আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে: প্রধানমন্ত্রী


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: নভেম্বর ০৩, ২০২৩ ৬:৫৩ অপরাহ্ণ অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
Spread the love

বার্তা ডেস্ক ॥ আন্দোলন কর্মসূচির নামে অগ্নিসন্ত্রাস হলে তা প্রতিহত করতে জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতাল-অবরোধে গাড়ি পোড়ানো ও আগুনে মানুষের মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে যেখানেই থাকুন, যারা আগুন দেবে সাথে সাথে তাদের প্রতিহত করতে হবে। কারও ওপর নির্ভর করে বসে থাকলে হবে না। জনগণকেই এগিয়ে আসতে হবে।

শুক্রবার বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেল হত্যা দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

আলোচনা সভার আয়োজন করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩ তে যেমন শুরু করেছিল, দেশের মানুষ প্রতিরোধ করার পর তারা থেমে ছিল। আবার নতুন করে তারা জ্বালা পোড়াও শুরু করছে। তাদেরকে প্রতিরোধ করতে দেশের মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে।

‘তখন যেরকম প্রতিরোধ শুরু হলো, এবং নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হয়েছিল, ৫২৫টি স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছিল। তারপরও কিন্তু নির্বাচন থামাতে পারেনাই। ওরা জানে যে ওরা নির্বাচন করলে ক্ষমতায় আসতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ ভালো থাকলে ওদের মনে জ্বালা হয়। মানুষ স্বস্তিতে থাকলে ওদের সেটা পছন্দ হয় না। ওরা মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। যে কারণে তারা জ্বালাও পোড়াও অগ্নি সন্ত্রাস করে বেড়াচ্ছে। তাদের হাত থেকে নারী, শিশু, হাসপাতাল কোনো কিছুই রক্ষা পায় না।’

শেখ হাসিনা বলেন, এগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে। কারণে আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। যে হাত দিয়ে আগুন দেবে সেই হাত আগুনে পুড়িয়ে দিতে হবে।

বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও হরতাল অবরোধে অরাজকতার প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি নতুন করে আগুন সন্ত্রাস শুরু করেছে। কীভাবে একজন পুলিশ সদস্যকক খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হলো, সাংবাদিকদের ওপর হামলা করলো।

জিয়া সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা হলে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান বন্ধ করেছিল কেন সেই প্রশ্নও রাখেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, জিয়াউর রহমান যদি সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা হয় তাহলে তার আমলে কেন জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ করা হলো। তাদের মূল উদ্দেশ্যে ছিল মুক্তিযু্দ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা। স্বাধীনতার জন্য লাখ শহীদদের জীবন দানকে অস্বীকার এবং স্বাধীনতার স্বীকৃতিকে অস্বীকার করতে চেয়েছিল।

যে ভাষণের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু, যে ভাষণ বিশ্ব স্বীকৃত সেই ভাষণকে কেন বন্ধ করা হয়েছিল। স্বাধীনতার জন্য লাখ শহীদদের জীবন দানকারীকে অস্বীকার এবং স্বাধীনতার স্বীকৃতিকে অস্বীকার করতে চেয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, রাষ্ট্রপরিচালনা করার দায়িত্ব নিয়ে ছিলেন তাদেরকে বেছে বেছে হত্যা করা হয়েছে। এখান থেকেই (’৭৫ এর পর) শুরু হয় হত্যা ক ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। এ হত্যার মধ্যে দিয়ে মানুষের ভাগে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু হয়। এদেশে মূল উদ্দেশ্যে ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা। এজন্য তারা ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া নিষিদ্ধ করেছিল। এমনকি তারা বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার বন্ধ করতে আইন পরিবর্তন করেছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতাকে হত্যার পর এদেশের নাম পরিবর্তন করছিল কিন্তু দেশের মানুষ তা মেনে নেয়নি। রেডিও, টেলিভিশনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছিল পাকিস্তানি ধারায়। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে আবার তার নাম আমরাই পরিবর্তন করি।

কারাগারে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল আমাদের জাতীয় চার নেতাকে। কারাগার সবচেয়ে সুরক্ষিত জায়গা, এই কারাগারই ঢুকে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ড চালায়। আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন মায়া বীরবিক্রম, সিমিন হোসেন রিমি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী, সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।