মঠবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় চলাচল অযোগ্য জরাজীর্ণ একটি সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ দুই ইউনিয়নের ৯ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এক যুগ ধরে সেতুটির বেহাল দশা হলেও পুণরায় সেতুটি নির্মাণ বা সংস্কার না হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার বলেশ্বর নদী তীরবর্তী বেতমোর রাজপাড়া ইউনিয়নের চড়কখালী ও আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সংযোগ সাংগ্রাইল খালের উপর দুই যুগ আগে নির্মিত হয় একটি লোহার সেতু।
পরবর্তীতে ২০০৭ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় সিডরে সেতু সংলগ্ন গাছাপাল ভেঙ্গে সেতুর উপর পড়লে ব্যপক ক্ষতি সাধিত হয়। এরপর আস্তে আস্তে সেতুর পাটাগুলো লোহার ভিম মরিচা ধরে খুলে গিয়ে বর্তমানে মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। স্থানীয় একটি কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগী সহ সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন জানখালী উলুবাড়িয়া হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা, জানখালী সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭৮নং জনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জানখালী হাওলাদার বাড়ি দারুল আকরাম নূরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ দু ইউনিয়নের চড়কখালী, ঘোপখালী, জানখালী, উলুবাড়িয়া, নিজানিয়া এবং কালিকাবাড়ি, হোগলপাতি ও গোলবুনিয়া হাজার হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এ সেতুটি।
স্থানীয়দের যাতায়তে বিকল্প কোন সেতু না থাকায় প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভোগান্তির মধ্যে চলাচল করছে। স্থানীয়রা জানান, নাজুক সেতু সংস্কার নতুন সেতুর জন্য এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ উধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন সাড়া পাাওয়া যাছ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এলাকাবাসী সেতুটির উপর সুপারি গাছ দিয়ে চলাচল করছে। লোহার এঙ্গেলগুলোতে মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা প্রাথমিক শিক্ষক তাওহীদ খান জানান, সেতুটি দুই ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী হওয়ায় এর গুরুত্ব অনেক। সীমান্তবর্তী বেতমোর, আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের লোকজন ছাড়াও বড়মাছুয়া ও সাপলেজা ইউনিয়নের মানুষও এ সেতু দিয়ে চলাচল করে। জন গুরুত্বপূর্ণ ব্রীজ সংস্কার খুবই জরুরী।
সৌদি প্রবাসী সোহেল হাওলাদার জানান, প্রায় ১৫ বছর ধরে সেতুটির বেহাল অবস্থা। সুপারি গাছের উপর দিয়ে সেতু পাড়াতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। কৃষক জাহাঙ্গীর খান জানান, সম্প্রতি সেতু দিয়ে পড়ে গিয়ে শাহ আলম নামের এক দিনমজুর গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী কাজী আবু সাঈদ মোঃ জসিম জানান, অকেজো সেতুগুলো পুনঃনির্মাণের প্রস্তাবনা উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্ধ পেলে পর্যায়ক্রমে সেতু নির্মাণ করা হবে।