আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় মহাশ্মশানে দিপালী উৎসবের প্রস্তুতি সম্পন্ন


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৩ ৫:৩৭ অপরাহ্ণ উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় মহাশ্মশানে দিপালী উৎসবের প্রস্তুতি সম্পন্ন
Spread the love

রুপন কর অজিতঃ উপমহাদেশের সবচেয়ে বড়  ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্মশান দিপাবলী উৎসব আগামীকাল ১১ নভেম্বর (শনিবার) বরিশাল নগরীর কাউনিয়ার মহাশ্মশান এলাকায়  অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে । প্রতি বছর শ্মশান দিপালীর দিনে সন্ধ্যায় কয়েক লাখ প্রদীপের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে নগরের মহাশ্মশান এলাকা। প্রিয়জনের সমাধিতে মোমবাতি, প্রদীপ প্রজ্বলন করেন, আবার কেউ মৃত স্বজনদের প্রিয় খাদ্য দিয়ে স্মরণ এবং আত্মার শান্তি কামনা করাই শ্মশান দিপালীর প্রধান উদ্দেশ্য। সমাধি প্রাঙ্গণ সাজানো হয় ফুল দিয়ে।’

জানাযায়, ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে বরিশালে আয়োজন করা হচ্ছে এ উৎসব। ভারতসহ অন্যান্য দেশে এক স্থানে এত সমাধি বেদি নেই। পুরাকীর্তি আর দৃষ্টিনন্দন এ মহশ্মশানে কয়েক বছর পূর্বে ভারত থেকে নিয়ে আসা হয়েছে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের সমাধিসৌধ। এখানে রয়েছে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ বিল্পবী দেবেন ঘোষ, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেত্রী মনোরমা মাসিমা, শিক্ষাবিদ কালি চন্দ্র ঘোষসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সমাধিসৌধ বহু খ্যাতিমান মানুষের সমাধি রয়েছে এই মহাশ্মশানে।

প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মৃতদের স্বজনরা এই উৎসবে অংশ নিয়ে থাকেন। নতুন পুরনো মিলিয়ে এখানে প্রায় লক্ষাধিক সমাধিসৌধ রয়েছে। আগামী শনিবার এশিয়া উপ মহাদেশের সর্ববৃহৎ বরিশাল মহা শ্মশানে অনুষ্ঠিত হবে শ্মশান দিপাবলী অনুষ্ঠান। তাই প্রিয়জনদের সমাধীতে নতুন ভাবে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্বজনরা।

সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়,শ্মশান ও শ্মশানের সমাধিস্থাপনাগুলো ধোয়া-মোছার কাজ শেষে চলছে রং ও লেখার কাজ। স্বজনদের পাশাপাশি পুরনো সমাধিগুলো নিজ উদ্যেগে সংস্কারের কাজ করছে মহাশ্মশান রক্ষা সমিতি। বিশেষ করে দিপালী উৎসবকে ঘিরে ইতোমধ্যে স্বজন বিহীন সমাধিগুলো প্রতিবছরের মত মহাশ্মশান রক্ষা সমিতির পক্ষ থেকে রং করা হয়েছে। এছাড়া মহাশ্মশান রক্ষা সমিতির পক্ষ থেকে মহাশ্মশানে করা হবে বাহারি আলোকসজ্জা। যার কাজ এখন শেষের দিকে।

মহা শ্মশান রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তমাল মালাকার জানিয়েছেন,দিপালী উৎসবকে কেন্দ্র করে তাদের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ৯৭২ টি বেওয়ারিশ সমাধী রয়েছে। আমাদের শ্মশান রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে সেগুলোতে হলুদ রঙ করা হয়ছে এবং শ্মশান দিপালীর দিন প্রদীপ প্রজ্বলন করা হবে।

তিনি আরও জানান, শ্মশান কমিটির পক্ষ থেকে ১০০ জন নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবি থাকবে। এর বাইরে পুলিশ, র‌্যাবসহ সকল গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। যেকোন দুর্ঘটনা মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিস টিম থাকবে। শ্মশানের বাইরে এবং ভেতরে সিটি কর্পোরেশন থেকে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে, উপ-মহাদেশের সর্ববৃহৎ দিপালী উৎসব ঘিরে এরি মধ্যে তৎপর রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তার স্বার্থে এরি মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যা মহাশ্মশানসহ আশপাশের এলাকার টহল ব্যবস্থা জোড়দার করেছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি বলেন,এশিয়া মহাদেশের মধ্যে এটা সর্ববৃহৎ উৎসব। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে আমাদের পক্ষ থেকে নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তা দেয়া হবে।

আগামীকাল ১১ নভেম্বর  শনিবার বিকেল ৩:২ মিনিটে ভুত চতুর্দশী শুরু হবে এবং রবিবার দুপুর ২:৫৮ মিনিটে শেষ হবে রাত ১২.১ মিনিটে শশ্মান কালিপূজা শুরু হবে।ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে প্রতিবছর ভূত চতুর্দশী ও পুণ্য তিথিতে এই আয়োজন বরিশালে সনাতন ধর্মালম্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব বলে বিবেচিত।