গভীর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় হঠাৎ বিকল হয়ে যায় ট্রলারের ইঞ্জিন। গত চারদিন ধরে ১৪ জেলেসহ ওই ট্রলার ভাসছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে কোস্টগার্ড ট্রলারসহ ১৪ জেলেকে উদ্ধার করেছে। তবে উদ্ধার হওয়া জেলেরা অক্ষত থাকলেও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। রোববার বিকেল ৩টার দিকে জেলেদের উদ্ধার করে পাথরঘাটায় নিয়ে আনা হয়। পরে কোস্টগার্ড জেলেদের পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
বরগুনার পাথরঘাটার বাদুরতলা গ্রামের ছগির হোসেনের মালিকানাধীন এফবি মাহফুজা নামে মাছ ধরার একটি ট্রলার গত চারদিন ধরে দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ভাসছিল। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সহযোগিতায় কোস্টগার্ড উদ্ধার অভিযানে নামে। এর আগে ১৫ মে দুপুরে পাঁচদিনের বাজার সদাই করে ১৪ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে সাগরে রওনা দেয় এফবি মাহফুজা নামে ট্রলারটি। সেটি ৬৫ দিনের মৎস্য নিষেধাজ্ঞার আগেই ঘাটে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু ১৮ মে হঠাৎ ইঞ্জিনে পানি ডুকে বিকল হয়ে যায়। সেই থেকেই সাগরে ভাসতে থাকে ট্রলারটি।
ফিরে আসা ওই ট্রলারের মালিক মো. সগির হোসেন বলেন, ১৫ মে সাগরে মাছ ধরার জন্য রওনা হই। সাগরে গিয়ে দুইটি খেও মারি। দুদিন পর ১৮ মে হঠাৎ ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। এরপরে আমরা ভাসতে থাকি কোনো কুল কিনারা পাইনি, এমনকি কাছাকাছি কোনো ট্রলারও ছিল না। পরে ভাসতে ভাসতে যখন মোবাইল নেটওয়ার্কের ভেতরে আসি তখন কোস্টগার্ডকে মোবাইলে উদ্ধারের জন্য জানাই। তিনি আরও বলেন, ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমরা খুব টেনশনে ছিলাম ভাবতেও পারিনি আমরা এত তাড়াতাড়ি কিনারে আসবো। বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম ৬৫ দিনের অবরোধের কারণে সাগরে কোনো ট্রলার ছিল না। এছাড়া সাগরও খুবই উত্তাল ছিল।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, আমরা কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় জেলেদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি, তারা সবাই ভালো আছে। কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের পাথরঘাটা স্টেশনের কন্টিজেন্ট কমান্ডার মাহবুবুর রহমান বলেন, রোববার সকালে আমাদের সগীর হোসেন বিষয়টি জানালে আমরা দ্রুত বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সহযোগিতা নিয়ে সাগরে গিয়ে জেলেদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি আরও বলেন, উদ্ধারকৃত জেলেরা অক্ষত রয়েছে তবে শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ এবং দুর্বল। তাই তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।