বার্তা ডেস্ক ॥ প্রেমের টানে ঘর ছাড়া এক তরুণীকে (১৮) উদ্ধারের জন্য প্রেমিকের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। উদ্ধার অভিযান চলাকালে প্রেমিকের বাবাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বাউফল থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
আহত অবস্থায় প্রেমিকের বাবাকে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে প্রেমিক ও প্রেমিকা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
জানা গেছে, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ছোট ডালিমা গ্রামের বাশার হাওলাদারের (৫৫) ছেলে রিয়াজ হাওলাদারের (২৬) সঙ্গে গত দুই বছর ধরে এক তরুণীর (১৮) প্রেমের সম্পর্ক চলছে। ওই তরুণীর বাড়ি সিলেটের জালালাবাদ উপজেলার পুরান কামারুকা এলাকার ৪নং ওয়ার্ডে। ফেসবুকে তাদের পরিচয় ও পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত ৩-৪ দিন আগে ওই তরুণী সিলেট থেকে বাউফলে প্রেমিক রিয়াজের বাড়িতে চলে আসেন। রিয়াজ তার প্রেমিকাকে নিয়ে একই উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে তার বোন সারমিনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
অভিযোগের ভিত্তিতে ওই তরুণীকে উদ্ধারের জন্য বাউফল থানার এসআই মনির ও এসআই বশারের নেতৃত্বে ৩ জন পুলিশ ও জনৈক সিদ্দিকউল্লাহ নামের এক ব্যক্তি বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে প্রেমিক রিয়াজ হাওলাদারের বাড়িতে অভিযান চালান। সেখানে প্রেমিক যুগলকে না পেয়ে এসআই মনির ও এসআই বশার প্রেমিক রিয়াজের বাবা বাশার হাওলাদারকে ধরে ঘরের বাইরে নিয়ে যান।
বাশার হাওলাদার সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, এসআই মনির ও এসআই বশার তাকে এলোপাতাড়ি লাথি ও কিলঘুসি মারেন। অপর পুলিশ সদস্যের নাম তিনি জানেন না। তবে দেখলে চিনতে পারবেন। পুলিশের মারধরে বাশার হাওলাদার প্রস্রাব করে দেন। একপর্যায়ে তার ছেলের অবস্থান প্রকাশ করেন।
এরপর পুলিশ সূর্যমনি ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে রিয়াজের বোনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রেমিক যুগলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। সঙ্গে প্রেমিক রিয়াজের বাবা বাশার হাওলাদারকেও থানায় নেওয়া হয়। থানায় বাশার হাওলাদার অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত সোয়া ৪টার দিকে তাকে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
মারধরের বিষয় অস্বীকার করে এসআই মনির বলেন, তাকে কোনো মারধর করা হয়নি; শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাউফল থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন বলেন, সিলেটের জালালাবাদ থানায় দায়েরকৃত মামলার সূত্র ধরে পুলিশ প্রেমিক রিয়াজ হাওলাদারের বাড়িতে অভিযান চালায়। তাকে না পেয়ে তার বাবার দেওয়া তথ্যমতে সূর্যমনির রামনগর গ্রামের বোনের বাড়ি থেকে প্রেমিককে আটক করে এবং ওই তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এসআই মনির ও এসআই বশার কর্তৃক প্রেমিক রিয়াজের বাবাকে মারধরের ঘটনা সত্য নয়। রিয়াজের বাবা মৃগী রোগে আক্রান্ত। থানায় বসে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।