আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

পঙ্কজ নাথের বক্তব্যে বরিশালে তোলপাড়


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৩ ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ পঙ্কজ নাথের বক্তব্যে বরিশালে তোলপাড়
Spread the love
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ ৭৫ এর গণহত্যায় পিস্তল মহিউদ্দিনের সম্পৃক্ততা নিয়ে পংকজনাথের বক্তব্যে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে বরিশালে। বিষয়টি সকলের এখন মুখরোচক হয়ে উঠেছে আসলেই কি পিস্তল মহিউদ্দিন বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত কিনা? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যে পংকজনাথ এর ওই বক্তব্য ভাইরাল হয়ে গেছে। বরিশাল আওয়ামী লীগের জেষ্ঠ কয়েকজন নেতার দাবি পিস্তল মহিউদ্দিন বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে আনন্দ মিছিল করছেন একথা সত্য। তখন পিস্তল মহিউদ্দিনের সাঙ্গোপাঙ্গ ছিলেন মেহেন্দিগঞ্জ পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি কামাল উদ্দিন খান ও তার পরিবারের সদস্যরা। পিস্তল মহিউদ্দিন ৭৫ এর পরে আওয়ামী লীগের ঘোর বিরোধী ছিলেন বলে দাবি করেছেন জ্যেষ্ঠ কয়েকজন নেতা। তারা বলেন নৌকার বিরুদ্ধে পিস্তল মহিউদ্দিন নির্বাচন করেছেন।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের এক জেষ্ঠ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পিস্তল মহিউদ্দিন ও তার অনুসারী মেহেন্দিগঞ্জ পৌর মেয়র কামাল খান এবং তার পরিবারের সদস্যরা ৭৫ এর ১৫ ই আগস্ট এর পরে মোস্তাকের রূপ ধারণ করেছিলেন। তখন তারা আওয়ামী লীগের নাম শুনলেও হিংস্র হয়ে যেত। বর্তমান বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর, সহ-সভাপতি আবজালুল করিম সহ বেশ কয়েকজন নেতা পিস্তল মহিউদ্দিন ও তার সাঙ্গোপাঙ্গদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের একজিষ্ঠ নেতা বলেন, সংসদ সদস্য পংকজ নাথ অপ্রিয় সত্য কথা তুলে ধরেছেন। যেহেতু পিস্তল মহিউদ্দিন এর মেয়ে এখন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সেহেতু তার বিরুদ্ধে সাহস করে কেউ কথা বলতে রাজি হন না। কিন্তু সংসদ পঙ্কজ মহিউদ্দিন এর আসল রূপ তুলে ধরেছেন। ৭৫ এর ১৫ ই আগস্ট এর হত্যাকাণ্ডের পর যে কজন লোক বাংলাদেশে আনন্দ উল্লাস করেছেন তার মধ্যে পিস্তল মহিউদ্দিন একজন। আর মেহেন্দিগঞ্জ এলাকায় কামাল উদ্দিন খান আনন্দ উল্লাস করেছেন। তবে তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে পুরস্কার পেয়ে এখন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র হয়েছেন।
বুধবার মেহেন্দিগঞ্জে সংসদ সদস্য পংকজ নাথ বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনীরা এখন মেহেন্দিগঞ্জে আওয়ামী লীগ এর হরতা করতা। তিনি অভিযোগ করেন, একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মরহুম মহিউদ্দিন আহমেদ বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর ঢাকায় এমপি হোষ্টেলে হাঁসের মাংস ও খিচুরী খেয়ে আমোদ-ফুর্তি করছে। তার তখনকার সহযোগীরাই এখন মেহেন্দিগঞ্জে আওয়ামী লীগ করছেন।
মহিউদ্দিন আহমেদের মেয়ে ড. শাম্মী আহমেদ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং বড় ছেলে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক।
বুধবারের সমাবেশে পঙ্কজ নাথ বলেন, বঙ্গবন্ধুর সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ ওরফে পিস্তল মহিউদ্দিন ক্ষমতা পেয়ে বরিশাল শহরে হিন্দুদের বাড়ি দখল করছে, পাশের এক খৃষ্টান মহিলারে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে তার জমি দখল করছে। ঢাকাযয় বাবর রোডে এক বিহারীর বাড়ি দখল করছে। এজন্য বঙ্গবন্ধু তাকে গভর্ণর করেননি। এতে মহিউদ্দিন আহমেদ বঙ্গবন্ধু ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। পঙ্কজ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে খুনের পর মহিউদ্দিন আহমেদ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে বরিশালে এসেছিলেন। তার লোক কামাল খানসহ (উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপাতি ও পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন খান) অন্যরা মেহেন্দিগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ছবি ভেঙ্গে উল্লাস করছে। এখন পুনরায় তারা একত্রিত হয়েছে আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রবেশ করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে। তবে তাদের এ ষড়যন্ত্র রুখে দেয়া হবে।
তার ওই বক্তব্য তার অনুসারী এমনকি বরিশাল আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। ওই বক্তব্য ভাইরাল হয়ে যায়। এরপরেই বরিশাল জুড়ে মহিউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে বেশ তোড়জোড় শুরু হয়। আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আলোচনা শুরু করে আসলেই মহিউদ্দিন আহমেদ অগোচরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের সাথে যোগাযোগ রেখেছিলেন কিনা।