আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

কুয়াকাটায় ট্যুরিজম পার্ক আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের এক বছর পরও পুর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি  


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২১ ৫:৪৮ অপরাহ্ণ কুয়াকাটায় ট্যুরিজম পার্ক আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের এক বছর পরও পুর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি  
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া ॥
উদ্বোধনের এক বছর পরও কুয়াকাটায় পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি ‘ট্যুরিজম পার্ক’। মুজিবশতবর্ষে ২০২০ সালের ১০ মার্চ এই পার্কটির আনুষ্ঠিানিক উদ্বোধন করা হয়। তখন পর্যটকরা বলেছিলেন তাদের প্রত্যাশিত প্রাপ্তির প্রতিফলন ঘটল এ পার্কটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে। কিন্তু কাঙ্খিত সেই সেবা এই পার্ক থেকে পাচ্ছেন না কোন পর্যটক। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোঃ মতিউল ইসলাম চৌধুরী এ পার্কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। কুয়াকাটার পর্যটকদের স্বস্তিদায়ক পরিবেশ সৃষ্টির সুযোগ করে দেয়ায় তখন পর্যটকসহ সাগরপারের মানুষসহ সবাই ছিল উৎফুল্ল। অথচ এটি পূর্নাঙ্গভাবে চালু না হলেও ফের এ পার্কটির পাশে সরকারি কয়েক কোটি টাকার আরেকটি লেক (জলাশয়) পরিচ্ছন্ন করার কাজে নেমেছেন নবনির্বাচিত কুয়াকাটা পৌর মেয়র জাপা (এ) নেতা আনোয়ার হাওলাদার। এনিয়ে কুয়াকাটার স্থানীয় মানুষের মনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেয়া হয়েছে নিজের অর্থায়নে এখন করা হবে; পরে প্রকল্পের মাধ্যমে শোধ করা হবে। পানিউন্নয়ন বোর্ড ও ভূমি প্রশাসনের জমিতে ব্যক্তি অর্থে কী করে লিখিত অনুমতি ছাড়া এ কাজ সম্ভব এটি অনেককে অবাক করেছে। স্থানীয় সচেতনমহল ক্ষুব্ধ মনোভাব প্রকাশ করে জানান, ওই জলাশয়ের বেড়িবাঁধের ভেতরের অংশ দখলের নেতৃত্বে ছিলেন বর্তমান মেয়র জাপার এক নেতাকে দখলে নিয়ে অন্তত ১৬টি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। জায়গা পাউবোর। এখনও উদ্ধার হয়নি। এখন আবার বেড়িবাঁধের বাইরের জায়গায় পাউবোর অনুমতি ছাড়াই লেকপার্ক করার কাজ চলছে।
পর্যটকসহ স্থানীয়দের দাবি ট্যুরিজম পার্কটি পুর্নাঙ্গভাবে আগে চালু করা হোক। কুয়াকাটা সৈকতের শুন্যপয়েন্টের পূর্বদিকে নারিকেল বাগানের মধ্যে খালি জায়গায় ১৬০ ফুট দীর্ঘ এবং ১২০ ফুট প্রস্থ এই পার্কটি নির্মান করা হয়। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অর্থায়নে এক কোটি টাকা ব্যয়-বরাদ্দে সাগরপারে দৃষ্টিনন্দন এ পার্কটি নির্মিত হয়েছে। ২০১৮ সালের পহেলা জানুয়ারি তৎকালীন জেলা প্রশাসক এ পার্কটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। পার্কটিতে পর্যটকের জন্য বহুমুখি সুবিধা চালুর কথা রয়েছে। সাগরে গোসল করতে নামার আগে পর্যটকরা পার্কটিতে থাকা লকার ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। যেখানে জুতো-স্যান্ডেল, মোবাইল, টাকা-পয়সাসহ সবকিছু গচ্ছিত রাখতে পারবেন। নামে মাত্র সার্ভিস চার্জের বিনিময় এ লকার ব্যবহারের সুযোগ থাকছে। অন্তত দুই শ’ লকার থাকছে। পার্কটি রয়েছে বাউন্ডারি ঘেরা। টিনশেড আধুনিক ডেকোরেশন সমৃদ্ধ একতলা আলাদা বিশ্রামাগার থাকার কথা রয়েছে। সেখানে সোফার ব্যবহার থাকবে। বসেই উত্তাল সমুদ্রে দৃষ্টি রাখতে পারবেন পর্যটক। সাগরে গোছল শেষে হাত-পা ধোয়ার জন্য পানির সরবরাহ লাইনসহ অসংখ্য ট্যাপ থাকবে। পুরুষ ও মহিলাদের আলাদাভাবে পোশাক-পরিচ্ছদ পাল্টানোর মতো স্পেস নিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। আলাদা প্র¯্রাবখানাসহ টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অত্যাধুনিক সুবিধা সংবলিত ওয়াশরুম, ৫০ সিটের কফি হাউস থাকার কথা ছিল। প্রায় ৪০ ফুট দীর্ঘ দুই সারিতে কফি হাউসের আড্ডায় বসতে পারবেন আগতরা। থাকার কথা ছিল ক্যাফে কর্ণার। এমনকি ফি সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে বিশেষ কনসার্টের ব্যবস্থা থাকবে এ পার্কটিতে। ইতোমধ্যে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এ পার্কে বিশাল আকৃতির স্থায়ী ছাতা থাকছে। যার নিচে পর্যাপ্ত সংখ্যক চেয়ার থাকছে। রয়েছে বেঞ্চি। পার্কটি সবসময় প্রশাসনিক নিরাপত্তার আওতায় রাখা হবে। পার্ক অভ্যন্তরে বিশেষ কারণে পর্যটকরা রাত্রি যাপনেরও সুযোগ পাবেন। এমনকি পার্ক সংলগ্ন সীবিচে বোল্ডার দিয়ে সাগরের ঢেউয়ে বেলাভূমি ক্ষয়রোধেও বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জিও টিউব দেয়া হয়েছে উত্তাল ঢেউয়ে যেন বীচের বেলাভূমের ক্ষয় বন্ধে। বর্তমানে এ পার্কটি পুর্ণাঙ্গভাবে চালু করলে কুয়াকাটায় আসা পর্যটক-দর্শনার্থীর বিনোদন কেন্দ্রীক নতুনমাত্রা পাবেন। এছাড়া সাগরে গোসলের আগে কিংবা পরে যে বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হতে হতো তা লাঘব হবে। কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোতালেব শরীফ জানান, জেলা প্রশাসন ট্যুরিজম পার্ক নির্মাণ করায় পর্যটকের দীর্ঘদিনের একটি দাবি পুরন হলো। এখন এটি পুর্ণঙ্গভাবে চালু করা প্রয়োজন। এটি কুয়াকাটার উন্নয়নের একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। কিন্তু বছর পেরিয়ে গেলেও পুর্নাঙ্গভাবে চালু না হওয়ায় পর্যটকরা হতাশা ব্যক্ত করেন। সেখানে আবার কাপড়-চোপড় চেঞ্জসহ বিভিন্ন সুবিধার জন্য একটি দৃষ্টিনন্দন লেক করা হচ্ছে; এনিয়ে রয়েছে নানান প্রশ্ন। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক এ জলাশয় ব্যবহাওে লিখিত কোন অনুমতি দেননি। যাদেও জমি সবচেয়ে বেশি পানিউন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার কোন প্রকৌশলী বিষয়টি সম্পর্কে কোন কিছুই অবগত নন। কুয়াকাটার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার গণমাধ্যমকে জানান, কুয়াকাটা পৌরসভার সৌন্দর্যবর্ধনে যে সকল খাস জমি রয়েছে তাতে দৃষ্টিনন্দন কর্মকান্ড করতে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে কাজ করবেন। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতির ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি। কারণ এখন কুয়াকাটায় বেড়িবাঁধের পুনরাকৃতিকরনের জন্য বিশ^ব্যাংকের অর্থায়নে কাজ চলমান রয়েছে।

Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-includes/functions.php on line 5349

Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-content/plugins/really-simple-ssl/class-mixed-content-fixer.php on line 107