খুঁজুন
রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

হিজলায় গণছুটিতে পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা : বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের আশঙ্কা  

স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশিত: সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৭:২৪ অপরাহ্ণ
হিজলায় গণছুটিতে পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা : বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের আশঙ্কা  

চার দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বরিশালের হিজলা উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সাব জোনাল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য গণছুটি পালন করছেন।

সোমবার (৮ সেপ্টম্বর) দুপুরে জানা গেছে, গণছুটির কারণে গত দুইদিন থেকে চরম দুর্ভোগে পরেছেন বিদ্যুত গ্রাহকরা। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে পল্লী বিদ্যুৎতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য গণছুটিতে রয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা যাবেনা এবং বরখাস্তকৃতদের পুর্নবহাল করতে হবে। অব্যবস্থাপনার অবসান। বদলীর নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। জরুরীভিত্তিত্বে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সূত্রমতে, হিজলা সাব জোনাল অফিসের আওতাধীন কাউরিয়া, মেমানিয়া ও হিজলা সদর। এ অফিসে মোট ৫৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এদের মধ্যে ১৮ জন হলো লাইনম্যান। ১০ জন লাইনম্যান জিএম বরাবর ছুটির ফরম পূরণ করে গণছুটিতে চলে গেছেন। দুইজন প্রশিক্ষণে ও দুইজন কর্মবিরতির আগ থেকেই ছুটিতে রয়েছেন। বাকি চারজনের দুইজনকে অফিসে দেখা গেলেও তারা কাজে অংশগ্রহণ করেননি।

সোমবার দুপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সাব জোনাল অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, এজিএমসহ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মবিরতির মতোই অলস সময় পার করছেন। সেবা নিতে আসা গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কারো মিটার নষ্ট, কারো বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত জটিলতা, আবার অনেকের নতুন সংযোগের কাজ ঝুলে রয়েছে। তারা কোন সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

কাউরিয়া অভিযোগ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, লাইন টেকনিশিয়ান মো. আবুল বাশার একা বসে আছেন। তিনি বলেন, এখানে ছয়জনের মধ্যে পাঁচ জনই ছুটিতে থাকায় তিনি একা সবকিছু সামাল দিতে পারছেন না। তিনি আরও বলেন, একবার বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে সংযোগ দেয়া অসম্ভব হয়ে যাবে।

গ্রাহক জয়নাল আবেদীন বলেন, তার বাড়িতে গত রাত থেকে বিদ্যুৎ না থাকায় বয়স্ক এবং শিশুরা প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পরেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এক কর্মচারী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা চলছে। কিন্তু আমাদের দাবি মানাতো দুরের কথা, উল্টো অন্যায়ভাবে বরখাস্ত, বদলী ও চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। এতে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তিনি আরও জানিয়েছেন, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত গণছুটি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

হিজলা পল্লী বিদ্যুৎ সাব জোনাল অফিসের প্রকৌশলী ফাইজুল ইসলাম বলেন, আমাদের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে লাইনম্যান তারাই অনুপস্থিত। আমরা কোন গ্রাহকদেরকে সেবা দিতে না পাড়ায় কিছু গ্রাহক আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন।

হিজলা সাব জোনাল অফিসের এজিএম শ্যামল মন্ডল জানান, ১০ জন লাইনম্যান জিএম বরাবর ছুটির ফরম পূরণ করে গণছুটিতে রয়েছেন। এছাড়াও অনেকে কাজে যোগদান করছেন না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।

বরিশালে হাফভাড়া নিয়ে শ্রমিক-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে আহত ৪০

এইচ আর হীরা
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:০০ অপরাহ্ণ
বরিশালে হাফভাড়া নিয়ে শ্রমিক-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে আহত ৪০

 

  • অর্ধশতাধিক বাসে ভাঙচুর

  • আগুন–অবরোধে অচল মহাসড়ক

বরিশালে গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফভাড়া প্রাপ্যতা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে বাস শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অর্ধশতাধিক বাসে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় মহাসড়ক অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভও করেন তারা।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এ সংঘর্ষ শুরু হয়, যা রাত ৮টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উল ইসলাম।

শ্রমিক নেতা আরজু মৃধা জানান, কলেজ বন্ধের দিন হাফভাড়া নিয়ে এক বাস শ্রমিকের সঙ্গে শিক্ষার্থীর বিতণ্ডা বাঁধে। পরে ব্রজমোহন কলেজের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে এসে দাঁড়িয়ে থাকা অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করে এবং শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। এতে বহু শ্রমিক আহত হন বলে দাবি করেন তিনি।

অন্যদিকে বিএম কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, মুলাদী থেকে বরিশাল আসার পথে এক শিক্ষার্থী হাফভাড়া চাইলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বাস শ্রমিকরা। এর প্রতিবাদে তারা বাসস্ট্যান্ডে সমবেত হয়ে শ্রমিকদের বিচারের দাবি জানান। তাদের অভিযোগ, দাবি জানাতে গেলে উল্টো শ্রমিকরাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।

ওসি মামুন উল ইসলাম বলেন, “শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উভয় পক্ষকে শান্ত করতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা কাজ করছি।”

রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আগুনে পুড়ে যাওয়া বাস ও সড়ক অবরোধের কারণে নথুল্লাবাদ এবং সংলগ্ন সড়কগুলোতে যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসও কাজ করছে।

ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নিয়েছে।

বাজার জাটকা ইলিশে সয়লাব , প্রশাসনের নেই তদারকি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:১৭ অপরাহ্ণ
বাজার জাটকা ইলিশে সয়লাব ,  প্রশাসনের  নেই তদারকি

বরিশালের বাকেরগঞ্জে মাছের বাজারগুলো এখন জাটকা ইলিশে সয়লাব। প্রশাসনের অবহেলায় মাছের বাজারে মিলছে এসব জাটকা ইলিশ। ১০ ইঞ্চি বা ২৫ সেন্টিমিটারের কম আকারের ইলিশকে ‘জাটকা’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ আকারের ইলিশ আহরণ, পরিবহন ও বিক্রি পুরোপুরি নিষিদ্ধ। এ নিষেধাজ্ঞা ভাঙলে জেল-জরিমানার তোয়াক্কা করছেন না উপজেলার জেলে ও বিক্রেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রতিটি মাছবাজারেই প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ছয় থেকে সাত ইঞ্চি আকারের জাটকা ইলিশ। উপজেলার এমএ বাড়ি বাজারে নিলামের মাধ্যমে জাটকা বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, জাটকা বিক্রি বন্ধে বাজারগুলোতে মৎস্য অফিস ও প্রশাসনের তদারকি নেই। তাই জেলেরা শিকার করে প্রকাশেই এসব জাটকা হাটবাজারে এনে বিক্রি করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত জাটকা বিক্রি হচ্ছে উপজেলার নাকের ডগায় এমএ বাড়ি মাছবাজারে। নদী থেকে মাছ এনে ডালায় ঢেলে ডাক তোলেন আড়তদাররা। ডাকের মাধ্যমে মাছ কিনে উপজেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে বসে বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

এ ছাড়া উপজেলার বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন পৌর বাজারে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত দশটা পর্যন্ত বাজারে জাটকা মাছ বিক্রি করতেও দেখা গেছে খুচরা ব্যবসায়ীদের। তবে এ সময় জাটকা বিক্রি বন্ধে প্রশাসনকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

স্থানীয় জেলে নির্মল বলেন, জেলেরা কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা মাছ ধরেন। তারা সেই মাছ বাজারে বিক্রি করেন।

বাকেরগঞ্জ পৌর বাজারের মাছ বিক্রেতা আব্বাস সরদার বলেন, অন্য মাছ ব্যবসায়ীরাও জাটকা বিক্রি করেছেন। প্রশাসন যদি জাটকা শিকার বন্ধ করে দিতে পারে, তাহলে বিক্রিও বন্ধ হবে।

জাহিদ মোল্লা নামে একজন জানান, উপজেলার তুলাতলি, কারখানা, পান্ডব, রাঙামাটি, বিষখালি নদীতে জাটকা শিকার করে স্থানীয় আড়ত ও হাট-বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি বছর প্রশাসন কিছু কিছু অভিযান চালালেও এবার এখনো কোনো অভিযান চোখে পড়েনি। দ্রুত জাটকা নিধন বন্ধের দাবি জানান তিনি।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। যখন তখন অভিযান করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি খোঁজ নিয়েছি, নিয়মিত নদীতে জাটকা নিধন ও বাজারে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে। দ্রুতই আমরা হাটবাজারে অভিযান পরিচালনা করব।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ বলেন, বাজারগুলোতে প্রকাশ্যে জাটকা বিক্রি হচ্ছে বিষয়টি জেনেছি। খুব দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে এবং তা বহাল থাকবে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। এই আট মাস জাটকা আহরণ, ক্রয়, বিক্রয়, মজুত সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। তবে বড় আকারের ইলিশ ধরতে কোনো বাধা নেই।

অপসোনিন শ্রমিকদের বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:০৮ অপরাহ্ণ
অপসোনিন শ্রমিকদের বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ

চাকরি পুনর্বহালসহ দুই দফা দাবিতে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন অপসো স্যালাইন ফার্মার ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা। শনিবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১২টা থেকে বরিশাল নগরীর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে শত শত যাত্রীকে।

শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা ও এস এল ফার্মা লিমিটেডে পরিশ্রম করে আসছেন। প্রথমে দৈনিক বেসিক রুলে প্রতিদিন ২২০ টাকার হাজিরায় কাজ করার পর প্রতিষ্ঠানটি তাদের মাস্টাররোলে অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু মাত্র এক বছরের মাথায় হঠাৎ করেই ৫৭০ জন শ্রমিককে বিনা নোটিশে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দেয়া হয়। এতে শ্রমিকদের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

শ্রমিকরা বলেন, আমাদের ছাঁটাই করে কোম্পানি নতুনভাবে ১২০০ শ্রমিক নিয়োগের উদ্যোগ নিচ্ছে। এটা স্পষ্টভাবে আমাদের সঙ্গে অন্যায় ও ষড়যন্ত্র।

বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে অপসো স্যালাইন ফার্মার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এ কারণে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।