বার্তা ডেস্ক ॥ বরিশাল বিভাগের ৭৬টি সরকারি হাসপাতালের মধ্যে নষ্ট এক্সরে মেশিন দিয়েই চলছে ৩৫টি হাসপাতাল। বাকি ৪১টি হাসপাতালে পুরাতন এক্সরে মেশিনে জোড়াতালি দিয়ে চলছে পরীক্ষার কাজ। ফলে প্রতনিয়িত ভোগান্তিতে পড়ছনে রোগী ও তাদের স্বজনরা।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বিভাগের ৬টি জেলার সরকারি হাসপাতালে এক্সরে মেশিন আছে ৭৬টি। এর মধ্যে ৪১টি কোনরকমে চললেও, একদম অচল হয়ে আছে ৩৫টি মেশিন। আর এক্সরে মেশিন পরিচালনায় ৭৬ জন রেডিওগ্রাফার থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ২১ জন।
বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের রেডিওগ্রাফি বিভাগের র্কমরতরা জানান, কর্তৃপক্ষকে বারবার এ বিষয়ে জানিয়েও কোনো ফল না পাওয়ায় হতাশ তারা। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষপে গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে কোনমতে ৩৭ বছররে পুরাতন এনালগ এক্সরে মেশিনে চলছে পরীক্ষার কাজ। পাশেই ২০১৮ সালের একটি ডিজিটাল মেশিন থাকলেও তা অচল হয়ে আছে। নতুন এ মেশিনটি চালু করার ৩ মাসের মধ্যেই পরীক্ষা করার সময় বিকট শব্দে কেঁপে তা নষ্ট হয়ে যায়, এরপর আর তা ঠিক করানো হয়নি। এছাড়া গত ২ বছর ধরে রেডিওগ্রাফি কনসালটেন্ট না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে পরীক্ষার কাজ।
হাসপাতালের কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, কম টাকায় সেবা নিতে এসে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা।
বরিশাল সদর উপজেলার শায়স্তোবাদ ইউনিয়ন থেকে আসা এক রোগীর আত্মীয় মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালে এক্সরে মেশিন থাকলেও সেটার অবস্থা বেশি ভালো না হওয়ায় বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে এক্সরে করিয়ে আনতে হয়েছে। রোগী টানাটানি করা খুব ভোগান্তির।’
রায়পাশা কড়াপুর থেকে আসা আরেক রোগীর মা খাদিজা বেগম বলেন, ‘এক্সরে রুমে যাওয়ার পর অস্বাভাবিক ভাইব্রশেন (কম্পন) হয়। বিভাগীয় শহরের এই হাসপাতালের এমন অবস্থায় আমরা শঙ্কিত।’
সরকারি হাসপাতালে এক্সরে করতে বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে ৭০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা লাগে আর প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে পরীক্ষা শুরুই হয় ৩০০ টাকা থেকে এমনটিই জানিয়েছেন হাসপাতালে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
এ বিষয়ে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের রেডিওগ্রাফি বিভাগের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট জলিলুর রহমান বলেন, ‘এক্সরে মেশিনের বর্তমান যে অবস্থা তাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হবে সেটাই স্বাভাবকি। আমাদের হাসপাতালেরটা চললেও অন্য অনেক জায়গায় তো একদমই চলে না।’
বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, ‘এক্সরে মেশিন নিয়ে যে পুরো বরিশাল বিভাগে সমস্যা রয়েছে তা দ্রুত সমাধানের জন্য পদক্ষপে নেয়া হবে।’