আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

জীবিকার তাগিদে আবার ঢাকার পথে তাঁরা


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২১ ৫:১১ অপরাহ্ণ জীবিকার তাগিদে আবার ঢাকার পথে তাঁরা
বার্তা ডেস্ক ॥
মহাসড়কে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ। তবু কোনো না কোনো উপায়ে ঢাকামুখী যাত্রীরা মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে এসে ভিড় করছেন। এখান থেকে ফেরিতে পার হয়ে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে যাচ্ছেন তাঁরা। শিমুলিয়া ঘাট থেকে কেউ হেঁটে, কেউবা মাইক্রোবাস, থ্রি-হুইলারে চেপে পৌঁছাচ্ছেন গন্তব্যে। ছুটে চলা এই যাত্রীদের বেশির ভাগই শ্রমজীবী মানুষ। লকডাউনের শুরুতে তাঁরা রাজধানী ঢাকা ছেড়েছিলেন। আর এখন সেই শ্রমজীবী মানুষেরাই জীবিকার তাগিদে আবার ঢাকায় ফিরে যাচ্ছেন। সরেজমিনে আজ শুক্রবার বাংলাবাজার ঘাটে দেখা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে মাইক্রোবাস, থ্রি-হুইলারে করে ভেঙে ভেঙে ঢাকামুখী যাত্রীরা বাংলাবাজার ঘাটে আসছেন। ঘাটের চারটি ফেরিঘাটেই যাত্রী ও যানবাহনের ভিড়। এই চারটি ঘাটে যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে পারাপার হচ্ছে পাঁচটি ফেরি। চলাচলরত ফেরিগুলোতে গাড়ির চেয়ে যাত্রীদের ভিড়ই বেশি। পারাপার হওয়া যাত্রীদের বেশির ভাগের মুখে মাস্ক থাকলেও ফেরিতে একজন অন্যজনের গা ঘেঁষে দাঁড়ানো। বরিশাল থেকে আসা আবুল হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, ‘পুরান ঢাকার একটি কাগজের কারখানায় কাজ করি। লকডাউনের আগে আমাগো শ্রমিকগো ছুটি ঘোষণা করে মালিক। পরে তিন দিন ঢাকায় থাইকা গ্রামের বাড়ি চইল্লা আসি। এখন আবার মালিকে কামে যোগ দিতে ফোন করছে। তাই ঢাকায় যাই।’ খুলনা থেকে আসা যাত্রী মো. আকবর হোসেন বলেন, ‘ঢাকায় রঙের কাম করি। কামের কিছু টাকাপয়সা পাওয়া আছে। সামনে ঈদ। আয় নাই, শুধু খরচা। তাই পাওনা টাকা উঠাইতে ঢাকা যাচ্ছি। দেহি কোনো কামের উপায় মেলে কি না।’ ঢাকামুখী আরেক যাত্রী সুবীর রায় বলেন, ‘আর দুদিন পরেই লকডাউন শেষ হবে। মার্কেট খুলে দেবে। তাই আগে আগে না গেলে পরে ভিড়ের কারণে ঢাকায় ঢুকতেই পারব না। তাই মাদারীপুর থেকে অটো, মোটরসাইকেল, ভ্যানে ভেঙে ভেঙে ঘাটে আসছি। এখান থেকে একটি মাছের ট্রাকে উঠে ঢাকায় যাচ্ছি।’ ঢাকায় কর্মরত মানুষ ছাড়াও যাত্রীদের একটি অংশ যাচ্ছে হাওর অঞ্চলে বোরো ধান কাটতে। তাঁদের একজন বরিশালের সোলাইমান সরদার। তিনি বলেন, ‘লকডাউনে কাম নাই এলাকায়। কিছু একটা তো করে খাইতে হইবে। তা ছাড়া এই সময়ে প্রতিবছরই আমরা হাওরে ধান কাটার বায়না পাই। এ বছরও কিশোরগঞ্জ থেকে এক লোক আমাগো কিনছে। তাই আমরা ঢাকা হয়ে কিশোরগঞ্জে যাইতাছি।’ বরিশাল থেকে ঘাটে আসার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আটজন এক এলাকা থেকে যাইতাছি। রাস্তায় গাড়ি নাই। ভাইঙ্গা ভাইঙ্গা অনেক কষ্টে ঘাটে আইছি। ভাড়াও বেশি গেছে।’ বিআইডব্লিউটিসি ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে সাধারণত ১৬টি ফেরি সচল আছে। লকডাউন চলায় সীমিত করা হয় ফেরি চলাচল। লকডাউনের শুরুতে দিনের বেলায় দুই থেকে তিনটি ফেরি ছাড়া হলেও আজ থেকে যাত্রী ও জরুরি প্রয়োজনে আসা যানবাহনের চাপ বেশি থাকায় পাঁচটি ফেরি চলাচল করছে। এ ছাড়া লকডাউনের শুরু থেকে বন্ধ রয়েছে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল। বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সীমিত পরিসরে ফেরি দিয়ে জরুরি সেবা প্রদানকারী যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। এর মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী ট্রাক, কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ি অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। ফেরিতে যেসব যাত্রী যাচ্ছেন, তাঁদের মুভমেন্ট পাস আছে। মুভমেন্ট পাস ছাড়া কোনো যাত্রীকে ফেরিতে তোলা হচ্ছে না। বাংলাবাজার ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) আশিকুর রহমান বলেন, ১৮টি ক্যাটাগরিতে যাঁদের মুভমেন্ট পাস আছে, সেসব যাত্রীকে ফেরিতে ঘাটে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে যাঁরা পার হচ্ছেন, তাঁরা কৃষক-শ্রমিক। ধান কাটতে হাওর অঞ্চলে যাবেন। এ ছাড়া ঘাটে ফেরি সীমিত চলে। একটি ফেরি ছাড়া হলে তার এক ঘণ্টার বেশি সময় পরে আরেকটি ফেরি ছাড়া হয়। এই এক ঘণ্টায় ঘাটের পন্টুনে যাত্রীদের ভিড় হয়।

Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-includes/functions.php on line 5349

Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home/dailyajkerbarta/public_html/wp-content/plugins/really-simple-ssl/class-mixed-content-fixer.php on line 107