আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

কুয়াকাটায় ক্ষতির মুখে সাড়ে তিন হাজার মরিচ চাষি


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: এপ্রিল ০৭, ২০২৩ ২:১৩ অপরাহ্ণ কুয়াকাটায় ক্ষতির মুখে সাড়ে তিন হাজার মরিচ চাষি
Spread the love

কুয়াকাটায় হঠাৎ বৃষ্টির কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কাঁচামরিচ চাষিরা। টানা দুই-তিন দিন থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় গাছের গোড়ায় পচন রোগ দেখা দিয়েছে। ফলে গাছ ও মরিচ শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে কুয়াকাটাসহ আশপাশের সাড়ে ৩ হাজার কৃষক বিপাকে পড়েছেন। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সরকারি সহায়তা পাবেন বলে জানালেন কৃষি কর্মকর্তা।

 

সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিটি মরিচ ক্ষেতের ৮০ শতাংশ গাছ শুকিয়ে গেছে। তাই গাছে থাকা ছোট-বড় সব মরিচ তুলে নিতে হচ্ছে কৃষকদের। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে। এ কারণে প্রতি হেক্টরে লোকসান হচ্ছে প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকা।

 

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জমি চাষ থেকে শুরু করে চার মাস পরিশ্রমের পর চৈত্রের শেষে ও বৈশাখের মাঝামাঝিতে কাঁচামরিচ ঘরে তোলা হয়। কিন্তু এবার চৈত্রের মাঝামাঝি অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় চাষিদের পরিশ্রম মাটি হয়ে গেছে। প্রতিটি গাছ থেকে ৪-৫ বার কাঁচামরিচ সংগ্রহ করে শেষবার পাকানো হয়। কিন্তু এবার কেউ কেউ একবার সংগ্রহ করতে পেরেছেন, আবার কারও ক্ষেত আগেই নষ্ট হয়েছে।

 

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, কলাপাড়ায় মোট সাড়ে ৭০০ হেক্টর জমিতে এ বছর কাঁচামরিচ চাষ করা হয়েছে। আর এর সঙ্গে জড়িত প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কৃষক। তবে মরিচ চাষে উপজেলার প্রধান অঞ্চল হিসেবে কুয়াকাটার লতাচাপলীকে ধরা হয়। ৮০ শতাংশই এখানে উৎপাদিত হয়।

 

কুয়াকাটা এলাকার কৃষক নাসির মৃধা বলেন, তিনি মরিচ চাষ করে প্রতি বছরই কমবেশি লাভ করেন। কিন্তু এ বছর তিনি দেড় লাখ টাকা খরচ করে ১.৩ হেক্টর জমিতে চাষ করে মাত্র ৩৫ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। শুধু মরিচ নয়, পানি জমে তরমুজ, মুগডাল এবং ভুট্টা ক্ষেতও নষ্ট হয়েছে। এবার তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

 

লতাচাপলী এলাকার কৃষক আমির হোসেন বলেন, প্রতি বছর ৪-৫ বার মরিচ সংগ্রহ করে তিনি দ্বিগুণ লাভ পান। কিন্তু এ বছর লোকসান গুনতে হচ্ছে। তিনি ঘুরে দাঁড়াতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

 

কুয়াকাটা কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ইয়াসিন মুসুল্লি বলেন, বৃষ্টি হওয়ায় মরিচের দাম কমেছে। আমরা ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে কিনে ৬০ টাকা কেজিতে খুচরা বিক্রি করছি। তবে উৎপাদন কম হওয়ায় মরিচের দাম বেড়ে যেতে পারে। কিছুদিন পরে কেজি ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

 

এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ আর এম সাইফুল্লাহ বলেন, মরিচ চাষে অতিরিক্ত পানি খুবই ক্ষতিকর। জলাবদ্ধতায় পচন রোগে মরিচ গাছ শেষ হয়ে যায়। এবার প্রায় ২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ায় ক্ষেত থেকে পানি অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী আমন চাষে কৃষকদের সহায়তা করা হবে।