রীতি মেনে প্রতি বছরই জাপানে ঢাকঢোল পিটিয়ে পালিত হয় ‘নেকেড ফেস্টিভ্যাল’ বা ‘উলঙ্গ উৎসব’। উলঙ্গ হয়ে উৎসবে সামিল হয় পুরুষরা। শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও বাস্তবে বছরের পর বছর ধরে কার্যত এমনটাই পালিত হয়ে আসছে জাপানে। একেবারে নামমাত্র ঐতিহ্যবাহী পোশাকে মন্দিরের সামনে হাজির হয় পুরুষরা।
এবার পুরুষদের সঙ্গে এই উৎসবে সামিল হতে পারবে নারীরাও। বহু আবেদন- অনুরোধের প্রেক্ষিতেই এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফুমিও কিশিদার সরকার, যা জাপানে নতুন ইতিহাসের সূচনা করলো।
‘নেকেড উৎসব’ জাপানে ‘হাদাকা মাৎসূরী’ উৎসব নামে পরিচিত। এটি মূলত ফসল উৎসব। অর্থাৎ ভালো ফসল উৎপাদন ও সমৃদ্ধির জন্য এই উৎসব পালন করে জাপানের ইনাজাওয়ার পুরুষেরা। কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই পুরুষেরা প্রায় উলঙ্গ হয়ে, ‘লয়েন’ পোশাক ও সাদা মোজা পরে সাইদাইজি মন্দিরের সামনে জড়ো হন এবং কয়েক ঘণ্টা মন্দিরের চারপাশে দৌড়াদৌড়ি করেন। তারপর তারা হিমশীতল পানিতে গোসল করে মূল মন্দিরের সামনে গিয়ে দাঁড়ান।
কেবল পুরুষদেরই এই উৎসবে সামিল হওয়ার অধিকার ছিল। নারীদেরও এই উৎসবে সামিল হওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আবেদন জানানো হচ্ছিল। সেই আবেদন-অনুরোধ মেনে অবশেষে ৪০ জন নারীকে উলঙ্গ উৎসবে সামিল হওয়ার অনুমতি দিলো জাপান সরকার। আর সরকারের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গে ১৬৫০ বছরের ইতিহাস পরিবর্তিত হলো।
তবে নারীদের নেকেড উৎসবে সামিল হওয়ার অনুমতি দিলেও বিশেষ শর্ত আরোপ করেছে জাপান সরকার। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নারীরা সম্পূর্ণ পোশাকে থাকবে এবং ঐতিহ্যবাহী হ্যাপি কোট পরতে হবে। পুরুষদের মতো তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারবে না। কেবল নোয়াইজাসা’ রীতি পালন করবেন। এই রীতি অনুযায়ী নারীরা শুধু মাঠে কাপড়ে মোড়ানো বাঁশের ঘাস বয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।
নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছর ২২ ফেব্রুয়ারি উলঙ্গ উৎসব শুরু হবে। প্রায় ১০ হাজার স্থানীয় পুরুষ এই উৎসবে অংশ নেবে বলে মনে করছে আয়োজক কমিটি।