শফিক মুন্সি ॥ করোনা সংক্রমণ এখনো পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় নি।এরই মধ্যে আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে জমজমাট হয়ে উঠছে বরিশাল নগরীর শপিংমল ও বিপণী বিতান গুলো। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ততই ভিড় বাড়ছে ছেলে-বুড়ো, নারী, পুরুষসহ সব বয়সীদের। দোকানগুলোতে হরেক ধরনের রং-বেরঙের বাহারী ডিজাইনের পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা।তবে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ক্রেতা – বিক্রেতাদের স্বাস্থ্য বিধি পালন করাতে পরিচালিত হচ্ছে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান। নগরীর জোহরা মার্কেট, মাহমুদ মার্কেট, চক বাজার, ভেনাস মার্কেট, মমতা কমপ্লেক্স, বেল ইসলামিয়া মার্কেট, মমতা কমপ্লেক্স, সদর রোডের পোশাক বাজার, ফকির কমপ্লেক্স, ফাতেমা শপিং সেন্টারসহ বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে দেখা যায়, জমজমাট ঈদ বাজার। তরুণ-তরুণীরা ব্যস্ত পছন্দের ড্রেস কিনতে। গীর্জা মহল্লা এলাকার দোকানগুলোতে প্রচুর থ্রী-পিস বিক্রি হচ্ছে। বাজারে পাখী, কিরনমালা, বাহুবলী-২, দেবসেনা, রাখীবন্ধন ইত্যাদি নামের মেয়েদের পোশাক বেশি চাহিদা রয়েছে বলে জানা যায়। তবে, বরিশালের নিয়মিত মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার সকালে বরিশালের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জসীম উদ্দীন হায়দার এর নির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম বাড়ৈ এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসন বরিশালের পক্ষ থেকে ২ টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসন বরিশালের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত বিশ্বাস দাস এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম মজুমদার। এসময় তারা করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ করেন। বরিশাল নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান চকবাজার, নতুন বাজার, নথুল্লাবাদ এলাকায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা কারেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত বিশ্বাস দাস এসময় তিনি ০৮ জন ব্যক্তিকে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ১ হাজার ৬০০ টাকা ও ০১ টি ফলের দোকানে মূল্যতালিকা না থাকায় ৫০০ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন। অপরদিকে জেলা প্রশাসন বরিশালের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম মজুমদার এর নেতৃত্বে করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম ও মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালিত হয়। বরিশাল নগরীর পুলিশ লাইন রোড ও বাংলা বাজার এলাকায় করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে ০১ ব্যক্তি ও ০১ পোশাক বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানকে যথাক্রমে দ-বিধি,১৮৬০ এর ২৬৯ ধারায় ৩০০ টাকা এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৫৬ এর ৩(২) ধারা মোতাবেক ৪ হাজার টাকা সহ মোট ৪ হাজার ৩০০ টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়। উক্ত অভিযানে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের দুইটি টিম আইন-শৃংখলা রক্ষায় সহায়তা প্রদান করেন। অভিযান শেষে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বৃন্দ জানান, জনস্বার্থে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। এছাড়া ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি ঈদের মত এবারের ঈদেও বরিশালের মার্কেটগুলোতে প্রচুর পোশাকের সমারহ ঘটেছে। বড় বড় দোকানগুলোতে কোটি কোটি টাকার পণ্য উঠানো হয়েছে। শোরুমগুলোতে বিপুল অংকের অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে লাভের আশায়। কিছু পোশাকের দাম বেশি হলেও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে অন্যন্য পোশাকের দাম। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিনের লোকসান কিছুটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে তারা। এদিকে নগরীর নেক্সট প্লাস, চকবাজার, সোবহান কমপ্লেক্স, ভেনাস মার্কেট, পোশাক বাজার, ফাতেমা সেন্টারে অভিজাতরা ভিড় করছেন ঈদের বাজার করতে। দাম একটু বেশি হলেও রুচিশীল ক্রেতাদের সরগরম বেশি এখানে। এসব মার্কেটে ছেলেদের বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জবি, ফতুয়া, টি-শার্ট, শার্ট, প্যান্টের সমাহার ঘটেছে। একইসাথে শিশুদের পোশাকের দোকানগুলোতেও ভিড় লক্ষ্য করা যায়। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমিরুল মিদুল, আলআমিন, সাব্বির রহমান বলেন, তারা এবারের ঈদে পাঞ্জাবি কিনতে এসেছেন। সূতির মধ্যে সাদা কাজ করা তাদের পছন্দ। দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে বলে জানান তারা। অন্যদিকে বিভিন্ন বয়সের নারী ও নব-বিবাহিতরা ভিড় করছেন শাড়ির দোকানগুলোতে। গীর্জা মহল্লা, সদর রোড, কাটপট্রি, চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার বিপনী বিতানে দেখা যায় শাড়ি কিনতে ভিড় রয়েছে। কাতান শাড়ি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায়, জামদানি ২ হাজার থেকে ১৫ হাজার, সিল্কের শাড়ি ১৫ থেকে ৩০ হাজার, বালুচরী ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সুলভ মুল্যে সূতি, জামদানি, তাঁতসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ি পাওয়া যায়।