বার্তা ডেস্ক ॥ বরিশালের ১০ উপজেলার মধ্যে ৯টিতেই এখন বইছে উপজেলা নির্বাচনী হাওয়া। প্রথম দফায় ভোটের তালিকায় নাম না থাকায় এখনও তেমন সরগরম হয়নি মেহেন্দীগঞ্জ। বাকি উপজেলাগুলোতে নির্বাচনী দৌড়ঝাঁপে বেশ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। এসব উপজেলায় অর্ধশতাধিক আওয়ামী লীগ নেতা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা জানান। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট ঘোষণা না দেওয়ায় সরকার দলীয় নেতাদের ঘিরেই চলছে উপজেলা নির্বাচনের যত তৎপরতা।
জেলা নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন কমিশন ঈদের পর ভোট করার বিষয়টি জানালেও এখন পর্যন্ত বরিশাল অফিসে আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে নির্বাচন পরিচালনার সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
বরিশাল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুন্সী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, নির্বাচন করার কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এখনও তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। তবে নির্বাচন করার সব প্রস্তুতি রয়েছে। নির্দেশনা পেলে কাজ শুরু করা হবে।
তিনি বলেন, প্রথম দফায় মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা ছাড়া বাকিগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এগুলো হচ্ছে- সদর, বাবুগঞ্জ, গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, মুলাদী, হিজলা, উজিরপুর, বানারীপাড়া ও বাকেরগঞ্জ উপজেলা।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, দল থেকে কোনো প্রার্থী দেবে না। দলের যেকোনো নেতা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। দল থেকে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হবে না।
তবে জাতীয় নির্বাচনের পর আসন্ন উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি অংশ নেবে না সাফ জানিয়েছেন দলটির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন। তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। কোনো নেতাও যাবে না। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত।
এদিকে আগ্রহী প্রার্থীরা এখনই নানাভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তারা সবচেয়ে বেশি সরব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ তালিকায় বরিশাল সদর উপজেলার মধ্যে রয়েছে বর্তমান চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মধু, সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান রেহেনা বেগম, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চরকাউয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবি এবং মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা এস এম জাকির হোসেন।
বাবুগঞ্জ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক দুলাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার খালেদ হোসেন স্বপন ও ভাইস চেয়ারম্যান ফারজানা বিনতে ওহাব।
গৌরনদী উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী, ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, মনির হোসেন মিয়া, মো মামুন মোল্লা, আনিসুর রহমান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচএম জয়নাল আবেদীন। আগৈলঝাড়া উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ লিটন।
মুলাদী উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম খান মিঠু, ভাইস চেয়ারম্যান মাইনুল হাসান সবুর, আব্দুল মজিদ, মিজানুর রহমান হাওলাদার, আমিনুল ইসলাম নাগর, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরউদ্দিন খসরু।
হিজলা উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন ঢালী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ টিপু সিকদার, তার ভাই দিপু সিকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন সরদার, বড়জালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহজাহান তালুকদার ও মেমানিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তৌফিক রহমান।
উজিরপুর উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান আ. মজিদ সিকদার বাচ্চু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র গিয়াসউদ্দিন বেপারী, সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান ইকবাল, সুখেন্দ্র শেখর বৈদ্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম জামাল হোসেন।
আওয়ামী লীগের বাইরে দলটির শরিকদের মধ্যে কেবল উজিরপুর উপজেলায় জাসদ (আম্বিয়া) নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।
বানারীপাড়া উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাওলাদ হোসেন সানা, সহ-সভাপতি জিয়াউল হক মিন্টু ও জেলা পরিষদের সদস্য রাশেদুল ইসলাম স্বপন।
বাকেরগঞ্জ উপজেলায় বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান, রাজীব তালুকদার ও ড. মোয়াজ্জেম হোসেন আমিনুল।