠাশা থাকলেও তা পরিপূর্ণভাবে পরিস্কার হচ্ছেনা। ফলে ঘন্টায় ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিতেই পুরো সড়কটিতে পানি থৈ থৈ করে। একই পরিস্থিতি নগরীর আরো অনেক রস্তাঘাটের। নগর ভবনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের বেশীরভাগই এখনো আগের নগর পরিষদের মত নগরবাসীর সেবার পরিবর্তে তাদের সাথে প্রজাসুলভ আচরন করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এসব বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলাপ করতে তার সেল ফোনে এবাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।