আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

বরিশালে মেডিকেল স্টাফকে পুলিশ সদস্যদের মারধর


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২২ ১০:২৭ অপরাহ্ণ বরিশালে মেডিকেল স্টাফকে পুলিশ সদস্যদের মারধর
Spread the love

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে পুলিশের হামলায় এক নার্স আহতের অভিযোগে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষনার দুই ঘন্টা পর তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল কতৃপক্ষ ও পুলিশের আশ্বাসে তারা নিয়োজিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করে পরিচালক কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে নার্সরা। সাড়ে ১১টায় নার্সদের সাথে ট্যুরিস্ট পুলিশ, মহানগর পুলিশ ও হাসপাতাল কতৃপক্ষের বৈঠক শেষে আশ্বাসের প্রেক্ষিতে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে নার্সরা। জানা গেছে, গভীর রাতে বরিশাল নগরীর রুপাতলী উকিল বাড়ি সড়কের অপজিটে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় আহত হয় ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক সালাউদ্দিন। এসময় তাকে উদ্ধার করে অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে রোগীর নাম জিজ্ঞাসা করাকে নিয়ে সিনিয়র স্টাফ নার্স সাইফুল ইসলামের সাথে সালাউদ্দিনের সাথে থাকা পুলিশ সদস্যদের তর্ক বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে জরুরী বিভাগের কাউন্টারে জোড় করে প্রবেশ করে সাইফুলকে বেধড়ক মারধর করে। আহত সালাউদ্দিন ট্যুরিস্ট পুলিশের রিজিওনাল ইন্সপেক্টর। সিনিয়র স্টাফ নার্স সাইফুল ইসলামের সাথে ট্যুরিস্ট পুলিশের বরিশাল জোনাল পরিদর্শক বুলবুল আহম্মেদের তর্ক হয়। সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, এরপরেই দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে নার্সের উপর হামলার দৃশ্য। আহত ট্যুরিস্ট পুলিশের বরিশাল জোনের পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) সালাউদ্দিন মামুুুন বলেন, গতরাতে বরিশাল নগরের রুপাতলী এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় একটি বেপরোয়া গতির অ্যাম্বুলেন্স আমাকে ধাক্কা দেয়। এতে আমি অচেতন হয়ে পাশের ডোবায় পরে যান। পরে তার সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে অচেতন থাকায় শেবাচিম হাসপাতালের বিষয়টি রাতে তিনি জানতে পারেননি। তবে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির সময় ট্যুরিস্ট পুলিশের জোন ইনচার্জ পরিদর্শক বুলবুল আহম্মেদসহ কয়েকজন ছিলেন। এদিকে পরিদর্শক বুলবুল আহম্মেদ হামলার সময় থাকলেও তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলবেন না। সিনিয়র স্টাফ নার্স সাইফুল ইসলাম জানান, রোগীর নাম জানতে চাইতেই ২/৩ জনে মিলে রুমের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। মোট ৬/৭ জনের মধ্যে ওই দুই তিনজনই আমাকে চেয়ার দিয়ে পেটায় এবং কিল ঘুষিও মারে। স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহিনা আক্তার বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে আহত নার্সকে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করে সিকরুমে রাখা হয়েছে।
বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা আমাদের কর্মস্থলেও নিরাপদ নই। আমাদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে অতর্কিত ভাবে। আমাদের ব্রাদার সাইফুলকে বেধরক মারধর করেছে কয়েকজন পুলিশ সদস্য। আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। আমরা সকাল থেকে কর্মবিরতিতে গিয়েছি, পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করেছি। আমাদের সাথে প্রশাসনের আলোচনা হয়েছে, তারা সুষ্ঠ বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আমরা কাজে ফিরেছি। বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে দোষীদের বিরুদ্ধে। ট্যুরিস্ট পুলিশের বরিশাল রিজিওনাল পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, দোষী ব্যক্তিকে শনাক্ত করা গেছে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে নার্সদের সাথে আলোচনায় বসে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এনামুল হক বলেন, তারা ভিডিও ফুটেজ দেখেছেন। যারা নার্সের ওপর হামলার সাথে জড়িত, তাদের সনাক্ত করে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।