আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

জাহাজ নির্মাণ শিল্পে তিনশ’ কোটি টাকার বিনিয়োগে ধস


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২৪ ৮:০৫ অপরাহ্ণ জাহাজ নির্মাণ শিল্পে তিনশ’ কোটি টাকার বিনিয়োগে ধস
Spread the love

বার্তা ডেস্ক ॥  জাহাজ নির্মাণ শিল্পে হঠাৎ করে শুন্যতা দেখা দিয়েছে। তালা ঝুলছে বরিশালের প্রায় সবগুলো ডকইয়ার্ডে। অনেকটাই মুখ থুবড়ে পড়েছে তিনশ’ কোটি টাকার বিনিয়োগ। এমনকি মেরামত করারও কোনো গ্রাহক পাচ্ছেন না ডকইয়ার্ডের মালিকরা। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পায়রা বন্দর পুরোপুরি চালু হলে আবারও এ শিল্প চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্রমতে, একসময় জাহাজ নির্মাণ ও মেরামতে কর্মব্যস্ত থাকা বরিশালের সুন্দরবন শিপইয়ার্ডে এখন সুনশান নীরবতা। আগে এ সময় তিন থেকে চারটি জাহাজ নির্মাণের কাজ চললেও এখন নেই একটিও। ফলে অলস সময় পার করছেন কর্মীরা। একই অবস্থা কীর্তনখোলার তীরে গড়ে ওঠা ১২টি শিপইয়ার্ডের। অথচ কয়েক বছর আগে সাড়া জাগিয়েছিল বরিশালের জাহাজ নির্মাণ শিল্প। বিনিয়োগ ছাড়িয়ে গিয়েছিলো প্রায় তিনশ’ কোটি টাকা। ওইসময় প্রতিবছর কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয়টি জাহাজ নির্মাণ করা হতো বরিশালের ডকইয়ার্ডে। যা এখন নেমে এসেছে শুন্যের কোঠায়। ডকইয়ার্ডের শ্রমিকরা জানিয়েছেন, আগে কাজের চাপে ছুটি না পেলেও এখন অলস সময় পার করছেন শ্রমিকরা। অনেকে আবার জাহাজের কাজ না থাকায় দিনমজুরের কাজ করছেন। গত একবছর ধরে তাদের কোনো কাজ নেই। এতে করে তাদের সংসার চালাতে চরম হিমশিম খেতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু উদ্বোধণের পর সড়ক পথে দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে ব্যাপক পরিবর্তন আসায় নৌরুটে যাত্রী সংকট দেখা দিয়েছে। এরপর থেকেই জাহাজ নির্মাণে বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন উদ্যোক্তারা। এমনকি প্রতিনিয়ত লোকসানের কারণে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ঋণদানকারী ব্যাংকগুলো। সুন্দরবন শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপক সোহাগ হাওলাদার বলেন, আগে বরিশালে প্রচুর জাহাজ নির্মাণ করা হতো। কিন্তু পদ্মা সেতুর বদৌলতে সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে ভাঁটা লেগেছে। যার প্রভাব পড়েছে ডকইয়ার্ডের ব্যবসায়। সরকার এবং ব্যাংকগুলো যদি পাশে না দাঁড়ায় তাহলে এ ব্যবসা টিকিয়ে রাখা যাবেনা বলেও তিনি উল্লেখ করেন। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের বরিশাল ব্রাঞ্চের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, ব্যাংকগুলো সব সময় লাভ চায়। বর্তমানে শিপইয়ার্ড ব্যবসায় লোকসানে চলছে। তবে সরকার যদি আশ্বাস দেয় তাহলে আমরা পাশে দাঁড়াবো। স্থানীয় নৌ-যান ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পায়রা বন্দর পুরোপুরি চালু হলে আবারও সুদিন আসতে পারে বরিশালের জাহাজ নির্মাণ শিল্পে। আর এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সবধরনের সহায়তার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাহী পরিচালক এসএম জাকির হোসেন বলেন, বর্তমানে ব্যবসায় ভাঁটা চললেও পায়রা বন্দর পুরোপুরি চালু হলে জাহাজ নির্মান শিল্পে সুদিন ফিরে আসবে। বরিশালের জেলা প্রশাসক মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, শিপইয়ার্ডগুলোতে এখন কিছুটা মন্দা চলছে। ব্যবসায়ীরা যদি আমাদের কাছে সহযোগিতা চায় আমরা সব সময় তাদের পাশে আছি। উল্লেখ্য, ১৯৬৩ সালে বরিশালে প্রথম খাজা ডকইয়ার্ড নামের প্রতিষ্ঠান নৌযান নির্মাণ কাজ শুরু করে। ২০০০ সালের পর থেকে নগরীর বেলতলায় শুরু হয় আধুনিক ও বিলাসবহুল জাহাজ নির্মাণ। এরপর থেকেই ক্রমান্বয়ে বরিশালে আধুনিক শিপইয়ার্ড গড়ে ওঠে।