খুঁজুন
রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বরিশাল মহানগর ৩০ নং ওয়ার্ড বিএনপির দোয়া মোনাজাত

স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশিত: বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:৫৭ অপরাহ্ণ
বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বরিশাল মহানগর ৩০ নং ওয়ার্ড বিএনপির দোয়া মোনাজাত

বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য ও সুস্থতা কামনায় বরিশাল মহানগর বিএনপির ৩০ নং ওয়ার্ড ইউনিটের আয়োজনে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (০২ ডিসেম্বর) বাদ এশা ওয়ার্ডের স্থানীয় কার্যালয়ে এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন, বরিশাল মহানগর যুবদল এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাকসুদুর রহমান মাসুদ, ৩০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সজীব বেগ মিসাদ, কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলি আহম্মেদ মিয়া, ৩০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী নিজাম উদ্দিন, ৩০ নং ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান রিয়াজ সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

দোয়া মোনাজাতে অংশগ্রহনকারীরা দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা, দীর্ঘায়ু এবং সার্বিক মঙ্গল কামনা করেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, খালেদা জিয়া দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। তার সুস্থতা জাতীয় রাজনীতির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মানবিক কারণে খালেদা জিয়ার যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং তার সুস্থতা কামনা সকলেরই দায়িত্ব।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে ‘নতুন পটভূমি’ খুঁজছে ঢাকা: ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:৫৮ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে ‘নতুন পটভূমি’ খুঁজছে ঢাকা: ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার

বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কে নতুন পটভূমি খোঁজার চেষ্টা করছে ঢাকা। এমন এক নতুন পটভূমি, যেখানে দুই দেশ নিজেদের ভবিষ্যৎ ভাগাভাগি করে নিতে পারবে।গতকাল বুধবার কলকাতার মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) আয়োজিত এক ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশনে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ এ মন্তব্য করেন।

এমন এক সময়ে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের এ মন্তব্য এল, যার কয়েক দিন আগে ঢাকার তরফে বলা হয়েছে—বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক একটি বিষয়ে আটকে থাকবে না।

অন্যদিকে সম্প্রতি বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোষ্টে মোদি লিখেছেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার যেকোনো প্রয়োজনে ‘সম্ভাব্য সব সহায়তা’ দিতে প্রস্তুত ভারত।

নয়াদিল্লিতে আট মাস আগে বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে যোগ দেওয়া হামিদুল্লাহ বলেন, ‘এমন এক নতুন পটভূমি তৈরির চেষ্টা হচ্ছে, যেখানে আমরা নিজেদের ভবিষ্যৎ ভাগাভাগি করে নিতে পারব। কথাটা বলা যত সহজ, বাস্তবায়ন তত সহজ নয়। তবে এটা সম্ভব। আমাদের কিছু ভিন্নমত ও সংবেদনশীল বিষয় আছে। কিন্তু এটাই সম্পর্কের স্বাভাবিক চরিত্র। আমরা যদি পটভূমির কেবল একটি দিক নিয়ে ব্যস্ত থাকি, তাহলে পুরো বিষয়টির প্রতি সুবিচার করা হবে না।’

বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ‘ওতপ্রোতভাবে জড়িত’ (অর্গানিক) উল্লেখ করে হামিদুল্লাহ বলেন, দুই দেশই দ্রুত উন্নতি করছে। দুই দেশের বর্তমান ‘অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার’ পরিমাণ ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের বেশি।

বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, ‘আপনারা যদি বাংলাদেশের আমদানিকাঠামো এবং বন্দর ও লজিস্টিকস খাতে নতুন সক্ষমতা যোগ হওয়ার যে সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, তা খেয়াল করেন, তাহলে ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনাগুলো বুঝতে পারবেন।’

ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে আসা-যাওয়ায় ঢাকা কড়াকড়ি আরোপ করেনি উল্লেখ করে বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক আগের মতো সব অর্থে দুই দেশের নাগরিকদের সম্পর্ক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। এটাকে আমি পারস্পরিক নির্ভরশীলতা হিসেবে দেখি।’

এ সময় হামিদুল্লাহ ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (আরবিআই) গত আগস্টের একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে বলেন, দুই দেশের বাণিজ্য প্রায় ১২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

হামিদুল্লাহ বলেন, আগামী বছর দিল্লিতে একটি বাংলা চলচ্চিত্র উৎসবের পরিকল্পনা চলছে। পাশাপাশি তিনি ভারত ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য বাংলাদেশে থাকা তাঁদের পূর্বপুরুষদের ভিটেবাড়ি ভ্রমণের সুযোগ বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন।

জুবাইদা রহমান ঢাকায় আসছেন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:৫৪ অপরাহ্ণ
জুবাইদা রহমান ঢাকায় আসছেন

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিতে যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের পথে রওনা হচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান। এদিকে খালেদা জিয়াকে নেওয়ার জন্য কাতারের আমিরের যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আজ রাতে ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটা আসতে বিলম্ব হচ্ছে।

কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আজ রাতে ঢাকায় পৌঁছাবে—আজ বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেছিলেন। তবে সন্ধ্যার পর দলটির মিডিয়া উইং জানিয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কিছু টেকনিক্যাল (কারিগরি) সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ কারণে এর যাত্রা বিলম্বিত হবে।

অবশ্য বিএনপির সূত্র বলছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পাঠানোর জন্য দ্রুত প্রস্তুত না হলে কাতার কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে বিকল্প ব্যবস্থা করার কথাও চিন্তা করছে।

লন্ডনের স্থানীয় সময় আজ সন্ধ্যায় (বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী প্রায় মধ্যরাত) জুবাইদা রহমান ঢাকার উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন বলে বিএনপির সূত্রগুলো জানিয়েছে। তারা বলছে, আগামীকাল শুক্রবার দিনের প্রথমার্ধে তিনি ঢাকায় পৌঁছাতে পারেন। পরে শাশুড়িকে দেখতে সরাসরি ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে যেতে পারেন জুবাইদা রহমান। খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডন-যাত্রায়ও শরিক হতে পারেন চিকিৎসক জুবাইদা।

এর আগে আজ বিকেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে জানান, জুবাইদা রহমান আজ বৃহস্পতিবারই বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। তিনি লেখেন, ‘জুবাইদা রহমান আজই দেশের উদ্দেশে রওনা হয়ে কাল (শুক্রবার) সকালে ঢাকা পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন, যেন সঙ্গে থেকে দেশনেত্রীকে কাতারের অত্যাধুনিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন নিয়ে যেতে পারেন। তবে তার আগেই যদি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা যায় কিংবা তাঁর আসা না হয়, সেই বিবেচনায় লন্ডনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড বিল ইতিমধ্যে ঢাকায় এসেছেন। ম্যাডামের পুত্রবধূ সৈয়দা শামিলা রহমান, কয়েকজন চিকিৎসক ও কর্মকর্তাও এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সার্বক্ষণিক পাশে থাকবেন বলে জানা গেছে।’

১২ দিন ধরে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানা গেছে। তাঁকে নিয়ে দেশের মানুষ উদ্বেগে রয়েছে।

উন্নত চিকিৎসার জন্য গত জানুয়ারি মাসে লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে প্রথমে হাসপাতালে, পরে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা নেন। প্রায় চার মাস পর গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন।

গত ২৩ নভেম্বর রাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরীক্ষায় ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাঁকে ভর্তি করা হয়। গত রোববার ভোরের দিকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এসডিইউ থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।

দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মহানায়ক বেগম জিয়া

কাজী রাব্বী :
প্রকাশিত: সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:১৮ অপরাহ্ণ
দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মহানায়ক বেগম জিয়া
  • সংকটাপন্ন অবস্থায় সিসিইউতে, কমে গেছে কিডনির কার্যকারিতা, রোগমুক্তি কামনায় দেশবাসী

 

বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন লড়াকু, আপোসহীন নেত্রী হিসেবে পরিচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। গত রোববার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি এখন হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছে।

গৃহবধূ থেকে দেশের শীর্ষ নেতৃত্বে তার জীবনের এই রূপান্তর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অনন্য উদাহরণ। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ও মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী । দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহন করে কখনো হারেননি। ছিলেন তিন বাবেরর প্রধানমন্ত্রী ও দুই বারের বিরোধী দলীয় নেত্রী। ২০০৪ সালে ফোর্বস সাময়িকীর বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাবান নারী নেতৃত্বের তালিকায় বেগম খালেদা জিয়া ১৪তম হন।

১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের সময় খালেদা জিয়া ছিলেন নিতান্তই একজন গৃহবধূ। দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে তখন তিনি অবস্থান করছিলেন ঢাকা সেনানিবাসে। এ হত্যাকাণ্ডে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বিএনপি। দলের হাল কে ধরবে, তা নিয়ে দোলাচল, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। পার্টির ভেতরে তখন দেখা দেয় গভীর কোন্দল।

রাষ্ট্রপতি জিয়ার জীবদ্দশায় খালেদা জিয়াকে খুব একটা প্রকাশ্যে দেখা যেত না। তাই তার রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত অনেককে চমকে দিয়েছিল।

১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি তিনি বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করেন। যেটা ছিল তার রাজনৈতিক জীবনে প্রথম আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ। একই বছরের ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে তিনি প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে বক্তব্য দেন।

১৯৮৩ সালের মার্চে তিনি দলের সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর এপ্রিলের শুরুতে বিএনপির এক বর্ধিত সভায় গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন এবং সামরিক শাসক এরশাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব দিতে শুরু করেন।

১৯৮৪ সালের ১০ মে খালেদা জিয়া বিএনপির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সে সময় তিনি দলের নেতৃত্ব না নিলে বিএনপি গভীর সংকটে পড়ে যেত।

এরশাদবিরোধী আন্দোলন জোরদার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের রাজনীতিতে ব্যাপক পরিচিতি এবং গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয় তার পক্ষে। আন্দোলনের সময় তাকে একাধিকবার আটক করা হলেও তিনি রাজপথ ছাড়েননি।

এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। রাজনীতিতে আসার মাত্র এক দশকের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী হওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল ঘটনা। ২০০১ সালে তৃতীয়বারের মতো দেশ পরিচালনার সুযোগ পান তিনি।

তৃতীয় মেয়াদ শেষে আসে আলোচিত-সমালোচিত ওয়ান-ইলেভেন সরকার। সেই সময় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুটি দুর্নীতি মামলায় তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দুই বছরের বেশি সময় তিনি কারাগারে ছিলেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে তার সাজা শর্তসাপেক্ষে স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়, পরে প্রতি ছয় মাসে সেই মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরের দিন, ৬ আগস্ট খালেদা জিয়া নির্বাহী আদেশে মুক্ত হন। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি রাতে তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান বড় ছেলে তারেক রহমানের কাছে। প্রায় চার মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি দেশে ফেরত আসেন।

সম্প্রতি ফুসফুসে সংক্রমণজনিত শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া এবং তার সঙ্গে দীর্ঘদিনের কিডনি, লিভার, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসের জটিলতায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। একটি রোগের চিকিৎসা দিতে গেলে অন্যটির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ায় তার শারীরিক অবস্থা আরও জটিল হয়ে ওঠে।

এই পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্ত দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, আমেরিকার জনস হপকিনস হাসপাতালের চিকিৎসক এবং লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য আবার বিদেশে নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে তাঁর শারীরিক অবস্থা বিমান যাত্রার ধকল সামলানোর জন্য কতটা সক্ষম, তার ওপর নির্ভর করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

চিকিৎসকেরা আগামী এক-দুই দিন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা দেখবেন। সম্ভব হলে তাঁকে আবার লন্ডন ক্লিনিকে নেওয়া হবে, যেখানে তাঁর চিকিৎসা হয়েছিল। সেটি সম্ভব না হলে কম দূরত্বের সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করা হতে পারে। তবে এই মুহূর্তে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার মতো তাঁর শারীরিক অবস্থা নেই।

তার সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। আপোসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দেশবাসী।