খুঁজুন
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ২৬ কার্তিক, ১৪৩২

রাজনীতির উত্তাপ বাড়ছে বরিশালে

সৈয়দ বাবু
প্রকাশিত: সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:০৬ অপরাহ্ণ
রাজনীতির উত্তাপ বাড়ছে বরিশালে
  • # ২১ আসনেই মনোনয়ন যুদ্ধ

  • # বিএনপিতে বিভাজন-গ্রুপিং

  • # সক্রিয় জামায়াত-ইসলামী আন্দোলন

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বরিশালের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন সরগরম। দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রতিযোগিতা, অভ্যন্তরীণ কোন্দল, এবং বিকল্প রাজনৈতিক জোটের তৎপরতায় দক্ষিণাঞ্চলের এই অঞ্চলজুড়ে তৈরি হয়েছে উত্তেজনাপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ। নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রতিযোগীতা আরো তীব্র হচ্ছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর বরিশাল বিভাগের ২১টি আসনে মনোনয়ন প্রক্রিয়া এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। প্রতিটি আসনেই দেখা যাচ্ছে তীব্র প্রতিযোগিতা।

একটি আসনে চার থেকে পাঁচজন করে মনোনয়ন প্রত্যাশী সক্রিয়ভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ২১টি আসনের বিপরিতে বিএনপির প্রায় সাড়ে ৩শ’ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে। যেটা দলের জন্য অনেকটা সমস্যার সৃষ্টি করছে। ভোটারদের মনেও বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরী হচ্ছে। বিশেষ করে বরিশাল-৩ আসনে হেভিওয়েট দুই নেতা সেলিনা রহমান ও জয়নুল আবেদীনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এখন আলোচনার কেন্দ্রে। এদিকে বরিশালের ৫ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশিদের সাথে আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় রাজধানীর গুলশানের কার্যালয়ে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক করবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

জানা গেছে, বরিশালের ২০টি আসন থেকে এবার ডাকা হয়েছে মোট ৬০ জন মনোনয়নপ্রত্যাশীকে। ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠক শেষে দক্ষিণাঞ্চলের আসনগুলোতে মনোনয়নের সবুজ সংকেত দেওয়া শুরু হবে চলতি মাসের শেষ বা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে। দলের সূত্র জানায়, এ বৈঠকে উপস্থিত মনোনয়নপ্রত্যাশীদের আন্দোলনে ভূমিকা, সাংগঠনিক অবস্থান ও জনপ্রিয়তা যাচাই করে প্রাথমিকভাবে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল-৫ (সদর) থেকে যাচ্ছেন মজিবর রহমান সরোয়ার, আবু নাসের রহমতউল্লাহ, এবায়েদুল হক চাঁন ও মনিরুজ্জামান ফারুক। বরিশাল মহানগর বিএনপির ১নং যুগ্ম আহবায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, “মনোনীত প্রার্থী ঘোষণার পর সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন, তবে আপাতত প্রতিটি গ্রুপ নিজ নিজ অবস্থান শক্ত করছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দল কাটাতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন বিএনপির নেতারা। ইতোমধ্যে তারা একটি বৈঠকও করেছেন। বরিশাল মহানগর বিএনপিতে বিভাজন ও গ্রুপিং দীর্ঘদিনের। অনেক সময় একেক গ্রুপ আলাদা কর্মসূচি পালন করে, ফলে মাঠপর্যায়ে ঐক্যহীনতা স্পষ্ট হয়। সম্প্রতি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে মহানগর বিএনপির নেতাদের আহ্বান জানানো হয় যে, দলীয় স্বার্থে অভ্যন্তরীণ বিভেদ ভুলে মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য।

এ বিষয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন শিকদার বলেন, বরিশালের বিএনপি এখন ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে আছে। আমাদের লক্ষ্য একটাই দলের আদর্শ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে সফল করা। কিছু অভ্যন্তরীণ মতভেদ ছিল, কিন্তু আমরা তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলেছি। এখন বরিশালের প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত সবাই একই লক্ষ্যে কাজ করছে। জনগণ এখন পরিবর্তন চায়, বিএনপি সেই জনগণের কণ্ঠস্বর হিসেবেই মাঠে থাকবে। অপরদিকে, জামায়াতে ইসলামী একক ভাবে বরিশাল রাজনীতির একটি বড় অংশ জুড়ে দখল করে রয়েছে। একই সাথে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি দল বরিশালের নির্বাচনী রাজনীতিতে শক্তিশালী ভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রায় সব আসনেই এসব দল প্রার্থীও চূড়ান্ত করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই দলগুলোর তৎপরতা মূলধারার দলগুলোর ভোট সমীকরণে প্রভাব ফেলতে পারে। “বরিশালে ইসলামী রাজনীতির উপস্থিতি বিএনপির ভোটভাগে প্রভাব ফেলতে পারে, আবার কিছু আসনে ভোট সমন্বয়ের সম্ভাবনাও রয়েছে” বলে দাবী স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

এ বিষয়ে বাংলদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সহকারী সেক্রেটাররি ও বরিশাল ৫ আসনের জামায়াতে ইসলামীর এমপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল বলেন, “আমরা ন্যায়ের রাজনীতি করতে চাই, ক্ষমতার রাজনীতি নয়। বরিশালের মানুষ আজ পরিবর্তন চায় তারা সৎ, নীতিবান নেতৃত্বের অপেক্ষায় আছে। জনগণের পাশে থেকে আমি সবসময় কাজ করেছি, ইনশাআল্লাহ আগামীতেও করব। আমাদের লক্ষ্য হলো এমন একটি সমাজ গঠন করা যেখানে ন্যায্যতা, স্বচ্ছতা ও ইসলামি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত হবে। ভোট যদি সুষ্ঠ হয়, তাহলে ইনশাআল্লাহ বরিশালের মানুষ আমাদের সাথেই থাকবে। এদিকে, নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান (সিইসি) ও স্থানীয় কর্মকর্তারা সম্প্রতি বরিশালে এক বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ভোটকেন্দ্র প্রস্তুতি, প্রশাসনিক দায়িত্ব বণ্টন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মাঠপর্যায়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আগাম নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিক সমাজও সামাজিক ইস্যুতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে ছাত্র-জনতা বরিশালে বিক্ষোভ করেছে। এই ধরনের আন্দোলন এখন রাজনৈতিক আলোচনার অংশ হয়ে উঠছে, যা নির্বাচনী প্রচারণাতেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সব মিলিয়ে বরিশালের রাজনীতিতে এখন উপরোক্ত এই তিনটি স্পষ্ট প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এসব উপাদান মিলিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের রাজনীতি এখন আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। আগামী নির্বাচনে এখানকার ফলাফল রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

ওষুধে মরছে না মশা, অতিষ্ঠ নগরবাসী

রাসেল হোসেন ॥
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:৫৬ অপরাহ্ণ
ওষুধে মরছে না মশা, অতিষ্ঠ নগরবাসী

মশার ভনভন শব্দে অতিষ্ঠ বরিশাল নগরবাসী। পুরাতন ওষুধ দিয়ে মশা নিধন করছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি)। এতে মরছে না মশা। ফলে বরিশাল নগরীতে বেড়েই চলেছে মশার উপদ্রব। দিনে রাতে সমানে চলছে মশার অত্যাচার। নগরজীবনকে অতিষ্ট করে তুলেছে মশা। পাশাপাশি বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে বরিশাল সিটি করপোরেশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, পুরানো নিম্ন মানের ওষুধ দিয়ে বর্তমানে মশা মারা হচ্ছে। ফলে ঠিকমত মরছে না মশা। সর্বশেষ মশা নিধনের ওষুধ সরবরাহের দায়িত্বে ছিল নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড। বর্তমানে এই কোম্পানির সরবরাহকৃত ওষুধ সিটি করপোরেশনের কাছে নেই। ফলে এর আগের সরবরারকৃত কোম্পানি ঢাকার নাস কাডিল গ্রুপের তুলানামূলক নিন্মমানের পুরানো ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে নগরীর কাউনিয়া, নথুল্লাবাদ ও রূপাতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় মশার উৎপাত আগের থেকে বেড়ে গেছে। বাসিন্দারা বলছেন, সন্ধ্যার পর বাসায় বসা যায় না। মশার কামড়ে বাচ্চারা ঘুমাতে পারে না।

রূপাতলী এলাকার বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম বলেন, ফগিং মেশিনে ধোঁয়া ছিটায় ঠিকই, কিন্তু মশা তাতে মরে না। বরং ধোঁয়াটা এসে চোখে লাগে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একই ধরনের ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে মশার মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। তাই ওষুধ পরিবর্তন ও মশা নিয়ন্ত্রণ কৌশলে বৈচিত্র্য আনা দরকার।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন শাখার কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বলেন, নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের সরবরাহকৃত ওষুধ শেষ হয়ে যাওয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য পুরানো ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। নতুন ওষুধ আসলে সেটাই ব্যবহার করা হবে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল বারী বলেন, মশা নিধনের নতুন ওষুধের জন্য টেন্ডার কল করা হয়েছে। অতি দ্রুত নতুন মশা মারার ওষুধ পেয়ে যাব।

শেখ হাসিনার মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ, আত্মপক্ষ সমর্থন ১৭ নভেম্বর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:১৪ অপরাহ্ণ
শেখ হাসিনার মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ, আত্মপক্ষ সমর্থন ১৭ নভেম্বর

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে এই মামলায় আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৭ নভেম্বর তারিখ ধার্য করা হয়েছে। ঢাকার বিশেষ জজ-৫–এর বিচারক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুনের আদালত আজ সোমবার এই তারিখ ধার্য করেন।

আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাতকে আসামি খুরশীদ আলমের আইনজীবী শাহিন উর রহমান জেরা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তার জেরা শেষ হওয়ায় আইনানুযায়ী আদালত আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের তারিখ ধার্য করেন।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দিন মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, শেখ হাসিনা ছাড়াও তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ হয়েছে। আর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আংশিক জেরা হয়েছে।

এই তিন মামলায় গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি খুরশীদ আলমের পক্ষে আইনজীবী শাহিন উর রহমান জেরা করেন। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের পক্ষে জেরার সুযোগ নেই। ১৭ নভেম্বর জয়ের মামলায় বাদীর সাক্ষ্য ও জেরার দিন, আর পুতুলের মামলার তদন্ত কর্মকর্তার জেরার তারিখ ধার্য করেন আদালত।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী আরিফুল ইসলাম জানান, জয়ের মামলায় ২৮ ও পুতুলের মামলায় ২২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। সেদিন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন জানিয়েছিলেন, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর সড়কের আশপাশের এলাকায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানা ও তাঁর ছেলে-মেয়ের নামে ১০ কাঠা করে ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে আলাদা ছয়টি মামলা করে দুদক। এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অন্য মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়। সব কটি মামলায় গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকার সময় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তাঁরা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হলেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার ছয়টি প্লট তাঁদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

গত ৩১ জুলাই এই তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। এর পর থেকে শেখ রেহানা ও তাঁর তিন ছেলে-মেয়ের বিরুদ্ধে করা আলাদা তিন মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এসব মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আসামি।

পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত ব্যক্তি ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন, বলছে পুলিশ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ৬:৫৪ অপরাহ্ণ
পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত ব্যক্তি ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন, বলছে পুলিশ

পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে গুলিতে নিহত ব্যক্তির বিস্তারিত নাম-পরিচয় জানা গেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি সূত্র প্রথম আলোকে বলছে, নিহত ব্যক্তির নাম তারিক সাইফ মামুন (৫৫), তিনি ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ বলছে, দুর্বৃত্তরা খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে।

পুলিশ বলছে, নিহত ব্যক্তি একসময় আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী ছিলেন, তবে অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।

আরও পড়ুন

গাড়ি থেকে নামলেন, ৬ থেকে ৭টি গুলি, পড়ে গেলেন রক্তাক্ত মামুন

গাড়ি থেকে নামলেন, ৬ থেকে ৭টি গুলি, পড়ে গেলেন রক্তাক্ত মামুন

তারিক সাইফ মামুনের জাতীয় পরিচয়পত্র
তারিক সাইফ মামুনের জাতীয় পরিচয়পত্রছবি: পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া

গুলির ঘটনার সিসিটিভির একটি ভিডিও ফুটেজ প্রথম আলোর হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, মামুন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। তখন দুই ব্যক্তি খুব কাছে থেকে তাঁকে গুলি করছেন। ঘটনাটি ঘটে তিন থেকে চার সেকেন্ডের মধ্যে। গুলি করার পর দুই ব্যক্তি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

মামুনের পরিবার বলছে, তিনি দুই দিন ধরে রাজধানীর বাড্ডার ভাড়া বাসায় ছিলেন। আজ সকালে একটি মামলায় আদালতে তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। এ জন্য তিনি সকালে বাসা থেকে বের হন।

মামুনের স্ত্রী বিলকিস আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ধারণা করছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের লোকজন এই হত্যার সঙ্গে জড়িত। এর আগেও ইমনের লোকজন মামুনকে হত্যার চেষ্টা করেছিল।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত ব্যক্তির স্বজনের আহাজারি
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত ব্যক্তির স্বজনের আহাজারিছবি: প্রথম আলো

পুলিশ জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন ও মামুন একসময় হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকার আতঙ্ক ছিলেন। তাঁদের গড়ে তোলা বাহিনীর নাম ছিল ‘ইমন-মামুন’ বাহিনী। তাঁরা দুজনই চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলার আসামি। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, মামুনের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। তাঁর জন্ম ১৯৭০ সালে।

রাজধানীর কোতোয়ালি থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইয়াসিন বলেন, গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে তিনি ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে যান। গিয়ে দেখেন, এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে আছেন। খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন।

আরও পড়ুন

পুরান ঢাকায় হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

পুরান ঢাকায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে স্বজনের আহাজারি। আজ সোমবার সকালে

প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি বলেন, দুজন ব্যক্তি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের প্রবেশমুখে এসে ওই ব্যক্তিকে (মামুন) পেছন থেকে গুলি করেন। বেশ কয়েকটি গুলি করার পর ওই ব্যক্তি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর গুলি করা ব্যক্তিরা মোটরসাইকেল পালিয়ে যান।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, নিহত ব্যক্তির লাশ মর্গে রাখা হয়েছে।