আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল এখন কবরস্থান: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৩ ৬:৪১ অপরাহ্ণ গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল এখন কবরস্থান: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
Spread the love

বার্তা ডেস্ক ॥ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হুঁশিয়ার করে বলেছে, গাজায় থাকা সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফা এখন প্রায় ‘একটি কবরস্থান’। যার ভেতরে এবং বাইরে মরদেহ জড়ো করে রাখা হয়েছে।

গাজার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আল-শিফা হাসপাতালটি গত কয়েক দিন ধরে ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর সাথে যুদ্ধে ফ্রন্টলাইন বা সম্মুখ সারিতে পড়ে গেছে।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ দাবি করেছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আল-শিফা হাসপাতালটির নিচে সুড়ঙ্গে একটি কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল কেন্দ্র পরিচালনা করছে হামাস। তবে এ দাবি অস্বীকার করেছে হামাস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান লিন্ডমিয়ার বলেছেন, এই মূহুর্তে হাসপাতালটিতে প্রায় ছয় শতাধিক মানুষ আটকে পড়েছেন। হলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন আরো অনেক মানুষ।

তিনি বলেন, হাসপাতালের চারপাশে মরদেহ পড়ে আছে, যাদের দাফন করা যাচ্ছে না বা সরিয়ে অন্য কোথাও মর্গে নেয়াও যাচ্ছে না।

লিন্ডমিয়ার আরো বলেন, হাসপাতালটির যেভাবে কাজ করা দরকার এটি আর সেভাবে কাজ করতে পারছে না। এটা এখন প্রায় একটি কবরস্থান।

চিকিৎসকরাও জানিয়েছেন, হাসপাতালে মরদেহ জড়ো করে রাখা হয়েছে এবং সেগুলো পঁচতে শুরু করেছে।

আল-শিফার চিকিৎসক ডা. মোহামেদ আবু সেলমিয়া বিবিসিকে বলেছেন, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ এখনো পঁচতে থাকা মরদেহগুলো হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিয়ে দাফন করার অনুমতি দেয়নি।

এর মধ্যে কুকুরগুলো হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ঢুকে মরদেহগুলো খেতে শুরু করেছে।

এছাড়া আরো কয়েক ডজন অপরিণত নবজাতকের জীবন নিয়েও শঙ্কা তৈরি হচ্ছে কারণ বিদ্যুৎ না থাকার কারণে তাদেরকে আর ইনকিউবেটরে রাখা যাচ্ছে না।

সেলমিয়া জানিয়েছেন, ওই শিশুদের মধ্যে সাতটি শিশু অক্সিজেনের অভাবে এরইমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মার্ক রেগেভ বলেছেন, ইসরাইল হাসপাতাল থেকে শিশুদের সরিয়ে নেয়ার বাস্তবসম্মত সমাধান দিয়েছে কিন্তু হামাস তাতে রাজি হচ্ছে না।

আল-শিফার সঙ্গে সঙ্গে গাজার অন্য হাসপাতালগুলো থেকেও নানা ধরণের অভিযোগ আসছে।

চলমান সংঘাত এবং ইসরাইলের নিষেধাজ্ঞার কারণে এসব হাসপাতালে চিকিৎসা সরবরাহ এবং বিদ্যুৎ পৌছাচ্ছে না বলে জানা যাচ্ছে।

গত সাতই অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার পর থেকে এই সংঘাত চলছে।

গাজায় ইসরাইলি আক্রমণের মূল টার্গেট এখন হাসপাতালগুলো। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে হামলা চালাচ্ছে প্রতিদিন। বন্ধ করে দিয়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ। হাসপাতালগুলো টার্গেট করে যখন তখন বোমা হামলা চালাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সগুলোতেও। পরিস্থিতি এতটাই অস্বাভাবিক যে হাসপাতাল থেকে বাইরেও যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বন্দুকধারীদের সাহায্যে হাসপাতালের ভেতরেও চালানো হচ্ছে গুলি।

গাজার সর্ববৃহৎ হাসপাতাল আল-শিফার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। ৯ নভেম্বর থেকেই ইসরাইলিদের দখলে রয়েছে হাসপাতালটি। কোনো রোগীকেই সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ইতোমধ্যেই ডাক্তার এবং বেসামরিকদের হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য করছে ইসরাইল। আল-রিমাল জেলায় অবস্থিত শিফা হাসপাতাল থেকে দক্ষিণে পালাচ্ছেন অসংখ্য চিকিৎসক।

সোমবার শিফাসহ গাজার সর্ববৃহৎ আরও একটি হাসপাতাল আল-কুদসকে ‘পরিষেবার বাইরে’ ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।