খুঁজুন
রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

শাজাহান খানের চাঁদাবাজিতেই আয় হাজার কোটি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৭:৩৭ অপরাহ্ণ
শাজাহান খানের চাঁদাবাজিতেই আয় হাজার কোটি

বলিউডের কিং খানকে কে না চেনেন। শুধু বলিউড নয়, বিশ্বের অন্যতম ধনী তারকা শাহরুখ খান। তবে শাহরুখ খান ধনী হয়েছেন কষ্ট করে। জনপ্রিয়তা আর মানুষের ভালোবাসায়। শাহরুখ খানের মতো বাংলাদেশেও আছেন একজন কিং খান। তিনিও তারকা, তবে শোবিজের নন। বাংলাদেশে দুর্নীতির ‘কিং খান’ নিঃসন্দেহে শাজাহান খান। দুর্নীতি, দখল, চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসই যার অর্থ উপার্জনের প্রধান হাতিয়ার। বৈধ কোনো আয় ছাড়াই তিনি বনে গেছেন হাজার কোটি টাকার মালিক। চাঁদাবাজি এবং দখল বাণিজ্যের জন্য তিনি আওয়ামী লীগের ভিতর সমালোচিত এবং বিতর্কিত। কিন্তু তার ছিল নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। যে কারণে দলের ভিতরও তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পেত না। লুটপাটের মাধ্যমে শাজাহান খান হয়েছেন হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। শ্রমিকনেতা হিসেবে পরিচিত শাজাহান খান একসময় জাসদের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য। টানা আটবারের এই সংসদ সদস্য (এমপি) নৌপরিবহনমন্ত্রী ছিলেন। তিনি পরিবহন সেক্টর এবং বিআইডব্লিউটিএতে প্রতিষ্ঠা করেন ব্যক্তিগত ক্যাডার বাহিনী। তাদের দাপটে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও ছিলেন অতিষ্ঠ। ভাই ও স্বজনদের মাধ্যমে মাদারীপুর জেলার প্রায় সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছিল তার একক আধিপত্য। জমি দখল, কমিশন বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি- সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। নৌপরিবহনমন্ত্রী থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন হাজার হাজার কোটি টাকা। নিজস্ব বলয়ে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি দিয়েছেন। শাজাহান খান মাদারীপুর-২ (সদর-রাজৈর) আসনের সাবেক এমপি। মাদারীপুরে তার বিকল্প কেউ নেই বলে মনে করত তার পরিবার। খান পরিবারের সিদ্ধান্তের বাইরে সদর ও রাজৈরে কোনো কাজ হতো না। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের বাড়িও মাদারীপুর শহরে। আওয়ামী লীগের শাসনামলের পুরোটা এই দুই কেন্দ্রীয় নেতার দ্বন্দ্ব জাতীয়ভাবেও আলোচিত। পরিবহন শ্রমিকনেতা হিসেবে বিগত আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরে এ খাতের চাঁদার অন্যতম নিয়ন্ত্রক ছিলেন শাজাহান খান। তাদের দাপটে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও অতিষ্ঠ। বিআইডব্লিউটিএ ঘিরে এখনো চলছে শাজাহান খান বাহিনীর তান্ডব। অনেক কর্মকর্তাকে তারা জিম্মি করে নিজের অস্তিত্বের বিষয়ে জানান দিচ্ছেন।

শাজাহান খান ২০১৩ সালে গড়ে তোলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চ। ২০১৯ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হন। এ সময় তার বিরুদ্ধে অমুক্তিযোদ্ধাদের টাকার বিনিময়ে সনদ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ২০১৫ সালে গড়ে তোলেন শ্রমিক-কর্মচারী-পেশাজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ। সর্বশেষ জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে তিনি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মিলে গড়ে তোলেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম সমন্বয় পরিষদ। একাংশের চাঁদা ওঠানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় বিআইডব্লিউটিএ শ্রমিক লীগ নেতা আখতার, সারোয়ার, আবুল, মজিবুর, রফিক গংদের।

নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, ১৫ বছরে শাজাহান খানের আয় বেড়েছে ৩২ গুণ। শাজাহান খানের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সার্বিক কনস্ট্রাকশন, সার্বিক শিপিং লাইন চট্টগ্রাম, সার্বিক ইন্টারন্যাশনাল হোটেল, সার্বিক পেট্রোল পাম্প সবকিছুই তার স্বজনদের নামে। মাদারীপুর-ঢাকা ও ঢাকা-বরিশাল সড়কপথে আধিপত্য বিস্তারকারী সার্বিক পরিবহন তার মালিকানাধীন। সার্বিক পরিবহনের নামে বর্তমানে দুই শতাধিক গাড়ি চলাচল করছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার ছেলে আসিবুর রহমান খান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকারের পতনের পরপরই আত্মগোপনে চলে যান শাজাহান খান ও তার পরিবারের সদস্যরা। ৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে শাজাহান খানকে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর থেকে তার ছেলে আসিবুর রহমান খানকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মন্ত্রী থাকতে বাবা আচমত আলী খানের নামে একটি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন শাজাহান খান। সংগঠনটির কোনো স্থায়ী ও অস্থায়ী কার্যালয় নেই। প্রতি বছর বড় পরিসরে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। সেখানে সরকারের মন্ত্রী ও শিল্পপতিদের রাখা হতো। সংগঠন সূত্র জানায়, নৌমন্ত্রী থাকতে শাজাহান খান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু বছরে একবার ঠোঁটকাটা-তালুকাটা রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প ছাড়া কোনো সেবামূলক কাজই হয়নি।

শাজাহান খান নৌমন্ত্রী থাকাকালে মাদারীপুরের প্রায় ৩ হাজার কর্মীকে বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসিসহ বিভিন্ন বিভাগে চাকরি দিয়েছেন বলে তিনি নিজেই বিভিন্ন সভায় বক্তব্য দিয়েছেন। প্রতিটি চাকরির জন্য শাজাহান খান ও তার ভাইয়েরা ৮ থেকে ১২ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্যে মূল তদারকি করতেন শাজাহান খানের তৎকালীন বিশেষ সহকারী রণজিৎ বণিক।

২০০৯ সাল থেকে পরিবহন খাতে প্রকাশ্যে যানবাহনপ্রতি ৭০ টাকা চাঁদা আদায় শুরু করা হয়। এর মধ্যে ৪০ টাকা যায় মালিক সমিতির হাতে। আর শ্রমিক ইউনিয়নের ১০ টাকা এবং ফেডারেশনের ১০ টাকা। বাকি ১০ টাকা সড়ক শৃঙ্খলায় নেওয়া হতো। এর বাইরে অপ্রকাশ্য চাঁদা উঠত। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সব মিলিয়ে এ খাতে বছরে চাঁদার পরিমাণ অন্তত ১ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শুরু হয় শাজাহান খানের বেপরোয়া চাঁদাবাজি। এই চাঁদাবাজির টাকায় মাদারীপুরে এবং ঢাকায় গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, শাজাহান খানের বার্ষিক আয় ছিল ৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় হলফনামায় তিনি আয় দেখিয়েছেন ২ কোটি ২১ লাখ টাকা। অর্থাৎ ১৫ বছরে তার আয় বেড়েছে প্রায় ৩২ গুণ। একই সময়ে তার অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে পাঁচ গুণ। হলফনামা অনুযায়ী, শাজাহান খানের দুটি গাড়ি এবং স্ত্রীর নামে ৮০ ভরি সোনা ছাড়া আর কোনো অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়নি। ২০০৮ সালে দুটি বাস, একটি গাড়ি ও একটি মাইক্রোবাস, ১৫ ভরি সোনাসহ প্রায় ৪১ লাখ টাকার সম্পদ দেখানো হয়েছিল। শাজাহান খান ও তার স্ত্রীর বেশ কিছু কৃষি ও অকৃষিজমি আছে। প্রায় ৬ কোটি টাকার ভবন ও সমজাতীয় স্থাপনা আছে। দান সূত্রেও ফ্ল্যাট ও জমির মালিক হয়েছেন তিনি। তার স্ত্রীর নামে আছে রাজউকের ১০ কাঠার প্লট ও অন্যান্য স্থাবর সম্পদ। তবে তার দুই ছেলে ও মেয়ের নামে মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ঢাকা, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় বিপুল সম্পদ আছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে হাফিজুর রহমান খানের জমি, সরকারি অর্পিত সম্পত্তি ইজারা নিয়ে করা ১৬টি দোকান ও পাটকল আছে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ১ একর জমিতে অস্থায়ী দোকান, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে দুটি বহুতল ভবন, একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি, দুটি বাণিজ্যিক ভবন, একটি বিলাসবহুল পাঁচতলা আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরাঁ আছে। একই এলাকায় শাজাহান খানের ১০ তলা ভবন আছে। শাজাহানের আরেক ভাই ওবায়দুর রহমানের দুটি বহুতল বাড়ি আছে। থানার সামনে শাজাহানের ছোট ছেলে শামস খানের পাঁচতলা নতুন ভবন, পাশেই হাফিজুর রহমান ও খান পরিবারের যৌথ মালিকানাধীন হাসপাতাল, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে পুরান বাজারে জমি আছে। পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড চৌরাস্তা ও কুলপদ্বী এলাকায় জমি ও বাড়ি আছে। সরকার পতনের দিন বিকালে শাজাহান খানের বিলাসবহুল ১০ তলা বাসভবনে আগুন দেওয়া হয়। তখন হাফিজুর ও ওবায়দুর রহমান খানের মালিকানাধীন চারটি ভবন, দুটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, হোটেল ও রেস্তোরাঁয় অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর আগেই শাজাহান খান ও তার ভাইয়েরা আত্মগোপনে চলে যান। সম্প্রতি তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বিলাসবহুল বাড়িগুলো নতুন করে মেরামতের কাজ করছেন শ্রমিকরা। বিডি প্রতিদিন

 

বরিশালে হাফভাড়া নিয়ে শ্রমিক-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে আহত ৪০

এইচ আর হীরা
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:০০ অপরাহ্ণ
বরিশালে হাফভাড়া নিয়ে শ্রমিক-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে আহত ৪০

 

  • অর্ধশতাধিক বাসে ভাঙচুর

  • আগুন–অবরোধে অচল মহাসড়ক

বরিশালে গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফভাড়া প্রাপ্যতা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে বাস শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অর্ধশতাধিক বাসে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় মহাসড়ক অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভও করেন তারা।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এ সংঘর্ষ শুরু হয়, যা রাত ৮টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উল ইসলাম।

শ্রমিক নেতা আরজু মৃধা জানান, কলেজ বন্ধের দিন হাফভাড়া নিয়ে এক বাস শ্রমিকের সঙ্গে শিক্ষার্থীর বিতণ্ডা বাঁধে। পরে ব্রজমোহন কলেজের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে এসে দাঁড়িয়ে থাকা অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করে এবং শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। এতে বহু শ্রমিক আহত হন বলে দাবি করেন তিনি।

অন্যদিকে বিএম কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, মুলাদী থেকে বরিশাল আসার পথে এক শিক্ষার্থী হাফভাড়া চাইলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বাস শ্রমিকরা। এর প্রতিবাদে তারা বাসস্ট্যান্ডে সমবেত হয়ে শ্রমিকদের বিচারের দাবি জানান। তাদের অভিযোগ, দাবি জানাতে গেলে উল্টো শ্রমিকরাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।

ওসি মামুন উল ইসলাম বলেন, “শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উভয় পক্ষকে শান্ত করতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা কাজ করছি।”

রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আগুনে পুড়ে যাওয়া বাস ও সড়ক অবরোধের কারণে নথুল্লাবাদ এবং সংলগ্ন সড়কগুলোতে যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসও কাজ করছে।

ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নিয়েছে।

বাজার জাটকা ইলিশে সয়লাব , প্রশাসনের নেই তদারকি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:১৭ অপরাহ্ণ
বাজার জাটকা ইলিশে সয়লাব ,  প্রশাসনের  নেই তদারকি

বরিশালের বাকেরগঞ্জে মাছের বাজারগুলো এখন জাটকা ইলিশে সয়লাব। প্রশাসনের অবহেলায় মাছের বাজারে মিলছে এসব জাটকা ইলিশ। ১০ ইঞ্চি বা ২৫ সেন্টিমিটারের কম আকারের ইলিশকে ‘জাটকা’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ আকারের ইলিশ আহরণ, পরিবহন ও বিক্রি পুরোপুরি নিষিদ্ধ। এ নিষেধাজ্ঞা ভাঙলে জেল-জরিমানার তোয়াক্কা করছেন না উপজেলার জেলে ও বিক্রেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রতিটি মাছবাজারেই প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ছয় থেকে সাত ইঞ্চি আকারের জাটকা ইলিশ। উপজেলার এমএ বাড়ি বাজারে নিলামের মাধ্যমে জাটকা বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, জাটকা বিক্রি বন্ধে বাজারগুলোতে মৎস্য অফিস ও প্রশাসনের তদারকি নেই। তাই জেলেরা শিকার করে প্রকাশেই এসব জাটকা হাটবাজারে এনে বিক্রি করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত জাটকা বিক্রি হচ্ছে উপজেলার নাকের ডগায় এমএ বাড়ি মাছবাজারে। নদী থেকে মাছ এনে ডালায় ঢেলে ডাক তোলেন আড়তদাররা। ডাকের মাধ্যমে মাছ কিনে উপজেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে বসে বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

এ ছাড়া উপজেলার বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন পৌর বাজারে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত দশটা পর্যন্ত বাজারে জাটকা মাছ বিক্রি করতেও দেখা গেছে খুচরা ব্যবসায়ীদের। তবে এ সময় জাটকা বিক্রি বন্ধে প্রশাসনকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

স্থানীয় জেলে নির্মল বলেন, জেলেরা কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা মাছ ধরেন। তারা সেই মাছ বাজারে বিক্রি করেন।

বাকেরগঞ্জ পৌর বাজারের মাছ বিক্রেতা আব্বাস সরদার বলেন, অন্য মাছ ব্যবসায়ীরাও জাটকা বিক্রি করেছেন। প্রশাসন যদি জাটকা শিকার বন্ধ করে দিতে পারে, তাহলে বিক্রিও বন্ধ হবে।

জাহিদ মোল্লা নামে একজন জানান, উপজেলার তুলাতলি, কারখানা, পান্ডব, রাঙামাটি, বিষখালি নদীতে জাটকা শিকার করে স্থানীয় আড়ত ও হাট-বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি বছর প্রশাসন কিছু কিছু অভিযান চালালেও এবার এখনো কোনো অভিযান চোখে পড়েনি। দ্রুত জাটকা নিধন বন্ধের দাবি জানান তিনি।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। যখন তখন অভিযান করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি খোঁজ নিয়েছি, নিয়মিত নদীতে জাটকা নিধন ও বাজারে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে। দ্রুতই আমরা হাটবাজারে অভিযান পরিচালনা করব।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ বলেন, বাজারগুলোতে প্রকাশ্যে জাটকা বিক্রি হচ্ছে বিষয়টি জেনেছি। খুব দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে এবং তা বহাল থাকবে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। এই আট মাস জাটকা আহরণ, ক্রয়, বিক্রয়, মজুত সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। তবে বড় আকারের ইলিশ ধরতে কোনো বাধা নেই।

অপসোনিন শ্রমিকদের বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:০৮ অপরাহ্ণ
অপসোনিন শ্রমিকদের বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ

চাকরি পুনর্বহালসহ দুই দফা দাবিতে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন অপসো স্যালাইন ফার্মার ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা। শনিবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১২টা থেকে বরিশাল নগরীর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে শত শত যাত্রীকে।

শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা ও এস এল ফার্মা লিমিটেডে পরিশ্রম করে আসছেন। প্রথমে দৈনিক বেসিক রুলে প্রতিদিন ২২০ টাকার হাজিরায় কাজ করার পর প্রতিষ্ঠানটি তাদের মাস্টাররোলে অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু মাত্র এক বছরের মাথায় হঠাৎ করেই ৫৭০ জন শ্রমিককে বিনা নোটিশে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দেয়া হয়। এতে শ্রমিকদের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

শ্রমিকরা বলেন, আমাদের ছাঁটাই করে কোম্পানি নতুনভাবে ১২০০ শ্রমিক নিয়োগের উদ্যোগ নিচ্ছে। এটা স্পষ্টভাবে আমাদের সঙ্গে অন্যায় ও ষড়যন্ত্র।

বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে অপসো স্যালাইন ফার্মার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এ কারণে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।