নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে রোগীদের বিনামূল্যে সরকারি ওষুধ সেবা দিতে গড়িমসি করেন ফার্মাসিস্ট পুলক ঘরামি। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী সরকারি ওষুধ দেওয়ার কথা থাকলেও সঠিকভাবে তা বিতরণ করছেন না।
যেসব ওষুধে সরকারি সম্পত্তির প্রিন্ট নেই, সেসব ওষুধ রোগীদের না দিয়ে আত্মসাৎ করছেন। সরকারি সম্পত্তির প্রিন্ট না থাকায় বাইরে দোকানে বিক্রি করে অবৈধ ফায়দা লুটছে।
এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে জানান, দাঁতে ব্যথার কারণে সদর হাসপাতালের দন্ত প্রযুক্তিবিদ জ্যোতিষ সিকদারকে ২৪৯৯/৬১ টিকিটে সোমবার (২৪ জানুয়ারি) দেখান। রোগ প্রতিকারের জন্য সেফুর-২৫০ (সেফুরোক্সিম বিপি-২৫০), ইসোটিড-২০ (ইসোমিপ্রাজল-২০), কিটোরোলাক-১০ ও মেট্রোনিডাজল-৪০০ প্রেসক্রিপশনে দেন। হাসপাতালের সরকারি ওষুধ সরবরাহে ব্যবস্থা থাকায় চারটি ওষুধই তিনি স্লিপে দেন।
স্লিপ নিয়ে ওষুধ বিতরণ কেন্দ্রে গেলে দায়িত্বরত ফার্মাসিস্ট পুলক ঘরামি সেফুর ২৫০ (সেফুরোক্সিম বিপি ২৫০), কিটোরোলাক-১০ ও মেট্রোনিডাজল-৪০০ তিন ধরনের ওষুধ দেন। তখন প্রেসক্রিপশনে লেখা চারটি অথচ তিনি তিনটি ওষুধ দেওয়ার কথা জানতে চাইলে তখন তিনি বাকি ওষুধ (ইসোটিড-২০) বের করে দেন।
তিনদিন পর ২৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে আবারও ওই দন্ত চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি ওই ওষুধ চারটি আবারও দেন। সেই সঙ্গে সরকারি সেবা গ্রহণের জন্যও স্লিপ দেন। বিতরণ কেন্দ্রে স্লিপ জমা দিলে ফার্মাসিস্ট আবারও তিনটি ওষুধ (ইসোটিড-২০ (ইসোমিপ্রাজল ২০), কিটোরোলাক-১০ ও মেট্রোনিডাজল ৪০০) দেন। বাকি ওষুধ সেফুর-২৫০ চাইলে তিনি ওষুধ, স্লিপ ও প্রেসক্রিপশন নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে বলেন। পরে শক্তভাবে তাকে চ্যালেঞ্জ করলে বাকি ওষুধটা বের করে দিয়ে ভুল হইছে বলে স্বীকার করেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, সরকারি ওষুধ সেবায় যে দুটি ওষুধের প্যাকেটে সরকারি সিল নেই শুধু মাত্র দু’বারে ওই দুটো ওষুধে ভুল হয়। এটি কি ইচ্ছাকৃত ভুল নাকি আত্মসাতের জন্য কৃত্রিম সংকট বা অন্যভাবে এড়িয়ে কৌশলের আশ্রয় নেওয়া? এছাড়াও সরকারি যেসব ওষুধে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সম্পদ। ক্রয়-বিক্রয় আইনতঃ দণ্ডনীয়’ এমন লেখার সিল নেই সেসব ওষুধে ফার্মাসিস্ট পুলক চন্দ্র ঘরামির কাছে ফুরিয়ে যায়। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাইরের ফার্মেসিতে রাতের আধারে বিক্রি অবৈধভাবে ফায়দা হাসিল করছে।
ফার্মাসিস্ট পুলক চন্দ্র ঘরামি বলেন, ভাই আমার প্রেসক্রিপশন বুঝতে ভুল হয়েছে। ওষুধ বলে দেওয়ার পরেও তো আপনি দিতে চাচ্ছিলেন না এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভুল হয়েছে। আর কিছু বলার বা করার নেই।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আমির হোসেন জানান, এমন বিষয়ে আমাদের কাছে আর কেউ অভিযোগ করেননি। আপনি যখন বলেছেন ফামার্সিস্টকে ডেকে জিজ্ঞাসা করা হবে।