খুঁজুন
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ২৬ কার্তিক, ১৪৩২

নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে, হঠাৎ আক্রমণ চলে আসতে পারে: প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ৯:২৪ অপরাহ্ণ
নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে, হঠাৎ আক্রমণ চলে আসতে পারে: প্রধান উপদেষ্টা

ছোটখাটো নয়, বড় শক্তি নিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন বানচালের জন্য ভেতর থেকে, বাইরে থেকে অনেক শক্তি কাজ করবে। ছোটখাটো নয়, বড় শক্তি নিয়ে বানচালের চেষ্টা করবে। হঠাৎ করে আক্রমণ চলে আসতে পারে। এই নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে। যত ঝড়ঝঞ্চাই আসুক না কেন, আমাদের সেটা অতিক্রম করতে হবে।’

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে যমুনায় প্রথম সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে সভার আলোচ্য বিষয়গুলো জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, এই আক্রমণ বলতে শুধু শারীরিক আক্রমণ নয়, বরং সাইবার অ্যাটাক বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিজ-ইনফরমেশন (অপতথ্য) ছড়ানোকেও বোঝানো হচ্ছে। যারা পতিত স্বৈরাচার এবং তার দোসর, তারা দেশে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, তা চাইবে না। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিব জানান, আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা বৈঠকে মূলত চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেগুলো হলো মাঠ প্রশাসন কর্মকর্তাদের পদায়ন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নির্বাচনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য মোকাবিলার উপায়।

নিজ জেলা বা শ্বশুরবাড়ির এলাকায় পদায়ন নয়

প্রেস সচিব বলেন, মাঠ প্রশাসনে, বিশেষ করে ডিসি, এডিসি, ইউএনওসহ বিচারিক দায়িত্বে এমন কাউকে পদায়ন করা হবে না; যিনি গত তিনটি নির্বাচনী কাজে যুক্ত ছিলেন। ন্যূনতম ভূমিকা থাকলেও তাঁকে এই নির্বাচনে দায়িত্বে রাখা হবে না।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনী প্রস্তুতি সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা। ২৯ অক্টোবর
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনী প্রস্তুতি সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা। ২৯ অক্টোবরছবি: পিআইডি

পদায়নের ক্ষেত্রে কর্মকর্তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, শারীরিক যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা, গণমাধ্যমে অনিয়মের প্রতিবেদন হয়েছে কি না, তা দেখা হবে বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, সবচেয়ে ফিট কর্মকর্তাকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পদায়ন করা হবে। তবে নিজ জেলা বা শ্বশুরবাড়ির এলাকায় কাউকে পদায়ন করা হবে না। তাঁদের কোনো আত্মীয়স্বজন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কি না, পদায়নের ক্ষেত্রে সে বিষয়েও লক্ষ রাখা হবে। আগামী ১ নভেম্বর এগুলো শুরু হবে।

শফিকুল আলম আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও সভায় জানিয়েছেন যে পুলিশের পদায়নের বিষয়েও একইভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৬৪ জেলার এসপিদের তালিকা করা হয়েছে।

৯০ হাজার সেনাসদস্য মাঠে থাকবেন

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, আলোচনায় সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে ৯০ হাজার সেনাসদস্য মাঠে থাকবেন এবং বাকি ২ হাজার নৌবাহিনীর সদস্য থাকবেন। প্রতিটি জেলায় এক কোম্পানি সেনা থাকবে। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে ও পরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

ভুয়া তথ্য ও অপতথ্য মোকাবিলায় দুটি কমিটি হবে

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্য ও ভুয়া তথ্যের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচনে ভুয়া তথ্য ও অপতথ্য মোকাবিলায় দুটি কমিটি গঠনের বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। দুটি কমিটিই উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত কাজ করবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ছড়িয়ে পড়া অপতথ্য বা ভুয়া তথ্যের ফ্যাক্ট যাচাই করে তা প্রকাশ করবে। এর জন্য কারিগরি সহায়তা দেওয়ার জন্য আইসিটি মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা হবে।

নির্বাচন কমিশন সংসদ টিভিকে নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করতে চাইছে

প্রেস সচিব আরও জানান, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ (ট্রেনিং) নিয়েও সভায় আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে আনসার সদস্যদের প্রশিক্ষণ আরও কার্যকর করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। বডি ওর্ন ক্যামেরা নিয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে কথা হয়েছে। প্রশিক্ষণসংক্রান্ত ভিডিও ও উপকরণগুলো যেন ১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট, টিভি বা বিটিভিতে আসে, সে বিষয়ে দ্রুত কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। সংসদ অধিবেশন না থাকায় এখন সংসদ টেলিভিশন ব্যবহৃত হচ্ছে না, তাই নির্বাচন কমিশন সংসদ টিভিকে ব্যবহার করে নির্বাচনসম্পর্কিত যাবতীয় প্রচার করতে চাইছে।

নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে বলেছে যে তারা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তারিখ জানাবে।

নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হবে, এত আতঙ্কিত হওয়ার কারণ আছে কি না জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, ‘আতঙ্কের কিছু নাই। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওয়ান অব দ্য বেস্ট ইলেকশন হবে।’

ওষুধে মরছে না মশা, অতিষ্ঠ নগরবাসী

রাসেল হোসেন ॥
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:৫৬ অপরাহ্ণ
ওষুধে মরছে না মশা, অতিষ্ঠ নগরবাসী

মশার ভনভন শব্দে অতিষ্ঠ বরিশাল নগরবাসী। পুরাতন ওষুধ দিয়ে মশা নিধন করছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি)। এতে মরছে না মশা। ফলে বরিশাল নগরীতে বেড়েই চলেছে মশার উপদ্রব। দিনে রাতে সমানে চলছে মশার অত্যাচার। নগরজীবনকে অতিষ্ট করে তুলেছে মশা। পাশাপাশি বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে বরিশাল সিটি করপোরেশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, পুরানো নিম্ন মানের ওষুধ দিয়ে বর্তমানে মশা মারা হচ্ছে। ফলে ঠিকমত মরছে না মশা। সর্বশেষ মশা নিধনের ওষুধ সরবরাহের দায়িত্বে ছিল নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড। বর্তমানে এই কোম্পানির সরবরাহকৃত ওষুধ সিটি করপোরেশনের কাছে নেই। ফলে এর আগের সরবরারকৃত কোম্পানি ঢাকার নাস কাডিল গ্রুপের তুলানামূলক নিন্মমানের পুরানো ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে নগরীর কাউনিয়া, নথুল্লাবাদ ও রূপাতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় মশার উৎপাত আগের থেকে বেড়ে গেছে। বাসিন্দারা বলছেন, সন্ধ্যার পর বাসায় বসা যায় না। মশার কামড়ে বাচ্চারা ঘুমাতে পারে না।

রূপাতলী এলাকার বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম বলেন, ফগিং মেশিনে ধোঁয়া ছিটায় ঠিকই, কিন্তু মশা তাতে মরে না। বরং ধোঁয়াটা এসে চোখে লাগে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একই ধরনের ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে মশার মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। তাই ওষুধ পরিবর্তন ও মশা নিয়ন্ত্রণ কৌশলে বৈচিত্র্য আনা দরকার।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন শাখার কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বলেন, নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের সরবরাহকৃত ওষুধ শেষ হয়ে যাওয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য পুরানো ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। নতুন ওষুধ আসলে সেটাই ব্যবহার করা হবে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল বারী বলেন, মশা নিধনের নতুন ওষুধের জন্য টেন্ডার কল করা হয়েছে। অতি দ্রুত নতুন মশা মারার ওষুধ পেয়ে যাব।

শেখ হাসিনার মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ, আত্মপক্ষ সমর্থন ১৭ নভেম্বর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:১৪ অপরাহ্ণ
শেখ হাসিনার মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ, আত্মপক্ষ সমর্থন ১৭ নভেম্বর

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে এই মামলায় আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৭ নভেম্বর তারিখ ধার্য করা হয়েছে। ঢাকার বিশেষ জজ-৫–এর বিচারক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুনের আদালত আজ সোমবার এই তারিখ ধার্য করেন।

আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাতকে আসামি খুরশীদ আলমের আইনজীবী শাহিন উর রহমান জেরা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তার জেরা শেষ হওয়ায় আইনানুযায়ী আদালত আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের তারিখ ধার্য করেন।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দিন মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, শেখ হাসিনা ছাড়াও তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ হয়েছে। আর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আংশিক জেরা হয়েছে।

এই তিন মামলায় গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি খুরশীদ আলমের পক্ষে আইনজীবী শাহিন উর রহমান জেরা করেন। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের পক্ষে জেরার সুযোগ নেই। ১৭ নভেম্বর জয়ের মামলায় বাদীর সাক্ষ্য ও জেরার দিন, আর পুতুলের মামলার তদন্ত কর্মকর্তার জেরার তারিখ ধার্য করেন আদালত।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী আরিফুল ইসলাম জানান, জয়ের মামলায় ২৮ ও পুতুলের মামলায় ২২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। সেদিন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন জানিয়েছিলেন, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর সড়কের আশপাশের এলাকায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানা ও তাঁর ছেলে-মেয়ের নামে ১০ কাঠা করে ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে আলাদা ছয়টি মামলা করে দুদক। এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অন্য মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়। সব কটি মামলায় গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকার সময় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তাঁরা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হলেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার ছয়টি প্লট তাঁদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

গত ৩১ জুলাই এই তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। এর পর থেকে শেখ রেহানা ও তাঁর তিন ছেলে-মেয়ের বিরুদ্ধে করা আলাদা তিন মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এসব মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আসামি।

পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত ব্যক্তি ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন, বলছে পুলিশ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ৬:৫৪ অপরাহ্ণ
পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত ব্যক্তি ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন, বলছে পুলিশ

পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে গুলিতে নিহত ব্যক্তির বিস্তারিত নাম-পরিচয় জানা গেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি সূত্র প্রথম আলোকে বলছে, নিহত ব্যক্তির নাম তারিক সাইফ মামুন (৫৫), তিনি ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ বলছে, দুর্বৃত্তরা খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে।

পুলিশ বলছে, নিহত ব্যক্তি একসময় আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী ছিলেন, তবে অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।

আরও পড়ুন

গাড়ি থেকে নামলেন, ৬ থেকে ৭টি গুলি, পড়ে গেলেন রক্তাক্ত মামুন

গাড়ি থেকে নামলেন, ৬ থেকে ৭টি গুলি, পড়ে গেলেন রক্তাক্ত মামুন

তারিক সাইফ মামুনের জাতীয় পরিচয়পত্র
তারিক সাইফ মামুনের জাতীয় পরিচয়পত্রছবি: পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া

গুলির ঘটনার সিসিটিভির একটি ভিডিও ফুটেজ প্রথম আলোর হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, মামুন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। তখন দুই ব্যক্তি খুব কাছে থেকে তাঁকে গুলি করছেন। ঘটনাটি ঘটে তিন থেকে চার সেকেন্ডের মধ্যে। গুলি করার পর দুই ব্যক্তি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

মামুনের পরিবার বলছে, তিনি দুই দিন ধরে রাজধানীর বাড্ডার ভাড়া বাসায় ছিলেন। আজ সকালে একটি মামলায় আদালতে তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। এ জন্য তিনি সকালে বাসা থেকে বের হন।

মামুনের স্ত্রী বিলকিস আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ধারণা করছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের লোকজন এই হত্যার সঙ্গে জড়িত। এর আগেও ইমনের লোকজন মামুনকে হত্যার চেষ্টা করেছিল।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত ব্যক্তির স্বজনের আহাজারি
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত ব্যক্তির স্বজনের আহাজারিছবি: প্রথম আলো

পুলিশ জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন ও মামুন একসময় হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকার আতঙ্ক ছিলেন। তাঁদের গড়ে তোলা বাহিনীর নাম ছিল ‘ইমন-মামুন’ বাহিনী। তাঁরা দুজনই চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলার আসামি। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, মামুনের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। তাঁর জন্ম ১৯৭০ সালে।

রাজধানীর কোতোয়ালি থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইয়াসিন বলেন, গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে তিনি ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে যান। গিয়ে দেখেন, এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে আছেন। খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন।

আরও পড়ুন

পুরান ঢাকায় হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

পুরান ঢাকায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে স্বজনের আহাজারি। আজ সোমবার সকালে

প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি বলেন, দুজন ব্যক্তি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের প্রবেশমুখে এসে ওই ব্যক্তিকে (মামুন) পেছন থেকে গুলি করেন। বেশ কয়েকটি গুলি করার পর ওই ব্যক্তি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর গুলি করা ব্যক্তিরা মোটরসাইকেল পালিয়ে যান।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, নিহত ব্যক্তির লাশ মর্গে রাখা হয়েছে।