বার্তা ডেস্ক ॥
করোনায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত উন্নত ও ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এত অত্যাধুনিক স্বাস্থ্য সরঞ্জাম নিয়েও করোনায় প্রাণহানিকে ঠেকাতে পারেনি তারা। মৃত্যুপুরীতে পরিণত লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলও। লাশ দাফনের জায়গা খুঁজে পাচ্ছে না তারা। করোনার প্রথম ঢেউয়ে ল-ভ- হয়েছে গোটা ইউরোপ। এখনও ইতালি-জামার্নিতে মৃত্যুর মিছিল থামেনি। এদিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মৃত্যুপুরীতে পরিণত ভারত। শ্মশানে চিতার আগুনে ধোঁয়াচ্ছন্ন দিল্লি, চেন্নাইয়ের আকাশ। ভারতে প্রতিদিন ৪ হাজারের বেশি মানুষকে কেড়ে নিচ্ছে করোনা। কিন্তু সল্পোন্নত দেশ ভুটানে দেখা যাচ্ছে একেবারে উল্টোচিত্র। বৈশ্বিক এই মহামারি টেরই পাচ্ছে না দেশটি। যেখানে আমেরিকা-ভারত-ব্রাজিলে লাশের স্তূপ পড়ে প্রতিদিন, সেখানে ভুটানে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন মাত্র একজন! এ এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার। করোনার ভয়ানক দুই-ঢেউ আছড়ে পড়েনি পাহাড়ের দেশ ভুটানে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর, চলতি বছরের জানুয়ারির ৭ তারিখে লিভার ও কিডনিসংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে রাজধানী থিম্পুর এক হাসপাতালে ভর্তি হন ৩৪ বছর বয়সি এক যুবক। টেস্টে তার কোভিড-১৯ পজিটিভ ধরা পড়ে। কয়েক দিন লড়াই শেষে করোনাতেই প্রাণ হারান ওই যুবক। ভুটানের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে, এটিই দেশটিতে করোনায় প্রথম মৃত্যু। এবং এখন পর্যন্ত এটাই শেষ মৃত্যু। সংক্রমণের দিকটিও বিস্ময়করভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে ভুটান। ভারতে যেখানে দৈনিক ৪ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, সেখানে ভুটানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১১ জন। পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল দেশ ভুটান কীভাবে করোনাকে রুখে দিল, তা জানতে আগ্রহী খোদ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দাবি, জনস্বাস্থ্যে বিশেষ জোর দেওয়ার কারণেই ভুটানে করোনা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে যেতে পারেনি। ৩৩৭ চিকিৎসক, ৩ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী দিয়েই করোনাযুদ্ধে সফল হয়েছে দেশটি। দেশটির সুষ্ঠু প্রশাসনিক পরিকল্পনার কারণেই এমনটি সম্ভব হয়েছে। গত বছরের ১৫ জানুয়ারি থেকে করোনা সচেতনতায় নামে ভুটান। সেদিন থেকে আক্রান্তদের এবং তাদের সংস্পর্শে আসাদের চিহ্নিত করে পরীক্ষা করা হয়, পাঠানা হয় ১৪ থেকে ২১ দিনের কোয়ারেন্টিনে । করোনার সংক্রমণের পর থেকে বিপুল হারে পরীক্ষা শুরু করে ভুটান। এমন সব পরিকল্পনাই এগিয়ে দিয়েছে ভুটানকে। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারসে দেওয়া সবশেষ তথ্যানুযায়ী, ভুটানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ২০২ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক হাজার ৬৫ জন। মারা গেছেন একজন। চিকিৎসাধীন আছেন ১৩৬ জন।