আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

বরিশালের ইফতারীর বাজারে ক্রেতার আকালে বিক্রেতাদের মুখ মলিন


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৪ ৭:০৫ অপরাহ্ণ বরিশালের ইফতারীর বাজারে ক্রেতার আকালে বিক্রেতাদের মুখ মলিন
Spread the love

বার্তা ডেস্ক ॥  রমজানের আগেই নিত্যপণ্যের কয়েক দফায় মূল্যবৃদ্ধির সাথে এবার ইফতার সামগ্রীতে জৌলুস আসলেও দাম সাধারন মানুষের সব স্বস্তিকে কেড়ে নিয়েছে। নগরীর নামি দামী ইফতারী সামগ্রীর বাজারে হাত দেয়া এবার আরো কঠিন হয়ে পড়েছে। চিনি, খেশারী ডাল, ছোলা ডাল, বেগুন ও গোল আলুর সাথে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে এবার বরিশালে ফুটপাথ সহ বনেদী ইফতার সামগ্রী দোকানগুলোতে প্রতিটি ইফতার সামগ্রীর দাম ৩০-৫০ ভাগ পর্যন্ত বেড়েছে। তিন বছর আগে পথ খাবারের দোকানে যে পেয়াঁজু ২-৩ টাকায় পাওয়া যেত, এবার তা ৫ টাকার নিচে নয়। আর বনেদি দোকানে তা ১০ টাকার ওপরে বিক্রী হচ্ছে। ছোট সাইজের ৩ টাকার আলুর চপ ফুট পাথে এবার ৫ টাকার নিচে নয়। বনেদি দোকানে তা ১৫টাকায় বিক্রী হচ্ছে।
নগরীর ঐতিহ্যবাহী ‘নাজেম’স রেস্তোরা’তে জিলাপির কেজি এবার আড়াইশ টাকা। অন্য ইফতার সামগ্রীর দামও অনুরূপভাবে বেড়েছে। এমনকি ‘চিকেন পুলি’ সহ অনেক ইফতার সামগ্রী এ দোকানটি এবার তৈরী করছে না, গত বছরের চেয়ে দাম যথেষ্ঠ বৃদ্ধি করতে হবে আশংকায়। মূল্যবৃদ্ধির কারণে এবার নগরীর ফুটপাথ থেকে বনেদি বেশীরভাগ ইফতার সামগ্রী দোকানে ক্রেতার সংখ্যাও তুলনামূলকভাবে কম। অথচ বিগত প্রায় এক যুগেরও বেশী সময় ধরে বরিশালের নাজেম’স-এর ইফতারী কিনতে শুধু এ নগরী নয়, আসে পাশের সব জেলাগুলো থেকেও বহু মানুষ আসতেন। দোকানের সামনে ভীড় এরাতে ও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে দুজন ট্রাফিক পুলিশও মোতায়েন করতে হত।
তবে এরপরেও এবার নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যান সংলগ্ন অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গনে ‘ইউরো কিচেন’ নামে নতুন একটি প্রতিষ্ঠান ইফতারীর মানসম্মত পসরা নিয়ে বসেছে। এছাড়া নগরীর শহিদ নজরুল সড়ক, বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়কেও ‘হান্ডি কড়াই’ ‘রোজ গার্ডেন’ সহ বেশকিছু মানসম্মত প্রতিষ্ঠান ইফতারীর নানা সামগ্রী নিয়ে বসলেও ক্রেতাদের আগ্রহে অনেক ভাটা লক্ষ্য করা গেছে।
চাল,চিনি, ভোজ্যতেল, ডাল সহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের সাথে রমজানের ইফতারী অনুষঙ্গ সমুহের দামও ইতোমধ্যে আকাশ ছুয়েছে। রোজার দিন থেকেই বরিশালের বাজারে বেগুনের কেজি ১শ টাকায় পৌছে। শশার কেজি ৯০ টাকা। তবে পাইকারী বাজারে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রী হচ্ছে ৬০ টাকারও কমে। গোল আলুর বাজার ২২ টাকা থেকে বেড়ে ২৮-৩০ টাকায় বিক্রী হচ্ছে। চিনির দাম অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে এখন দেড়শ ছুতে চলেছে।
অন্যসব নিত্য পণ্যের সাথে মাছ-গোসতের বাজারেও উত্তাপ এখন চরম বিড়ম্বনা ও দূর্ভোগ সৃষ্টি করছে বরিশালের সাধারন মানুষের। বাজারে ৮শ টাকা কেজির নিচে কোন মাছ নেই। অথচ প্রায় ৫ লাখ টন উদ্বৃত্ত বরিশাল থেকে মাছ যাচ্ছে রাজধানী সহ সারা দেশে। এক কেজি ওজনের নিচের সাইজে ইলিশের কেজি এখন প্রায় ১৪শ টাকা। গরুর গোসতের কেজি ৮শ টাকা । খাশি সাড়ে ১২শ টাকার ওপরে। ফলে মাছ আর গোসত কেনা এখন নি¤œ-মধ্যবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তের জন্যও কল্পনা বিলাস।
ব্রয়লার মুরগির কেজী প্রায় ৩শ টাকা ছুয়েছে। কক ও সোনালী মুরগির দামও সাড়ে ৪শ টাকার ওপরে। ফলে বেশীরভাগ পরিবারের পাত থেকে মাছ গোসত উঠে যাচ্ছে।
রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজানে সবাই মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের দরবারে পানাহ চেয়ে তা মঞ্জুরের আশা করছেন। কিন্তু নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির দূর্ভোগ থেকে আদৌ স্বস্তি আর মিলবে কিনা, তা নিয়ে শংকিত নি¤œবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোতেও। সব মিলিয়ে রোজার প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে বরিশালের ভোগ্যপণ্যের বাজারগুলোতে ক্রেতাদের হতাশার সাথে ক্ষোভের কথাই শোনা গেছে বার বার।