আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

ইলিশ নির্ভর ভোলার অর্থনীতিতে চলছে মন্দাভাব


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩ ৩:২৬ অপরাহ্ণ ইলিশ নির্ভর ভোলার অর্থনীতিতে চলছে মন্দাভাব
Spread the love

বার্তা ডেস্ক ॥  ভোলায় জেলেদের জালে দেখা মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশের। যে কারণে ইলিশ নির্ভর এ জেলার অর্থনীতিতে চলছে চরম মন্দাভাব। ইলিশের ভরা মৌসুমেও অলস সময় পার করছেন জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

মৎস্য বিভাগ বলছে, জলবায়ূর পরিবর্তনজনিত কারণে নদ-নদীতে অসংখ্য ডুবোচর সৃষ্টি হওয়ায় ইলিশ ভোলায় প্রবেশ করতে না পেরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অঞ্চলে চলে যাচ্ছে। তবে বর্তমানে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় সামনের দিনগুলোতে পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তারা।

ইলিশের ভরা মৌসূম শুরু হয়েছে দু’মাস আগে। অথচ এখনো দেখা মিলছে না ইলিশের। এ বছর এক প্রকার ইলিশের আকাল চলছে বললেই চলে। কেন এই অবস্থা জানতে চাইলে ভোলার বিভিন্ন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের জেলেরা জানান, নদ-নদীগুলো এখন ইলিশের বিচরণের জন্য যথোপযুক্ত না হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। জেলেদের দাবি, সাগর মোহনায় অসংখ্য ডুবোচর থাকায় ইলিশ নদীতে ঢুকতে পারছে না। যখন ঢুকতে পারে তখন আবার নিষেধাজ্ঞা থাকে। ফলে জেলেরা ইলিশ ধরা থেকে বঞ্চিত হন। ইলিশ না পাওয়ায় এখন দুর্দিন চলছে জেলেদের মাঝে। অনেকে এ পেশা ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও করছেন।

ভোলার দৌলতখান ঘাটের রহমান মাঝি বলেন, আগে এ সময় নদীতে ভরপুর মাছ পাইতাম। এখন বর্ষার মৌসূম চইলা যাইতাছে কিন্তু নদীতে মাছ পাইতেছি না। নদীর যে প্রবেশমুখ আছে, সেটা আগে ছিলো অনেক চওড়া। এখন সেখানে অনেক চর পড়াতে মাছ প্রবেশ করতে পারে না।

২২ লাখ জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত ভোলার অন্তত ৭ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইলিশের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমানে ইলিশ না পাওয়ায় জেলার ইলিশ নির্ভর অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব দেখা দিয়েছে। জেলে এবং মৎস্য ব্যবসায়ী উভয়ই দিন কাটাচ্ছেন চরম হতাশায়।

ইলিশা ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী মো. আলমগীর বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর মাছ কম হওয়ায় জেলেরা যেমন কষ্টে আছে, তেমনি আমরা যারা মৎস্য ব্যবসায়ী আছি, তারাও অনেক কষ্টে আছি। নদীতে যদি এখন মাছ থাকতো তাহলে আমাদের ব্যবসা ভালো চলত, জেলেরাও ভালো থাকতো।

ইলিশের উৎপাদন কম স্বীকার করে দৌলতখান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহফুজুল হাসনাইন বলছেন, আপাতত পোয়া মাছ ও পাঙ্গাসসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদন সন্তোষজনক আছে যা দিয়ে জেলেরা টিকে থাকতে পারবে।

নদ-নদীর প্রবেশ মুখে ডুবোচর সৃষ্টি হওয়ায় ইলিশের অবাধ বিচরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, জেলেদের এমন দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ জানান, বর্তমানে ইলিশ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার চলে গেলেও টানা বৃষ্টির কারণে নদীতে পানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় সামনের দিকে জেলেদের জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলবে এবং লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ইলিশ সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।

২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ভোলার ৭ উপজেলা থেকে ১ লাখ ৯২ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মৎস্য বিভাগ। যা দেশের মূল উৎপাদনের ৩ ভাগের ১ ভাগ।