আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

বরিশাল বিভাগে ৪৮টি অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক !


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৪ ৮:২৬ অপরাহ্ণ বরিশাল বিভাগে ৪৮টি অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক !
Spread the love

বরিশালে ৪৮টি অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তথ্য পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত সপ্তাহে চলা অভিযানে এসব তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে বরিশাল  বিভাগ ও জেলায় বেশ কিছু অবৈধ হাসপাতাল বন্ধ ও জরিমানা করা হয়েছে।

লাইসেন্সবিহীন এসব প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়মের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, অবৈধ ক্লিনিকগুলোর কোনোটি ক্লিনিকের লাইসেন্স নিয়ে এর সঙ্গে ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কোনোটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন নিয়ে এর সঙ্গে ক্লিনিক পরিচালনা করে এসেছে। আবার কোনোটি শুধু লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে সে কপি ডেস্কের সামনে ঝুলিয়ে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগী দেখেন সরকারি চিকিৎসকরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ‘শুধু ব্যবসা করার জন্য স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান খুলে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা নৈতিক স্খলনের শামিল। নিবন্ধন ছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের নানা ধরনের অন্যায় করার সুয়োগ থাকে। এর সঙ্গে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। এসব কার্যক্রম সম্পর্কেও জানা খুব কঠিন। আমি বিশ্বাস করি, মনিটরিংয়ে দ্রুত এগুলো ঠিক করে ফেলতে পারব।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশে প্রাথমিক নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংকের সংখ্যা ৫০ হাজারের মতো, যেগুলোর বেশির ভাগই এক প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা মোবাইল নাম্বার দিয়ে ১০ থেকে ১২টি নিবন্ধন করেছে। অনেকের নিবন্ধন নম্বর থাকলেও প্রতিষ্ঠান আলোর মুখ দেখেনি। তবে সারা দেশে অনুমোদিত বেসরকারি হাসপাতাল আছে পাঁচ হাজার। আর অনুমোদন নিয়ে চলছে ১০ হাজার ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসাপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অনলাইনে প্রাথমিক নিবন্ধন যে কেউ করতে পারে। যখন কোনো প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক নিবন্ধন করে, তখন আমরা চিহ্নিত করতে পারি। এ ছাড়া সম্ভব হয় না। প্রাথমিক নিবন্ধন শেষে নামের জন্য আবেদন করতে হয়। অধিদপ্তর যদি দেখে এই নামে কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, তখন আবেদনে অনুমতি দেয়। আবেদন করলে কী কী থাকা অত্যাবশ্যকীয়, তা জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর পরিদর্শন শেষে অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।’

ডা. আবু হোসেন বলেন, ‘লাইসেন্সের জন্য আবেদনের আগমুহূর্ত পর্যন্ত আমরা জানতে পারি না সেটি বৈধ না অবৈধভাবে চলছে। আবার বৈধতা যাচাইয়ে অধিদপ্তরের নিজস্ব জনবল (আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী) বা তেমন কিছু নেই।’

চিকিৎসাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী কালের কণ্ঠ বলেন, বড় আকারে যথার্থ পরিসংখ্যান ছাড়া সঠিক সংখ্যা বলা সম্ভব নয়। অনুমানে মনে হচ্ছে সংখ্যা কম। তবে নজরদারির অভাব রয়েছে এটা ঠিক। কিছুটা ইচ্ছাকৃত, কিছুটা অনিচ্ছাকৃত।

ডা. লিয়াকত আলী বলেন, বেসরকারি খাতে স্বাস্থ্যসেবা চলে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। সে কলেবরে প্রাইভেট সেক্টরে নজরদারির জন্য জনবলের ও কাঠামোর যে বিস্তৃতি দরকার, সেটি কিন্তু খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। অধিদপ্তরের জনবল অপ্রতুল। সারা দেশের সিভিল সার্জন ও বিভাগীয় পরিচালকদের অবস্থা আরো করুণ। দু-তিনজনের লোকবল নিয়ে চলছে। এই জনবল ও কাঠোমো দিয়ে নজরদারি করতে চাইলেও সম্ভব নয়।