বার্তা ডেস্ক ॥ বিদায়ী নগর পরিষদের কতিপয় কাউন্সিলর ও কর্মচারীর ব্যক্তিগত সুবিধা নেয়া থেকে শুরু করে বিবেকহীন কর্মকান্ডে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে বরিশাল মহানগরীর সৌন্দর্য বর্ধনকৃত ‘নবগ্রাম রোড-চৌমহনী লেক’টি এখন নগরবাসীর গলার কাটা। নতুন নগর পরিষদও বিষয়টি নিয়ে চরম বিব্রত। লেকটির উত্তর প্রান্তে সড়ক অধিদপ্তরের জমি দখল করে জাতীয় মহাসড়কের ওপর অবৈধভাবে নির্মিত কথিত শিশু পার্কটিও ইতোমধ্যে নগরীর অন্যতম দূর্ঘটনাস্থলে পরিনত হলেও নতুন নগর পরিষদ এ বিষয়টি নিয়েও উদ্বিগ্ন। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোন ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। পুরো এলাকা যুড়ে এখন নৈরাজ্যের জয় জয়কার। পদে পদে হেনস্থা ও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন নগরীর বৈধ করদাতাগন। প্রায় ৬ কোটি টআকার অবৈধ ঐ শিশুপার্ক আর ৫কোটি টাকা ব্যায়ে সৌন্দর্য বর্ধনের পরে তার দখল কিশোর গ্যাং ও অবৈধ দখলদারদের হাতে। সাথে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত আলো ঝলমলে পথ খাবারের এসব দোকান বরিশঅল মহানগরীকে দক্ষিণাঞ্চলের পেটের পীড়ার আতুড় ঘরে পরিনত করেছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩য় মেয়র শওকত হোসেন হিরন নগরীর কাশিপুর থেকে আমতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যায়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রসস্তকরণ সহ ‘নবগ্রাম রোড-চৌমহনী লেক’টির উন্নয়ন কাজ শুরু করেন। ২০১৩ সালে আহসান হাবীব কামাল ৪র্থ মেয়র নির্বাচিত হবার পরে প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়। প্রকল্পের আওতায় লেকটির পূর্ব এবং উত্তর-দক্ষিন পাড় আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল সহ ওয়াকওয়ে নির্মান এবং বসার বেঞ্চ স্থাপন সহ দৃষ্টি নন্দন লাইটিং করা হয়। পূর্ব পাড়ে জাতীয় মহাসড়কের পাশে অনেকটা শূণ্যের ওপর সুদৃশ্য গাছও লাগান হয়েছিল। পশ্চিম পাড়ের রাজকুমার ঘোষ রোডটি মেকাডম সহ বিটুমিনাস কার্পেটিং ছাড়াও স্থানীয় এলাকাবাসী ও মারকাজ মসজিদের মুসুল্লীদের জন্য বিশাল ঘাটলা নির্মান করে পুরো লেকটির চারি পাশে একটি সুদৃশ্য পরিবেশ তৈরী করা হলেও তা স্থায়ী হয়নি।
কিছুৃদিনের মধ্যেই পাশর্^বর্তি ওয়ার্ডের একজন কাউন্সিলরের কু নজরে লেকটির পূর্বপাড়ে ওয়াকওয়ে দখল করে পথ খাবারের দোকান বসতে শুরু করে। ক্রমে তা কাউন্সিলরের তত্বাবধানে একটি সিন্ডিকেটের দখলে চলে যায়। আর সিন্ডিকেটকে ম্যানেজ করে একের পর এক পথ খাবারের দোকানে মধ্যরাত পর্যন্ত আড্ডাবাজির সাথে রহস্যজনক বেঁচাকেনাও চলছে। অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে শুরু করে সরকারী জমি দখল করে পুরো এলাকার পরিবেশ বিপন্ন করলেও বিদায়ী নগর পরিষদ বিষয়টি নিয়ে বিবেকেহীন নিশ্চুপ ছিল প্রভাবশালী ঐ কাউন্সিলরের কারণেই। ফলে নগরবাসীর চিত্ত বিনোদনের জন্য সরকারী ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত দৃষ্ট নন্দন এ লেক ও তার চারিধারের স্ষ্ঠুু পরিবেশকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে।
তবে গত ১৪ নভেম্বর দায়িত্ব নেয়া ৫ম মেয়র ও তার নগর পরিষদ নীতিগত ভাবে লেকটিকে মূল আদলে ফিরিয়ে আনার অলিখিত সিদ্ধান্ত নিলেও এখনো দৃশ্যমান কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে খোজ খবর নিয়ে কর্ম পরিকল্পনা প্রনয়নের কাজ শুরু হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। বিষয়টির সাথে অনেক গরীব ও অসহায় পরিবারের রুজির বিষয়টি জড়িয়ে পড়ায় সহনীয়ভাবে মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়েই নবগ্রাম রোড-চৌমহনী লেকটিকে জনস্বার্থের পাশাপাশি নগরীর সৌন্দর্য রক্ষায় তার মূল আদলে ফিরিয়ে আনারও চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন নগরভবনের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র।