খুঁজুন
শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫, ২৯ কার্তিক, ১৪৩২

৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই একাট্টা বরিশাল বিএনপি, সরোয়ারের পক্ষে মাঠে নেতাকর্মীরা

সৈয়দ বাবু :
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ৬:২৩ অপরাহ্ণ
৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই একাট্টা বরিশাল বিএনপি, সরোয়ারের পক্ষে মাঠে নেতাকর্মীরা

নানান জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চমক দেখালেন মুজিবুর রহমান সরোয়ার। দলীয় মনোনয়ন পেয়েই ৪৮ঘন্টার মধ্যে বরিশাল বিএনপির দীর্ঘ্য বছরের অভ্যান্তরীন কোন্দল ভেঙ্গে সকল নেতাকে একই ফ্রেমে বন্দি করলেন তিনি। যার ফলে বরিশাল বিএনপিতে নতুন করে প্রাণ ফিরেছে। দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক দ্বন্দ্ব ও নেতৃত্বসংক্রান্ত কোন্দল কাটিয়ে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমান সরোয়ার। তার মনোনয়নের পর বরিশাল বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিভাজন অনেকটাই শিথিল হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, নেতৃত্ব বাছাইয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দক্ষিণাঞ্চলের রাজনীতির “বারোমিটার” খ্যাত বরিশাল মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে মুজিবুর রহমান সরোয়ার দীর্ঘদিন ধরেই প্রভাবশালী নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। ২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময়ে তিনি নগর উন্নয়নে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন, যার মধ্যে সড়ক উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার ও শহরের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ ছিল উল্লেখযোগ্য।

রাজনীতির মাঠে সরোয়ার সবসময়ই সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বরিশাল সদর আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। সেই সময়ে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন তিনি। দলের সংকটকালেও তিনি কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন, যা তার প্রতি দলের আস্থাকে আরও দৃঢ় করেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে মুজিবুর রহমান সরোয়ার বরিশালে নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিলেন। গ্রেফতার, মামলা ও রাজনৈতিক চাপের মধ্যেও তিনি কর্মীদের মাঠে রাখার রেখেছেন। তার এই ধারাবাহিক সক্রিয়তার কারণেই কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে তার নাম নিয়ে ঐকমত্য গড়ে ওঠে। বিদ্রোহের স্থলে ঐক্যের সুরে এক হয়েছেন বাকি সব মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। তৃণমূলের মতে ঐক্যের কঠিন পথটি পাড়ি দেয়ার মাঝি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিগত সবকটি নির্বাচনেই – বিএনপিকে প্রতিদ্বন্দ্বি দলের চেয়ে নিজের দলের বিদ্রোহকে মোকাবেলা করতে হয়েছে বেশিরভাগ সময়। কখনও নাসিম বিশ্বাসের সাথে সরোয়ার, কখনও সরোয়ারের সাথে আহসান হাবিব কামাল বা এবায়েদুল হক চান। আর এবার ছিল পরিস্থিতি আরও সংকটজনক। বিএনপিতে মনোনয়ন চেয়ে বসলেন ৭জন।

কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার, কেন্দ্রীয় সদস্য আবু নাসের মোঃ রহমতউল্লাহ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড, আবুল কালাম শাহীন, মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামন ফারুক, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার, যুগ্ম আহবায়ক আফরোজা খানম নাসরিণ, বিএনপি নতো আলী হায়দার বাবুল। প্রথমে লিফলেট বিতরণ দিয়ে শুরু এরপর নগরীতে পোষ্টার ছেড়ে এদের অনেকে নিজের প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। আর রহমতউল্লাহতো ৬ মাস আগ থেকেই সভা সমাবেশ আগের নির্বাচনে এক প্রার্থীর পিছনে অনেক নেতা ছিলেন, তারা কমিটি রেজুলেশন নিয়ে ঢাকায় কেন্দ্রে হাজির হতেন। নেতার পক্ষে মনোনয়ন দাবি করতেন। এবার কোন নেতা কারো পক্ষে সমর্থন দেননি। সবাই নিজের মনোনয়ন নিয়ে দৌড়ঝাপ করেছেন। কোন্দল থামাতে এবার কঠোর হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বরিশাল বিএনপির কোন্দল নিরসনে তিনি প্রথমে দায়িত্ব দেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেনকে। তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশিদের সাথে একাধিকবার বৈঠক করেন। এরপর তারেক রহমান নিজে উদ্যোগি হন। মনোনয়ন প্রত্যাসীদের কঠোর বার্তা দেন। সতর্ক করেন বিএনপি বিরোধী একাধিক শক্তির মাথাচাড়া দেয়ার বিষয়টি।

এরপরই আস্তে আস্তে কোন্দল স্তমিত হতে থাকে। প্রথমে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার ঘোষণা দেন- তিনি প্রার্থী নন। কেন্দ্র যাকে মনোণযন দেবে তার পক্ষেই কাজ করবেন। অন্য সবাই ঘোষণা না দিলেও নিশ্চুপ হয়ে যান। সোমবার রাতে যখন প্রত্যাশিতভাবেই চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয় তখর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ্যাড. আবুল কালাম শাহীন, কেন্দ্রীয় সদস্য আবু নাসের মোঃ রহমতউল্লাহ সরোয়ারকে অভিনন্দন জানিয়ে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে বিবৃতি দেন। মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকও তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে প্রেস রিলিজ দেন। জেলা ও মহানগর শ্রমিকদলও সরোয়ারের মনোনয়নকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। ফলে বরিশাল বিএনপিতে যে কোন্দলের আশংকা করা হচ্ছিল তা হয়নি।

বরিশাল বিএনপি এখন মজিবর রহমান সরোয়ারের সাথে রয়েছে বলে স্পষ্ট হয়েছে। তৃণমূল কর্মীরা রাত থেকেই নেমে পরেছেন সরোয়ার পক্ষে। বিএনপি তেদা মহানগরের সাবেক সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির বলেন, বরিশাল-৫ আসনটি এবার অনেক গুরুত্বপুর্ন। ইসলামী আন্দোলনের মূল ঘাটি এখানে। সেই সাথে জামায়াতে ইসলামীর শক্ত প্রার্থী রয়েছে। এর ঐক্য হলে এ আসটিতে জোড় লড়াই হবে। সেক্ষেত্রে এখানে নতুন প্রার্থী দিলে আসনটি হারাতে হতে পারত। সরোয়ারই এ আসনের এজন অভিজ্ঞ এবং সর্বজন সমাদৃত প্রার্থী বলে তিনি মনে করেন। বিএনপি নেতা আনেয়ারুল হক তারিন বলেন, দীর্ঘ চারবারের সংসদ সদস্য, মেয়র, জেলামন্ত্রী হিসবে সরোয়ারের নিজশ্ব একটা বড সমর্থক গোষ্টি আছে। এর সাথে যদি জেলা ও মহানগর বিএনপি নিঃস্বার্থভাবে সরোয়ারের পাশে থাকে তবে বিএনপির জয় এবারও নিশ্চিত। দলীয় নেতারা বলছেন, সরোয়ারের নেতৃত্বে এখন বরিশাল বিএনপি নতুন উদ্যমে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নির্বাচনী সভা, কর্মী বৈঠক ও যোগাযোগ জোরদারের কাজ শুরু হয়েছে। একজন তৃণমূল নেতা বলেন, “সরোয়ার ভাইয়ের নেতৃত্বে আমরা আবার সংগঠিত হচ্ছি। অনেকদিন পর বরিশালে বিএনপির মধ্যে ঐক্যের সুর বেজেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের রাজনীতিতে বরিশালের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভৌগোলিক অবস্থান ও ভোটার কাঠামোর কারণে বরিশালকে দক্ষিণাঞ্চলের রাজনীতির “বারোমিটার” বলা হয়। এখানকার ভোটের প্রবণতা প্রায়ই আশপাশের জেলা ও পুরো অঞ্চলের নির্বাচনী হাওয়াকে প্রভাবিত করে। ঐতিহাসিকভাবে বরিশাল বিএনপির একটি শক্ত ঘাঁটি ছিল। ফলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বরিশালের ফলাফলকে রাজনৈতিক দলগুলো কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, মুজিবুর রহমান সরোয়ার একজন অভিজ্ঞ ও গ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে বরিশাল বিএনপিকে পুনরায় মাঠে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবেন।

তবে স্থানীয় নেতৃত্বের অভ্যন্তরীণ বিরোধ সম্পূর্ণ মিটিয়ে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ রাখা এখন তার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

দেশে আগুনসন্ত্রাস-ককটেলবাজি, জনমনে উদ্বেগ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:৫০ অপরাহ্ণ
দেশে আগুনসন্ত্রাস-ককটেলবাজি, জনমনে উদ্বেগ
দুই দিনের মধ্যে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আগুনসন্ত্রাস ও ককটেলবাজির ঘটনা ঘটেছে। এমনকি বাসে অগ্নিসন্ত্রাসীদের দেওয়া আগুনে ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়ে অঙ্গার হয়েছেন গাড়ির চালক। এ ধরনের সন্ত্রাস-নাশকতার কারণে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। যদিও নাগরিকদের জানমালের সুরক্ষায় কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এমনকি এসব ঘটনায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী পলাতক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের রায় কবে, তার তারিখ ঘোষণা হবে আগামী ১৩ নভেম্বর। দিনটিকে ঘিরে হাসিনার দল কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বিদেশে পলাতক নেতাদের বিভিন্ন রকমের হুমকি-ধমকি দিতে দেখা গেছে। তারা ১৩ নভেম্বর কথিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এমনকি বিদেশে নিরাপদে ভোগবিলাসে জীবনযাপন করতে থাকা আওয়ামী লীগের অ্যাক্টিভিস্টদের অনেকের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নাশকতার পরিকল্পনা-পরামর্শও প্রকাশ হতে দেখা গেছে।

এর মধ্যে গত ৭ নভেম্বর রাতে কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথেড্রাল চার্চের গেটে মোটরসাইকেল থেকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এছাড়া চার্চের গেটে আরেকটি অবিস্ফোরিত ককটেল পাওয়া যায়।

এরপর সোমবার (১০ নভেম্বর) ভোরে মেরুল বাড্ডার ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সামনে আকাশ পরিবহনের একটি বাসে এবং শাহজাদপুর বাঁশতলায় ভিক্টর ক্লাসিক নামের একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। সেদিন সন্ধ্যায় ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে শান্তা মরিয়ম সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির একটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

এদিন গভীর রাতে যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগে রাজধানী পরিবহনের একটি বাসে এবং ওই এলাকায় ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টেরের সামনে রাইদা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ভোরে উত্তরার জনপথ মোড়ে রাইদা পরিবহনের আরেকটি বাসে আগুন লাগার খবর আসে। এছাড়া রাত ২টা ৩৬ মিনিটে ভাটারা এলাকায় একটি পরিত্যক্ত প্রাইভেট কারে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

কিছুদিন ধরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির প্রচেষ্টা করছে, বিশেষ করে ঢাকা শহরে।

অন্যদিকে এদিন ভোরে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে বাসের ভেতরেই ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়ে মারা যান গাড়িটির চালক জুলহাস মিয়া। ফুলবাড়িয়া পৌরসভার ভালুকজান বাজারের পেট্রল পাম্পের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে মিরপুর, ধানমন্ডি, বাংলামোটর, মোহাম্মদপুর ও খিলগাঁও ফ্লাইওভার এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সোমবার রাত ১১টার পরে বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কার্যালয়ের সামনে মোটরসাইকেলযোগে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত জনতা মাসুদুর রহমান (২৮) নামে এক যুবককে ধরে গণপিটুনি দেয় এবং পরে পুলিশে সোপর্দ করে।

পুলিশ বলছে, চলতি মাসের শুরু থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর ১৫ স্থানে ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আর গত দুই দিনে নয়টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫০ জনকে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, আগুনসন্ত্রাসসহ অন্যান্য অপরাধ কঠোরভাবে প্রতিহত করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তারা বলছেন, অগ্নিসন্ত্রাস-ককটেলবাজিসহ গত কয়েকদিনের বেশ কয়েকটি ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা। এসবের সঙ্গে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলের যোগসাজশ আছে।

কাকরাইলে চার্চের সামনে বিস্ফোরণে ছাত্রলীগের ক্যাডার আটক
কাকরাইলে চার্চের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই হামলার ঘটনায় ২৮ বছর বয়সী এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এছাড়া ঘটনাটির পর রাজধানীর সব গির্জা এবং সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলম বলেন, এনসিপি কার্যালয়ের সামনে মোটরসাইকেলযোগে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত জনতা মোটরসাইকেলে থাকা মাসুদুর রহমান (২৮) এক যুবককে ধরে গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এই ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় কতজন ছিল, সব বিষয়ে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই যুবকের কাছ থেকে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।

নাশকতার নেপথ্যে আ.লীগের ১৩ নভেম্বরের ‘লকডাউন’ 
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে ভারতে পলাতক আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করা হবে ১৩ নভেম্বর। দিনটিকে ঘিরে ফেসবুক, টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের অ্যাক্টিভিস্টদের নানা উসকানিমূলক প্রচারণা দেখা যাচ্ছে।

এরই মধ্যে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ১৩ নভেম্বর ‘লকডাউন’ ঘোষণা দিয়েছে। ওই কর্মসূচির ঘোষণা ঘিরে ছড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের গুজব ও অপপ্রচার। যার মধ্যে রয়েছে গণসমাবেশ ঘটিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার আশঙ্কা ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের প্রচারণা।

গ্রেপ্তারদের কাছে পাওয়া তথ্য এবং পরিচয় যাচাই করে দেখা যায়, তাদের অধিকাংশই ঢাকার বাইরে থেকে আসা। অর্থের বিনিময়ে তারা ঢাকায় এসে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণ করে এবং আবার ঢাকার বাইরে চলে যায়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে বলেন, কিছুদিন ধরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির প্রচেষ্টা করছে, বিশেষ করে ঢাকা শহরে। গত কয়েকদিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ককটেল সদৃশ্য বস্তু নিক্ষেপ এবং বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোসহ আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট করার অপচেষ্টা অব্যাহত আছে।

তিনি বলেন, অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ১৪টি ঝটিকা মিছিল করে তারা এবং স্বল্পস্থায়ী এসব ঝটিকা মিছিলের ছবি সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে। অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত ঝটিকা মিছিলের পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও অংশগ্রহণকারী ৫৫২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি। গ্রেপ্তারদের কাছে পাওয়া তথ্য এবং পরিচয় যাচাই করে দেখা যায়, তাদের অধিকাংশই ঢাকার বাইরে থেকে আসা। অর্থের বিনিময়ে তারা ঢাকায় এসে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণ করে এবং আবার ঢাকার বাইরে চলে যায়। গত কয়েকদিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, হেলমেট ও মাস্ক পরে তারা ভোর বা দিনের ব্যস্ত সময়ে টার্গেটকৃত স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। অনেক ক্ষেত্রে তারা এই কাজে অপ্রাপ্ত বয়স্কদেরও ব্যবহার করছে।

সঙ্গে সঙ্গে অপরাধ প্রতিহত করা হবে: ডিএমপি
সাম্প্রতিক অগ্নিসন্ত্রাস-ককটেলবাজির বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস ও ককটেল বিস্ফোরণ যারা ঘটিয়েছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ কাজ করছে। এ ছাড়া ১৩ নভেম্বরকেন্দ্রিক হুংকারের ঘটনায় যে কোনো অপরাধ কর্মকাণ্ড সঙ্গে সঙ্গে প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ।

পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকায় অনেক জায়গায় একসঙ্গে একের অধিকও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এই বিস্ফোরণগুলো যারা ঘটাচ্ছে অধিকাংশই হেলমেট পরে বাইকে করে এসে ঘটিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি কয়েকটি বাসে আগুন লাগানোর ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা। ১৩ নভেম্বর নিয়ে ভিডিও বার্তায় যারা হুংকার দিয়েছে, সেসব ফ্যাসিবাদ গোষ্ঠীই এসব কাজ করছে। পুলিশের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে ও চেক পোস্টসহ নানা রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

মাঠে র‌্যাব
র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, রাজধানীতে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িসহ কয়েকটি বাসে আগুন লাগানোর ঘটনায় অলরেডি র‍্যাবের গোয়েন্দারা মাঠে কাজ করছে। এ ছাড়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যেমন চার্চের সামনেসহ বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়েও কাজ করছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের পক্ষ থেকে ১৩ নভেম্বর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শাটডাউনসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটানোর ডাক দিতে দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অগ্নিসন্ত্রাস, ককটেল বিস্ফোরণসহ নানা রকম অপরাধ দমনে বর্তমানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যাপক জোরদার করা হয়েছে।

র‍্যাবের পক্ষ থেকে ছক করে ঢাকার বিভিন্ন স্থানসহ নারায়ণগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে, যেখানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে পারে ফ্যাসিবাদরা সেসব জায়গায় নিরাপত্তা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এরই মধ্যে র‍্যাবের আনুমানিক দুইশ পেট্রোল টহল ডিউটিতে নিরাপত্তার কাজ শুরু করেছে।

এ ছাড়া সন্ত্রাসী পর্যায়ক্রমে যেসব জায়গায় চালানো হতে পারে সেসব জায়গায় আর গতিশীল-শক্তিশালী চেকপোস্ট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ঢাকার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ, কেরানীগঞ্জসহ ও অন্যান্য স্থানে ৭০টি চেকপোস্টে কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে শুরু হয়েছে।

এ ছাড়া দেশজুড়ে র‍্যাবের ১৫ ব্যাটালিয়নকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক ১৩ নভেম্বর অপরাধ কার্যক্রম প্রতিরোধ ও যানবাহনে আগুন, ককটেল বিস্ফোরণসহ সব রকম অপরাধ সঙ্গে সঙ্গে মোকাবিলার জন্য কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন।

তা ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে কেউ অপরাধ ঘটিয়ে অথবা অপরাধ ঘটনার পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়, এর জন্য র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সেখানে লোকবল বাড়িয়ে এক্সপার্ট সাইবার ক্রাইম টিম ২৪ ঘণ্টায় এসব মনিটরিং করছে। পাশাপাশি মনিটরিংয়ের মাধ্যমে অপরাধ চিত্রগুলো পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কাছে শেয়ার করা হচ্ছে।

ফ্যাসিবাদীদের গণপ্রতিরোধের ডাক
কথিত ‘লকডাউন’ ঘিরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের এ ধরনের নাশকতা ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ফ্যাসিবাদবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নানা রকমের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

এরই মধ্যে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা ১৩ নভেম্বর রাজপথে থাকার কথা জানিয়েছেন। ঢাকায় জাতীয়তাবাদী যুবদল আওয়ামী লীগের নাশকতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলও করেছে। ১২ ও ১৩ নভেম্বর মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির।

এছাড়া ‘জুলাই ঐক্য’ ১৩ নভেম্বর দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে। আগের দিন ১২ নভেম্বর ‘শেখ হাসিনার ফাঁসি ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে’ ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল করবে তারা।

সোমবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীদের মোকাবিলায় বাঁশের লাঠি নিয়ে তৈরি হওয়ার আহ্বান জানান।

সহিংসতা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাসে আগুন ও ধর্মীয় স্থাপনাসহ কয়েকটি স্থানে বিস্ফোরণের ঘটনা সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক তৈরি করছে। যারা অতীতে অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বক্তব্য-বিবৃতিবাজি করেছে, তারাই এখন সে ধরনের নাশকতায় জড়িত হওয়ায় জনমনে তাদের অতীতের অবস্থান নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

সাধারণ মানুষকে নিজের নিরাপত্তার প্রশ্নে সতর্ক থাকা এবং কোনো ধরনের সংঘাত-সহিংসতার উপস্থিতি লক্ষ্য করলে একত্রিত হয়ে মোকাবিলা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, রাজধানীতে কয়েকটি বাসে আগুন এবং ধর্মীয় স্থাপনাসহ কয়েকটি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। হাজিরা দিতে এসে দিনে-দুপুরে সবার সামনে একজন ব্যক্তি সন্ত্রাসীদের গুলিতে খুন হলেন, যা সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করে। অতীতে সন্ত্রাসীরা নানা ধরনের সহিংসতা সৃষ্টি করে মানুষকে আতঙ্কিত করে এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে জিম্মি করে দাবি আদায়ের সহিংস পন্থা বেছে নিয়েছে বলে উদাহরণ আছে, যা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও বর্বরোচিত।

এই পরিস্থিতি যত বেশি সৃষ্টি হবে সাধারণ মানুষ তত বেশি আতঙ্কিত থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে রাজনৈতিক পরিচয়সহ কোনো ধরনের বিবেচনা গণ্য না করা।

নির্বাচন ও নির্বাচনকালীন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার প্রশ্নে সমন্বিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন জানিয়ে ড. তৌহিদুল হক বলেন, সাধারণ মানুষকে নিজের নিরাপত্তার প্রশ্নে সতর্ক থাকা এবং কোনো ধরনের সংঘাত-সহিংসতার উপস্থিতি লক্ষ্য করলে একত্রিত হয়ে মোকাবিলা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন। জনসম্পৃক্ত রাজনৈতিক দায়িত্বশীল ভূমিকা সব প্রকার সংঘাত-সহিংসতা থেকে পরিত্রাণের ও প্রতিরোধের শক্তিশালী উপায়।

সব সময় পেটে গ্যাস? শীতকালীন কোন সবজি এড়িয়ে চলবেন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:৪৩ অপরাহ্ণ
সব সময় পেটে গ্যাস? শীতকালীন কোন সবজি এড়িয়ে চলবেন
শাক-সবজি খেয়েও গ্যাস, পেট ফাঁপার সমস্যায় ভুগতে হয় অনেক সময়। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এই সমস্যার মুখোমুখি হন অনেকেই। বিশেষত শীতের সবজি খেলে পেটের সমস্যা বাড়ে। তেল-মসলাদার খাবার না খেয়েও পেট গ্যাসে ফুলে যায়।

ফাইবারের মাত্রা বেশি

ক্রুসিফেরাস সবজি আদতে স্বাস্থ্যকর।

এতে ভরপুর মাত্রায় ফাইবার থাকে। কিন্তু আপনি যদি ইরিটেবল বাওল সিনড্রোম বা গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থাকে, তাহলে জটিলতা তৈরি করে ক্রুসিফেরাস সবজি। এই ধরনের সবজিতে যে ফাইবার রয়েছে, তাই আইবিএস-এর রোগীদের পক্ষে হজম করা কঠিন হয়ে পড়ে। ক্রুসিফেরাস সবজি অনেক সময়ে হজম হয় না, কিংবা হজম হতে সময় নেয়।
তখনই গ্যাস, পেটফাঁপার সমস্যা বাড়ে। 

কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট

কপিজাতীয় সবজির মধ্যে রাফিনোজ নামের একটি কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এটি অন্ত্রে সহজে হজম হয় না। তার পরে কোলনে পৌঁছে গ্যাস, পেট ফাঁপা, বদহজমের মতো সমস্যা ডেকে আনে।

কিভাবে রান্না করলে কপিজাতীয় সবজি সহজপাচ্য হবে

বাঁধাকপি, লেটুসের মতো সবজি অনেকেই কাঁচা খান।

আবার ব্রকলি, ফুলকপি অল্প ভাপিয়ে খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকের। কিন্তু কাঁচা বা অর্ধসিদ্ধ ক্রুসিফেরাস সবজি একেবারেই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। এতে পেটের সমস্যা হবেই হবে। 

তাই বদহজম এড়াতে হলে কপিজাতীয় সবজি ভালো করে সিদ্ধ করে খাওয়া উচিত। যদি আইবিএস বা গ্যাস-পেটফাঁপার সমস্যা থাকে, তাহলে কম পরিমাণে কপিজাতীয় সবজি খান। কপির তৈরি সবজিতে হিং, আদা, জিরার মতো উপাদান ব্যবহার করুন, যাতে পেটে গ্যাস না হয়।

ভোলায় ৩০ ঘণ্টায় ১০ মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:৫৬ অপরাহ্ণ
ভোলায় ৩০ ঘণ্টায় ১০ মৃত্যু

গত ৩০ ঘণ্টায় পৃথক ঘটনায় ভোলায় ১০ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে কেউ আত্মহত্যা করেছেন, কেউবা দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। একের পর এক এমন হৃদয়বিদারক ঘটনায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো জেলায়। ভোলাবাসীর মধ্যে শোকের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃতদের মধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় ২ জন, দৌলতখানে ১ জন, লালমোহনে ৪ জন, তজুমদ্দিনে ১ জন এবং চরফ্যাশনে ২ জন রয়েছেন।



পৃথক ঘটনায় নিহতদের বিবরণ
আত্মহত্যা (৪ জন)
ভোলা সদর: ৯ নম্বর ওয়ার্ডে চৈতী রানী দাস (২৫) নামের এক গৃহবধূ রোববার রাত ১০টার দিকে নিজ ঘরের জানালার গ্রিলে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তিনি দুবাই প্রবাসী সুভাষ চন্দ্রের স্ত্রী। একই উপজেলার পশু চিকিৎসক সুমন চন্দ্র দে (৩৫) সোমবার দুপুরে নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছিলেন।

দৌলতখান: পশ্চিম জয়নগর গ্রামে রাফি (১৬) নামের এক দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু (৬ জন)
পানিতে ডুবে (৩ জন): লালমোহন উপজেলায় পৃথক ঘটনায় পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার দুপুরে চরভূতা ইউনিয়নে ১৮ মাস বয়সী আলিফ এবং কালমা ইউনিয়নে নুসরাত ও মোহনা নামের দুই শিশু খেলাধুলার সময় পরিবারের অগোচরে পুকুরে পড়ে মারা যায়।

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে (২ জন): চরফ্যাশনের আসলামপুর ইউনিয়নের জনতা বাজার এলাকায় সোমবার সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে কৃষকদের পাতা বৈদ্যুতিক ফাঁদে স্পৃষ্ট হয়ে জুবায়ের ইসলাম (১৪) ও জিহান (১৫) নামের দুই স্কুলছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। তারা স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।



অটোরিকশার ধাক্কায় (১ জন): তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নে সোমবার সকালে রাস্তা পার হওয়ার সময় অটোরিকশার ধাক্কায় ইভা মনি (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়।

অন্যান্য (১ জন): লালমোহন পৌর ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সোমবার সকালে রিজিয়া বেগম (৬০) নামের এক পরিচ্ছন্নকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

প্রতিটি ঘটনার সত্যতা সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। হঠাৎ করে এতগুলো মৃত্যুর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করে নানা আলোচনা চলছে।