rocket
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114বার্তা ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে ২০৪১ সালের মধ্যে দুর্যোগ সহনশীল, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি ‘জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বানীতে আজ এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রতি বছরের মতো দেশব্যাপী ১০ মার্চ ‘জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস’উদ্যাপন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘দুর্যোগ প্রস্তুতিতে লড়বো, স্মার্ট সোনার বাংলা গড়বো’ সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টেকসই ও সমন্বিত দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস কর্মসূচি প্রণয়নের পথিকৃৎ। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯৭৩ সালে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে আগাম সতর্কবার্তা উপকূলীয় এলাকার জনগণের মধ্যে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)’ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে তিনি দুর্যোগ মোকাবেলার উন্নত টেলিযোগাযোগ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। জাতির পিতা ঘূর্ণিঝড় থেকে জনগণের জানমাল রক্ষায় সেই সময় উপকূলীয় অঞ্চলে ১৭২টি উঁচু মাটির কিল্লা তৈরি করেন, যা ‘মুজিব কিল্লা’ নামে পরিচিত।
সরকার প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সরকারের দুর্যোগ নিয়ে পূর্বপ্রস্তুতি ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে দুর্যোগে প্রাণহানি এক ডিজিটে নামিয়ে আনা সক্ষম হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে দুর্যোগ মোকাবিলায় চিরাচরিত ‘দুর্যোগ পরবর্তী সাড়াদান ব্যবস্থাপনা’ থেকে ‘আগাম ব্যবস্থাপনা’ কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমেছে। আমরা ‘মুজিব কিল্লা’কে সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করে মানব ও প্রাণিসম্পদের জন্য নিরাপদ ও টেকসই আশ্রয়স্থল করেছি। একইভাবে, পুরুষের সাথে নারী স্বেচ্ছাসেবক অন্তর্ভুক্ত করে আধুনিক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। আমরা ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচিতে (সিপিপি) নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করেছি। ফলে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস ব্যবস্থাপনায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। একারণে জেন্ডার রেসপনসিভ ক্যাটাগরিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্মানসূচক জাতিসংঘ জনসেবা পদক-২০২১ অর্জন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় সরকারের বিনিয়োগ, দুর্যোগের পূর্বাভাস ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন, নতুন বহুমুখী আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ এবং দুর্যোগের প্রস্তুতি ও উদ্ধার কার্যক্রমে স্বেচ্ছাসেবীদের নিবেদিত প্রচেষ্টাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের ফলে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে যেকোনা দুর্যোগে প্রাণহানির সংখ্যা ব্যাপকহারে হ্রাস পেয়েছে, যা পরিসংখ্যানগত তথ্য বিশ্লেষণ করলে উপলব্ধি করা যায়। তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের ভোলা সাইক্লোনে প্রাণহানির সংখ্যা ১০ লাখ জন, ১৯৯১ সালের সাইক্লোনে প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার জন, ২০০৭ সালের সাইক্লোন সিডরে ৩ হাজার ৬৬৩ জন, ২০০৮ সালের সাইক্লোন আইলায় ১৯০ জন, ২০১৬ সালের সাইক্লোন রুয়ানুতে ২৭ জন, ২০১৯ সালের সাইক্লোন বুলবুলে ২৪ জন, ২০১৯ সালের সাইক্লোন ফণিতে ৮ জন, ২০২০ সালের সাইক্লোন আম্ফানে ৮ জন, ২০২১ সালের সাইক্লোন ইয়াসে ৭ জন, ২০২২ সালের সাইক্লোন সিত্রাংয়ে ১ জন এবং ২০২৩ সালের সাইক্লোন মোখায় মৃতের সংখ্যা শূন্য। বাংলাদেশের এই ক্রমোন্নয়ন ‘সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন’ এর শর্ত শতভাগ অর্জন করেছে এবং বিশ্বব্যাপী বিপুলভাবে প্রশংসিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ দেশ এবং বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও একটি শক্তিশালী ও কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে সময়োপযোগী আইন, বিধি পরিকল্পনা, দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের ওপর গুরুত্বারোপ করে ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ প্রণয়ন করা হয়েছে।