খুঁজুন
শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ২৩ কার্তিক, ১৪৩২

বোমা বানানোর সময় বিস্ফোরনে ২ জন নিহত: অবশেষে মামলা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫, ৯:০০ অপরাহ্ণ
বোমা বানানোর সময় বিস্ফোরনে ২ জন নিহত: অবশেষে মামলা

নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্র দখলের জন্য ভাড়াটিয়া বোমা তৈরির কারিগরদের নিয়ে নির্জন এলাকায় বোমা বানানোর সময় বিস্ফোরনে দুইজন নিহত হয়েছে। অবশেষে বিষয়টিকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবি করে নিহত একজনের পরিবারের পক্ষে মোকাম বরিশাল বিজ্ঞ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আদালতের বিচারক মামলাটি এজাহারভূক্ত করার জন্য গৌরনদী মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় সাতজনের নামোল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশে থানায় মামলাটি এজাহারভূক্ত করার পর ইতোমধ্যে তদন্তের কাজ শুরু করা হয়েছে।

বোমা বিস্ফোরনের পর গুরুত্বর আহত হয়ে টানা নয়দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা মুলাদী উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের পূর্ব তয়কা গ্রামের কামাল বেপারীর স্বজন দুলাল বালী বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, মামলার প্রধান আসামি কৌশলে তার ফুফাতো ভাই কামাল বেপারীকে ঘটনাস্থলে এনে বোমা বিস্ফোরন ঘটিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তিনি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেছেন। নিহত কামাল বেপারী পূর্ব তয়কা গ্রামের মৃত সেলিম বেপারীর ছেলে।

মামলার নামোল্লেখ করা আসামিরা হলো-মুলাদী উপজেলার চিঠিরচর গ্রামের মালেক শিকদারের ছেলে আব্বাস শিকদার, বিমানবন্দর থানার করমজা গ্রামের মৃত লতিফ হাওলাদারের ছেলে নুরুল ইসলাম, মুলাদীর সাহেবেরচর গ্রামের মৃত মালেক বেপারীর ছেলে আবু হানিফ, চিঠিরচর গ্রামের মৃত জোনাবালী শিকদারের ছেলে শাহিন শিকদার ও আনু শিকদার, খুনেরচর গ্রামের মৃত রশিদ বালীর ছেলে ওহিদুল বালী, তয়কা গ্রামের আমিন আকনের ছেলে লেলিন আকন।

এজাহার সূত্রে এবং মামলার বাদি দুলাল বালী জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, মামলার প্রধান আসামি আব্বাস শিকদারের বড় ভাই আলতাফ হোসেন ছিলেন বরিশাল-১ (গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর গানম্যান। ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিতব্য গৌরনদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন হাসানাত আব্দুল্লাহর প্রধান সহযোগি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র (বর্তমানে জেলহাজতে থাকা) হারিছুর রহমান হারিছ। সূত্রমতে, ভোটের মাঠে নিজের পরাজয় নিশ্চিত জেনে হারিছুর রহমান ভোটের দিন বোমা হামলা চালিয়ে প্রতিটি ভোট কেন্দ্র দখল করে ভোট ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন।

সে অনুযায়ী তৎকালীন সংসদ সদস্যর গানমান্য আলতাফ হোসেনের মধ্যস্থতায় হারিছুর রহমান বিপুল পরিমান বোমা তৈরির জন্য আব্বাস শিকদারের মাধ্যমে ভাড়াটিয়া বোমা তৈরির কারিগরদের সাথে চুক্তি করে গৌরনদীতে নিয়ে আসে। আর তাদের দেখাশুনার দায়িত্ব দেওয়া হয় গৌরনদীর বার্থী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শিমুল সরদারকে। এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, হারিছুর রহমানের নির্বাচনে লোক লাগবে জানিয়ে আব্বাস শিকদার তাদের গ্রামসহ অন্যান্য এলাকার লোকজনদের ও মামলার আসামিদের ওই বছরের ২৩ জুন গৌরনদীতে নিয়ে আসে। তারা ইউপি সদস্য শিমুল সরদারের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে ওইদিন মধ্যরাতে ধানডোবা গ্রামের ওয়াদুদ সরদারের নির্জন (বিলের মধ্যে) পান বরজের মধ্যে গিয়ে প্রধান আসামির (আব্বাস) হুকুমে অন্যান্য আসামিরা একাধিক বোমার বিস্ফোরন ঘটায়।

এতে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত ও কামাল বেপারী আহত হন। পরবর্তীতে মৃত্যু নিশ্চিতের জন্য আব্বাস শিকদারের নির্দেশে কামাল বেপারীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়।

এরপর আব্বাসসহ কয়েকজনে ঘটাস্থলেই নিহত অজ্ঞাত মৃতের লাশ নিয়ে গুমের উদ্দেশ্যে দ্রুত স্থান ত্যাগ করার পর গুরুত্বর আহত কামাল বেপারীকে এজাহারভূক্ত দুইজন আসামি অতিগোপনে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এনে জখমের কারণ লুকিয়ে ভর্তি করে সটকে পরেন।

৩৭ জন বন্দির সাজা মওকুফ করে মুক্তি দিচ্ছে সরকার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:০৫ অপরাহ্ণ
৩৭ জন বন্দির সাজা মওকুফ করে মুক্তি দিচ্ছে সরকার

যাবজ্জীবন বা ৩০ বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে রেয়াতসহ ২০ বছর বা তার বেশি সাজা ভোগ করেছেন, এমন ৩৭ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার এক আদেশ (প্রজ্ঞাপন নং-১৪৩) জারি করা হয়েছে এবং আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে তা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে কারা অধিদফতর।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি বন্দিদের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। জেলা কারাগারগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে এ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে বলে কারা অধিদফতর নিশ্চিত করেছে।

কারা অধিদফতর জানায়, কারাবিধির ৫৬৯ ধারা অনুযায়ী এই ৩৭ জন বন্দির অবশিষ্ট সাজা মওকুফ করে মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা সবাই রেয়াতসহ ২০ বছর বা তার বেশি সময় সাজা ভোগ করেছেন।

এই বিষয়ে কারা অধিদফতরের সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (উন্নয়ন) মো. জান্নাত-উল ফরহাদ বলেন, যাদের সাজা ছিল ৩০ বছর বা যাবজ্জীবন, তাদের মধ্যে যেসব বন্দি রেয়াতসহ ২০ বছর অতিক্রম করেছে, তাদের মামলা বিচারিকভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে। বয়স, আচরণ ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে সরকার তাদের অবশিষ্ট সাজা মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

তিনি আরও জানান, ‘এই আদেশ অনুযায়ী সর্বশেষ সিদ্ধান্তে ৩৭ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। কারও অবশিষ্ট সাজা ছিল ১০ বছর, কারও ৭ বছর বা ৬ বছর। সবগুলোই মওকুফ করাতে এবার তারা মুক্তি পাবেন।’

জান্নাত-উল ফরহাদ বলেন, এদের মধ্যে কোনো নারী বন্দি নেই, যদিও প্রস্তাবে নারী-পুরুষ উভয়কেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তাদের অধিকাংশই খুন (মার্ডার) মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত এবং তারা দেশের বিভিন্ন কারাগারে সাজা ভোগ করছিলেন।

বাড়ল ২০২৬ সালের সরকারি ছুটি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ৬:৩৪ অপরাহ্ণ
বাড়ল ২০২৬ সালের সরকারি ছুটি

২০২৬ সালে সরকারি ছুটি বেড়েছে। আগামী বছরের সরকারি ছুটির তালিকার অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। তবে এবার ছুটি কমেছে। মোট ছুটি ২৮টি। এর মধ্যে ৯ দিন শুক্র ও শনিবার হওয়ায় মূল ছুটি হবে ১৯ দিন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

প্রেসসচিব জানান, বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদ ২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকার অনুমোদন দিয়েছে। বছর নির্বাহী আদেশে এবং সাধারণ ছুটি মোট ২৮টি ছিল।

গত বছর ১৭ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০২৫ সালের ছুটির তালিকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

সেই তালিকা অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ছুটি ছিল মোট ২৬ দিন। এর মধ্যে সাধারণ ছুটি ১২ দিন ও নির্বাহী আদেশের ছুটি ১৪ দিন। তবে সাধারণ ছুটির মধ্যে পাঁচ দিন এবং নির্বাহী আদেশের ছুটির মধ্যে চার দিনই সাপ্তাহিক ছুটি ছিল।

২০২৬ সালের সরকারি ছুটি হবে ২৮ দিন।

এর মধ্যে ছুটির সাপ্তাহিক ছুটি (শুক্র-শনিবার) পড়েছে ৯ দিন। সুতরাং মূল ছুটি হবে ১৯ দিন।

৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই একাট্টা বরিশাল বিএনপি, সরোয়ারের পক্ষে মাঠে নেতাকর্মীরা

সৈয়দ বাবু :
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ৬:২৩ অপরাহ্ণ
৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই একাট্টা বরিশাল বিএনপি, সরোয়ারের পক্ষে মাঠে নেতাকর্মীরা

নানান জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চমক দেখালেন মুজিবুর রহমান সরোয়ার। দলীয় মনোনয়ন পেয়েই ৪৮ঘন্টার মধ্যে বরিশাল বিএনপির দীর্ঘ্য বছরের অভ্যান্তরীন কোন্দল ভেঙ্গে সকল নেতাকে একই ফ্রেমে বন্দি করলেন তিনি। যার ফলে বরিশাল বিএনপিতে নতুন করে প্রাণ ফিরেছে। দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক দ্বন্দ্ব ও নেতৃত্বসংক্রান্ত কোন্দল কাটিয়ে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমান সরোয়ার। তার মনোনয়নের পর বরিশাল বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিভাজন অনেকটাই শিথিল হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, নেতৃত্ব বাছাইয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দক্ষিণাঞ্চলের রাজনীতির “বারোমিটার” খ্যাত বরিশাল মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে মুজিবুর রহমান সরোয়ার দীর্ঘদিন ধরেই প্রভাবশালী নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। ২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময়ে তিনি নগর উন্নয়নে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন, যার মধ্যে সড়ক উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার ও শহরের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ ছিল উল্লেখযোগ্য।

রাজনীতির মাঠে সরোয়ার সবসময়ই সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বরিশাল সদর আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। সেই সময়ে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন তিনি। দলের সংকটকালেও তিনি কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন, যা তার প্রতি দলের আস্থাকে আরও দৃঢ় করেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে মুজিবুর রহমান সরোয়ার বরিশালে নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিলেন। গ্রেফতার, মামলা ও রাজনৈতিক চাপের মধ্যেও তিনি কর্মীদের মাঠে রাখার রেখেছেন। তার এই ধারাবাহিক সক্রিয়তার কারণেই কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে তার নাম নিয়ে ঐকমত্য গড়ে ওঠে। বিদ্রোহের স্থলে ঐক্যের সুরে এক হয়েছেন বাকি সব মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। তৃণমূলের মতে ঐক্যের কঠিন পথটি পাড়ি দেয়ার মাঝি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিগত সবকটি নির্বাচনেই – বিএনপিকে প্রতিদ্বন্দ্বি দলের চেয়ে নিজের দলের বিদ্রোহকে মোকাবেলা করতে হয়েছে বেশিরভাগ সময়। কখনও নাসিম বিশ্বাসের সাথে সরোয়ার, কখনও সরোয়ারের সাথে আহসান হাবিব কামাল বা এবায়েদুল হক চান। আর এবার ছিল পরিস্থিতি আরও সংকটজনক। বিএনপিতে মনোনয়ন চেয়ে বসলেন ৭জন।

কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার, কেন্দ্রীয় সদস্য আবু নাসের মোঃ রহমতউল্লাহ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড, আবুল কালাম শাহীন, মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামন ফারুক, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার, যুগ্ম আহবায়ক আফরোজা খানম নাসরিণ, বিএনপি নতো আলী হায়দার বাবুল। প্রথমে লিফলেট বিতরণ দিয়ে শুরু এরপর নগরীতে পোষ্টার ছেড়ে এদের অনেকে নিজের প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। আর রহমতউল্লাহতো ৬ মাস আগ থেকেই সভা সমাবেশ আগের নির্বাচনে এক প্রার্থীর পিছনে অনেক নেতা ছিলেন, তারা কমিটি রেজুলেশন নিয়ে ঢাকায় কেন্দ্রে হাজির হতেন। নেতার পক্ষে মনোনয়ন দাবি করতেন। এবার কোন নেতা কারো পক্ষে সমর্থন দেননি। সবাই নিজের মনোনয়ন নিয়ে দৌড়ঝাপ করেছেন। কোন্দল থামাতে এবার কঠোর হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বরিশাল বিএনপির কোন্দল নিরসনে তিনি প্রথমে দায়িত্ব দেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেনকে। তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশিদের সাথে একাধিকবার বৈঠক করেন। এরপর তারেক রহমান নিজে উদ্যোগি হন। মনোনয়ন প্রত্যাসীদের কঠোর বার্তা দেন। সতর্ক করেন বিএনপি বিরোধী একাধিক শক্তির মাথাচাড়া দেয়ার বিষয়টি।

এরপরই আস্তে আস্তে কোন্দল স্তমিত হতে থাকে। প্রথমে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার ঘোষণা দেন- তিনি প্রার্থী নন। কেন্দ্র যাকে মনোণযন দেবে তার পক্ষেই কাজ করবেন। অন্য সবাই ঘোষণা না দিলেও নিশ্চুপ হয়ে যান। সোমবার রাতে যখন প্রত্যাশিতভাবেই চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয় তখর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ্যাড. আবুল কালাম শাহীন, কেন্দ্রীয় সদস্য আবু নাসের মোঃ রহমতউল্লাহ সরোয়ারকে অভিনন্দন জানিয়ে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে বিবৃতি দেন। মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকও তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে প্রেস রিলিজ দেন। জেলা ও মহানগর শ্রমিকদলও সরোয়ারের মনোনয়নকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। ফলে বরিশাল বিএনপিতে যে কোন্দলের আশংকা করা হচ্ছিল তা হয়নি।

বরিশাল বিএনপি এখন মজিবর রহমান সরোয়ারের সাথে রয়েছে বলে স্পষ্ট হয়েছে। তৃণমূল কর্মীরা রাত থেকেই নেমে পরেছেন সরোয়ার পক্ষে। বিএনপি তেদা মহানগরের সাবেক সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির বলেন, বরিশাল-৫ আসনটি এবার অনেক গুরুত্বপুর্ন। ইসলামী আন্দোলনের মূল ঘাটি এখানে। সেই সাথে জামায়াতে ইসলামীর শক্ত প্রার্থী রয়েছে। এর ঐক্য হলে এ আসটিতে জোড় লড়াই হবে। সেক্ষেত্রে এখানে নতুন প্রার্থী দিলে আসনটি হারাতে হতে পারত। সরোয়ারই এ আসনের এজন অভিজ্ঞ এবং সর্বজন সমাদৃত প্রার্থী বলে তিনি মনে করেন। বিএনপি নেতা আনেয়ারুল হক তারিন বলেন, দীর্ঘ চারবারের সংসদ সদস্য, মেয়র, জেলামন্ত্রী হিসবে সরোয়ারের নিজশ্ব একটা বড সমর্থক গোষ্টি আছে। এর সাথে যদি জেলা ও মহানগর বিএনপি নিঃস্বার্থভাবে সরোয়ারের পাশে থাকে তবে বিএনপির জয় এবারও নিশ্চিত। দলীয় নেতারা বলছেন, সরোয়ারের নেতৃত্বে এখন বরিশাল বিএনপি নতুন উদ্যমে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নির্বাচনী সভা, কর্মী বৈঠক ও যোগাযোগ জোরদারের কাজ শুরু হয়েছে। একজন তৃণমূল নেতা বলেন, “সরোয়ার ভাইয়ের নেতৃত্বে আমরা আবার সংগঠিত হচ্ছি। অনেকদিন পর বরিশালে বিএনপির মধ্যে ঐক্যের সুর বেজেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের রাজনীতিতে বরিশালের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভৌগোলিক অবস্থান ও ভোটার কাঠামোর কারণে বরিশালকে দক্ষিণাঞ্চলের রাজনীতির “বারোমিটার” বলা হয়। এখানকার ভোটের প্রবণতা প্রায়ই আশপাশের জেলা ও পুরো অঞ্চলের নির্বাচনী হাওয়াকে প্রভাবিত করে। ঐতিহাসিকভাবে বরিশাল বিএনপির একটি শক্ত ঘাঁটি ছিল। ফলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বরিশালের ফলাফলকে রাজনৈতিক দলগুলো কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, মুজিবুর রহমান সরোয়ার একজন অভিজ্ঞ ও গ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে বরিশাল বিএনপিকে পুনরায় মাঠে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবেন।

তবে স্থানীয় নেতৃত্বের অভ্যন্তরীণ বিরোধ সম্পূর্ণ মিটিয়ে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ রাখা এখন তার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।