খুঁজুন
রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

সংসদ নির্বাচন: আচরণবিধিতে ব্যাপক পরিবর্তন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৭:২৩ অপরাহ্ণ
সংসদ নির্বাচন: আচরণবিধিতে ব্যাপক পরিবর্তন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের প্রচারে পোস্টার ব্যবহার করা যাবে না। এ ছাড়া রেক্সিন, পলিথিন, প্লাস্টিক, পিভিসি বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর অন্য কোনো উপাদানে তৈরি লিফলেট, হ্যান্ডবিল, ফেস্টুন বা ব্যানার করা যাবে না। একই সঙ্গে প্রচারে বিলবোর্ডের ব্যবহার সীমিত থাকবে। একজন প্রার্থী এক সংসদীয় আসনে ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন না। রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় এসব কথা বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) এই বিধিমালা চূড়ান্ত করেছে।

গত মঙ্গলবার গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী প্রস্তাবের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০২৫ আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে আরপিওর মতো আচরণ বিধিমালা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করার প্রয়োজন নেই। আইন অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের ভেটিং হয়ে গেলে ইসি গেজেট আকারে জারি করতে পারবে।

ভোটের প্রচারে পোস্টারের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে প্রণীত রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার খসড়ায় দল ও সংশ্লিষ্টদের মতামত চেয়েছিল ইসি। অন্তত সাদাকালো পোস্টারে প্রচারের সুযোগ রাখার সুপারিশ করেছিল অনেকগুলো দল। সেই সুপারিশও আমলে নেয়নি ইসি। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব প্রচারণা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রেক্সিন, পলিথিন, প্লাস্টিক, পিভিসি বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, ভোটের প্রচারে পোস্টার ব্যবহার বন্ধের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ছিল। এতে ইসি একমত হয়েছে। এ ছাড়া তিনি বলেন, ‘প্রচারে বিলবোর্ডের ব্যবহার অতীতে ছিল না। এবার যুক্ত করা হয়েছে। তবে এটার ব্যবহার সীমিত করে দিতে চেয়েছি আমরা। এদিকে ব্যানার ও ফেস্টুনের ব্যবহার নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।’

নতুন আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী বিলবোর্ডে প্রচারণার অংশের আয়তন অনধিক ১৬/৯ ফুট হবে। এ ছাড়া বিলবোর্ড স্থাপনের মাধ্যমে জনসাধারণ বা যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা যাবে না এবং পরিবেশ বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে এমনভাবে বিলবোর্ড স্থাপন করা যাবে না।

এমন প্রস্তাব করার পেছনে ইসির যুক্তি– বিলবোর্ড তৈরিতে বেশি টাকা ব্যয় হয়। একজন প্রার্থী অসংখ্য বিলবোর্ড ব্যবহার করলে তার নির্বাচনী ব্যয়সীমা অতিক্রম করতে পারে। এ ছাড়া বিলবোর্ডের কারণে প্রার্থীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়াসহ পরিবেশ নষ্ট হতে পারে।

নির্বাচনী প্রচারে একজন প্রার্থী ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন না– এমন বিষয় আচরণ বিধিমালায় যুক্ত করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘এমন একটি বিষয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় আছে।’

এদিকে আরপিওর সংশোধনী প্রস্তাবে বিলবোর্ড বিষয়ে ইসি বলেছে, শুধু ডিজিটাল বিলবোর্ডে আলোর ব্যবহার করা যাবে। বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যাবে। তবে আলোকসজ্জার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। গত ২৯ জুন রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার খসড়া প্রণয়ন করে নির্বাচন কমিশন। পরে এ বিষয়ে নাগরিকদের মতামত জানাতে ১০ জুলাই পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় তারা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিএনপিসহ ৭টি দল এবং বিভিন্ন ব্যক্তি মতামত দেন। ১১ আগস্ট ইসির সভায় আচরণ বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকেও আমলে নেওয়া হয়।

ইসি বলছে, এই আচরণবিধি মেনে চলার ব্যাপারে আগে প্রার্থীদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নেওয়া হতো। এবার দলের কাছ থেকেও অঙ্গীকারনামা নেবে ইসি। আচরণবিধি লঙ্ঘন করে গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে আরপিওতে প্রার্থিতা বাতিলের বিধান রয়েছে। আগে আচরণবিধিতে আরপিওর অনুচ্ছেদটি ছিল না। এটা এবার যুক্ত করা হয়েছে।

আরও যত বিধান:
আচরণ বিধিমালায় প্রচারণার সময় রাখা হয়েছে তিন সপ্তাহ। সব প্রার্থীর একমঞ্চে প্রচারণার বিষয়টি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট আসনের সব প্রার্থীকে নিয়ে একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে এক দিনে তাদের ইশতেহার বা ঘোষণাপত্রগুলো পাঠ করার ব্যবস্থা করবেন। গণমাধ্যমে নির্বাচনী সংলাপে অংশ নিতে পারবেন প্রার্থী ও তার প্রতিনিধিরা। তবে কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে কোনো বক্তব্য দেওয়া যাবে না।

এতে সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির (ভিভিআইপি) তালিকায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদেরও যোগ করা হয়েছে। ফলে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, উপমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, মেয়রসহ সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তির পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা বা সমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। ফলে তারা প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামতে পারবেন না। তাদের জন্য বিভিন্ন সরকারি সুবিধা, যেমন– সার্কিট হাউস, ডাকবাংলো ও রেস্ট হাউস ব্যবহারে কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রার্থীরা কোনো প্রতিষ্ঠান, সংগঠন বা সমিতি থেকে সংবর্ধনা নিতে পারবেন না।

প্রচার ও ভোট গ্রহণের সময় ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ জাতীয় যন্ত্র ব্যবহারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক বা সমপর্যায়ের ব্যক্তিরা নির্বাচনী প্রচারে হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবেন। তবে হেলিকপ্টার থেকে কোনো লিফলেট, ব্যানার বা প্রচারসামগ্রী বিতরণ বা ঝোলানো যাবে না। এর আগে কেবল দলীয় প্রধান বা সমপর্যায়ের নেতাদেরই হেলিকপ্টার ব্যবহারের অনুমতি ছিল।

কোনো প্রার্থী বা তাঁর সমর্থকরা কোনো ভোটকেন্দ্রের ১৮০ মিটারের মধ্যে ভোটার স্লিপ বিতরণ করতে পারবেন না। ভোটার স্লিপের আয়তন ১২ সেন্টিমিটার গুণন ৮ সেন্টিমিটারের বেশি হতে পারবে না। টিশার্ট, জ্যাকেট ইত্যাদির ব্যাপারে অতীতে বিধিনিষেধ ছিল, এবার একটু শিথিল মনোভাব দেখানো হয়েছে। মাইকে প্রচারের সময় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলে রাখতে হবে। প্রতিদিন বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইক ব্যবহার করার অনুমতি থাকবে।

নির্বাচনী প্রচারসহ যে কোনো বিষয়ে সামাজিক মাধ্যম ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) ব্যবহার করে কোনো ধরনের কনটেন্ট তৈরি ও প্রচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশেষ করে প্রতিপক্ষ, নারী, সংখ্যালঘু বা অন্য কোনো গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে ঘৃণ্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ বা উস্কানিমূলক ভাষা ব্যবহার করা যাবে না। এগুলো করা হলে কেবল প্রার্থী ও রাজনৈতিক দল নয়, গণমাধ্যমও শাস্তির মুখে পড়বে। প্রার্থী বা তার এজেন্ট বা দলের সামাজিক মাধ্যমের নাম, অ্যাকাউন্ট আইডি, ই-মেইল আইডি এবং অন্যান্য পরিচয়-সংক্রান্ত তথ্য প্রচার শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হবে। এ ছাড়া সামাজিক মাধ্যমে প্রচারের ব্যাপারে বিদেশি বিনিয়োগ আনা যাবে না।

প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে সভাপতি বা সদস্য পদে থাকলে পদত্যাগ করতে হবে। আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘনের ঘটনায় প্রার্থিতা বাতিলের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। জরিমানার পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দেড় লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেসঙ্গে আগের বিধান অনুযায়ী ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া নারীদের লক্ষ্য করে সাইবার বুলিং রোধ করা এবং বিদেশে কোনো প্রার্থীর পক্ষে সশরীরে প্রচারণা না চালানোর বিধানও করা হয়েছে।

 

বরিশালে হাফভাড়া নিয়ে শ্রমিক-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে আহত ৪০

এইচ আর হীরা
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:০০ অপরাহ্ণ
বরিশালে হাফভাড়া নিয়ে শ্রমিক-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে আহত ৪০

 

  • অর্ধশতাধিক বাসে ভাঙচুর

  • আগুন–অবরোধে অচল মহাসড়ক

বরিশালে গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফভাড়া প্রাপ্যতা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে বাস শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অর্ধশতাধিক বাসে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় মহাসড়ক অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভও করেন তারা।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এ সংঘর্ষ শুরু হয়, যা রাত ৮টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উল ইসলাম।

শ্রমিক নেতা আরজু মৃধা জানান, কলেজ বন্ধের দিন হাফভাড়া নিয়ে এক বাস শ্রমিকের সঙ্গে শিক্ষার্থীর বিতণ্ডা বাঁধে। পরে ব্রজমোহন কলেজের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে এসে দাঁড়িয়ে থাকা অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করে এবং শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। এতে বহু শ্রমিক আহত হন বলে দাবি করেন তিনি।

অন্যদিকে বিএম কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, মুলাদী থেকে বরিশাল আসার পথে এক শিক্ষার্থী হাফভাড়া চাইলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বাস শ্রমিকরা। এর প্রতিবাদে তারা বাসস্ট্যান্ডে সমবেত হয়ে শ্রমিকদের বিচারের দাবি জানান। তাদের অভিযোগ, দাবি জানাতে গেলে উল্টো শ্রমিকরাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।

ওসি মামুন উল ইসলাম বলেন, “শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উভয় পক্ষকে শান্ত করতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা কাজ করছি।”

রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আগুনে পুড়ে যাওয়া বাস ও সড়ক অবরোধের কারণে নথুল্লাবাদ এবং সংলগ্ন সড়কগুলোতে যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসও কাজ করছে।

ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নিয়েছে।

বাজার জাটকা ইলিশে সয়লাব , প্রশাসনের নেই তদারকি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:১৭ অপরাহ্ণ
বাজার জাটকা ইলিশে সয়লাব ,  প্রশাসনের  নেই তদারকি

বরিশালের বাকেরগঞ্জে মাছের বাজারগুলো এখন জাটকা ইলিশে সয়লাব। প্রশাসনের অবহেলায় মাছের বাজারে মিলছে এসব জাটকা ইলিশ। ১০ ইঞ্চি বা ২৫ সেন্টিমিটারের কম আকারের ইলিশকে ‘জাটকা’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ আকারের ইলিশ আহরণ, পরিবহন ও বিক্রি পুরোপুরি নিষিদ্ধ। এ নিষেধাজ্ঞা ভাঙলে জেল-জরিমানার তোয়াক্কা করছেন না উপজেলার জেলে ও বিক্রেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রতিটি মাছবাজারেই প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ছয় থেকে সাত ইঞ্চি আকারের জাটকা ইলিশ। উপজেলার এমএ বাড়ি বাজারে নিলামের মাধ্যমে জাটকা বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, জাটকা বিক্রি বন্ধে বাজারগুলোতে মৎস্য অফিস ও প্রশাসনের তদারকি নেই। তাই জেলেরা শিকার করে প্রকাশেই এসব জাটকা হাটবাজারে এনে বিক্রি করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত জাটকা বিক্রি হচ্ছে উপজেলার নাকের ডগায় এমএ বাড়ি মাছবাজারে। নদী থেকে মাছ এনে ডালায় ঢেলে ডাক তোলেন আড়তদাররা। ডাকের মাধ্যমে মাছ কিনে উপজেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে বসে বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

এ ছাড়া উপজেলার বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন পৌর বাজারে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত দশটা পর্যন্ত বাজারে জাটকা মাছ বিক্রি করতেও দেখা গেছে খুচরা ব্যবসায়ীদের। তবে এ সময় জাটকা বিক্রি বন্ধে প্রশাসনকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

স্থানীয় জেলে নির্মল বলেন, জেলেরা কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা মাছ ধরেন। তারা সেই মাছ বাজারে বিক্রি করেন।

বাকেরগঞ্জ পৌর বাজারের মাছ বিক্রেতা আব্বাস সরদার বলেন, অন্য মাছ ব্যবসায়ীরাও জাটকা বিক্রি করেছেন। প্রশাসন যদি জাটকা শিকার বন্ধ করে দিতে পারে, তাহলে বিক্রিও বন্ধ হবে।

জাহিদ মোল্লা নামে একজন জানান, উপজেলার তুলাতলি, কারখানা, পান্ডব, রাঙামাটি, বিষখালি নদীতে জাটকা শিকার করে স্থানীয় আড়ত ও হাট-বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি বছর প্রশাসন কিছু কিছু অভিযান চালালেও এবার এখনো কোনো অভিযান চোখে পড়েনি। দ্রুত জাটকা নিধন বন্ধের দাবি জানান তিনি।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। যখন তখন অভিযান করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি খোঁজ নিয়েছি, নিয়মিত নদীতে জাটকা নিধন ও বাজারে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে। দ্রুতই আমরা হাটবাজারে অভিযান পরিচালনা করব।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ বলেন, বাজারগুলোতে প্রকাশ্যে জাটকা বিক্রি হচ্ছে বিষয়টি জেনেছি। খুব দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে এবং তা বহাল থাকবে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। এই আট মাস জাটকা আহরণ, ক্রয়, বিক্রয়, মজুত সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। তবে বড় আকারের ইলিশ ধরতে কোনো বাধা নেই।

অপসোনিন শ্রমিকদের বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:০৮ অপরাহ্ণ
অপসোনিন শ্রমিকদের বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ

চাকরি পুনর্বহালসহ দুই দফা দাবিতে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন অপসো স্যালাইন ফার্মার ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা। শনিবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১২টা থেকে বরিশাল নগরীর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে শত শত যাত্রীকে।

শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা ও এস এল ফার্মা লিমিটেডে পরিশ্রম করে আসছেন। প্রথমে দৈনিক বেসিক রুলে প্রতিদিন ২২০ টাকার হাজিরায় কাজ করার পর প্রতিষ্ঠানটি তাদের মাস্টাররোলে অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু মাত্র এক বছরের মাথায় হঠাৎ করেই ৫৭০ জন শ্রমিককে বিনা নোটিশে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দেয়া হয়। এতে শ্রমিকদের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

শ্রমিকরা বলেন, আমাদের ছাঁটাই করে কোম্পানি নতুনভাবে ১২০০ শ্রমিক নিয়োগের উদ্যোগ নিচ্ছে। এটা স্পষ্টভাবে আমাদের সঙ্গে অন্যায় ও ষড়যন্ত্র।

বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে অপসো স্যালাইন ফার্মার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এ কারণে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।