আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

তীব্র নদী ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে বাকেরগঞ্জের মানচিত্র


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২১ ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ তীব্র নদী ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে বাকেরগঞ্জের মানচিত্র
Spread the love

বায়েজিদ বাপ্পি,বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি ॥

১৪ টি ইউনিয়ন আর ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত বাকেরগঞ্জ উপজেলা। ১০ টি ইউনিয়নই রয়েছে নদী বেষ্টিত । নদী কূলের মানুষদের নদীর সাথে যুদ্ধ করে বেচে থাকতে হয়। নদী ভাঙন এখন বাকেরগঞ্জের মানুষের কাছে একটা নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার এই ভাঙনের সাথে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে বেচে আছে এ অঞ্চলের মানুষ।

প্রতি বছরই ভয়াবহ ভাঙন বাড়ছে বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ ভাঙন আরো প্রকট আকার ধারণ করে বিলীন হয়ে যায় ঘরবাড়ী,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,মসজিদ,রাস্তাঘাট,ব্রীজ,কালভার্ট,গাছপালা ও ফসলী জমি সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। গৃহ ও ভিটে মাটি হারিয়েছে এ অঞ্চলের প্রায় পনের হাজার মানুষ। সরেজমিনে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, বর্ষা মৌসুমে অব্যহত ভাঙনের ফলে বাকেরগঞ্জের স্থলভাগের মানচিত্র ছোট হয়ে আসছে,নদী ভাঙনে যারা সর্বস্ব হারিয়েছে তাদের ঠিকানা এখন ভুমিহীনদের তালিকায় কারো ঠাঁই হয়েছে বেড়িবাঁধের উপর আবার কেউ কেউ জীবন জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমিয়েছে ঢাকা শহরে বা স্থানীয় শহরের কোন বস্তিতে।

এ উপজেলার চৌদ্দটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার কোল ঘেসে বয়ে গেছে ছয়টি বড় নদী যা প্রতিনিয়ত তীব্র হয়ে ভেঙে যাচ্ছে যার সম্পুর্ন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গরীব দূঃখী খেটে খাওয়া মানুষদের ভরপাশা ইউনিয়নের দুধলমৌ গ্রামের নদীর তীরবর্তী বাসিন্দা আল-আমিন মোল্লা জানান,অনেক বছর পর্যন্ত একই ভাবে তার ঘরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া তুলাতলী নদীর ভাঙন দেখছেন, এই ভাঙনে তাদের প্রায় দুই একর জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে ভিটেটুকু অবশিষ্ট আছে এভাবে ভাঙন চলতে থাকলে শীঘ্রই হয়তবা তাদের পথে বসতে হবে।

একই গ্রামের দুধলমৌ আদর্শ নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাজনীন আক্তার রিনা বলেন,আমার স্কুল সংলগ্ন প্রায় ৫০ টি বাড়ী নদীতে বিলীন হয়ে গেছে, স্কুলে কাংখিত ছাত্র ছাত্রীর সংকট দেখা দিয়েছে তাছাড়া স্কুল সংলগ্ন বায়তুল আমান জামে মসজিদটি এই মৌসুমের যে কোন মহূর্তে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতেপারে অব্যহত ভাঙনের ফলে ছাত্র ছাত্রী ও অবিভাবকদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।

এ ছাড়া এ উপজেলার ইউনিয়ন চেয়ারম্যানবৃন্দ জানান,রাঙ্গামাটি নদী,পান্ডব নদী তেতুলিয়া নদী,কারখানা নদী,বিষখালী নদী,তুলাতলী নদীর তীরবর্তী চরামদ্দি ইউনিয়নের কাটাদিয়া বাজার,চরাদী ইউনিয়নের হলতা বন্দর পুর্ব ও দক্ষিণ বলইকাঠী ও ছাগলদী গ্রাম,দুর্গাপাশা ইউনিয়নের পাঠকাঠী,জিরাইল ও দিঘিরপাড় গ্রাম, ফরিদপুরের মঙ্গলসী,গোমা,রোকনদ্দী ও ফরিদপুর গ্রাম,কবাই ইউনিয়নের শিয়ালঘুনি ও সোনাকান্দা গ্রাম এবং কবাই ও লক্ষীপাশা বাজার,নলুয়া ইউনিয়নের পুর্ব পশ্চিম উত্তর নলুয়া ও মৌকরণ গ্রাম,কলসকাঠী ইউনিয়নের বেবাজ,ঢাপরকাঠী ও নারায়ঙ্গল, সদিশ আমতলী গ্রাম,গারুড়িয়া ইউনিয়নের কাটাখালী ও খয়রাবাদ গ্রাম,ভরপাশা ইউনিয়নের দুধলমৌ ও লক্ষীপাশা গ্রাম,নিয়ামতি ইউনিয়নের নিয়ামতি বন্দর এবং বাকেরগঞ্জ পৌরসভা সহ অনেক বাজার, বন্দর ও গ্রাম অব্যহত ভাঙনের ফলে হুমকির মধ্যে রয়েছে,আতংক বিরাজ করছে সর্বত্র।

স্থানীয় সংসদ সদস্য বেগম নাসরিন জাহান রতনা জানান, আমার নির্বাচনী এলাকার নদীগুলো তীব্র ভাঙন কবলিত যা জন স্বার্থে প্রতিরোধ করা জরুরী বিধায় ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে যোগাযোগ অব্যহত রেখেছি এবং ব্যাপক ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন পূর্বক চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রায় একশত কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য চাহিদা পত্র প্রেরণ করেছি বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু করতে পারব বলে আশা রাখি।