আজকের বার্তা
আজকের বার্তা

সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর: উপকূলবাসীর শোকের দিন


আজকের বার্তা | প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২২ ১২:১৯ অপরাহ্ণ সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর: উপকূলবাসীর শোকের দিন
Spread the love

শনিবার সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর। ৫২ বছর আগের সেই দিনের বেদনা বিধুর ইতিহাস বাঙালী জাতি আজও ভুলতে পারেনি। ১৯৭০ সালের এই দিনে সমগ্র উপকূল জুড়ে বয়ে যায় মহা প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস।

 

১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত বুঝতে না পারার খেসারত দিতে হয়েছে উপকুলের ১০ লক্ষাধিক নিরক্ষর মানুষের প্রাণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। ভেসে যায় গবাদি পশু, হাঁস-মুরগী আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় মাঠ ফসল এবং অসংখ্য গাছপালা, পশু-পাখি। পুরো উপকূল মুহূর্তেই ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়। লাশের গন্ধ আর স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে এলাকার আকাশ বাতাস। ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যায় এই ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস গোর্কী।

 

১২ নভেম্বরের মহাপ্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলা। সাগর মোহনার ২৫-৩০ ফুট উঁচু ঢেউ ও জলোচ্ছ্বাসে মনপুরার ৩০ সহস্রাধিক মানুষ ও গবাদি পশু স্রোতের টানে ভেসে গেছে উত্তাল সাগরে। গাছে গাছে ঝুলে ছিল লাশ আর লাশ।

 

চর কুকরি মুকরি ইউনিয়নের বাসিন্দা মজিদা বেগম বলেন, এদিন এলেই আমার মায়ের কথা মনে পড়ে যায়। স্রোত এবং ঝড়ের তাণ্ডব থেকে আমাকে বাঁচাতে গিয়ে জোয়ারের পানিতে ভেসে গেলেন আর পাইনি মাকে। সেই বন্যায় আমি আমার পরিবারের মা-বাবা, বোনসহ ৫ জনকে হারিয়েছি।

 

১৯৭০-এর পরের ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড় ছিল ভয়াবহ। এতে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডর, ২০০৮ সালের ৩ মে নার্গিস, ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলা, ২০১৩ সালের ১৬ মে মহাসেন, ২০১৪ সালের ২৮ অক্টোবর নিলোফার, ২০১৬ সালের ২১ মে রোয়ানু, ২০২২সালের ২৪ অক্টোবর সিত্রাং সহ বেশকিছু ছোটবড় ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হানে। তবে ’৭০-এর ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা অন্যকোন ঝড় অতিক্রম করতে পারেনি।

 

১২ নভেম্বরে স্বজনদের মৃত্যুকে স্মরণ করে বিভিন্ন সংগঠন দোয়া, মিলাদ ও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করে থাকে। শোকের এই দিনটিকে উপকূল দিবস হিসেবে পালন করার জন্য দাবী জানিয়ে আসছেন উপকূলবাসী।

 

এম, নোমান চৌধুরী/ চরফ্যাশন, ভোলা