খুঁজুন
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ২৬ কার্তিক, ১৪৩২

তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:০৪ অপরাহ্ণ
তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

 বাংলাদেশে তিস্তা নদীকে কেন্দ্র করে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি সাম্প্রতিক সময়ে জনমত আবারও তীব্র হচ্ছে। লালমনিরহাটে বিএনপির আয়োজনে তিস্তা বাঁচাও-কেন্দ্রিক এক বিশাল মশাল সমাবেশ হয়েছে। বাংলাদেশের তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একমাত্র বাধা ভারত। কারণ, দেশটির কারণেই তিস্তা নিয়ে পানিবণ্টন চুক্তি হলেও তা কার্যকর হয়নি। বাংলাদেশে তিস্তা নদী মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি বাড়তে থাকায় ভারত কেন বেজার হয়েছে, তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য উইক।

১৯ অক্টোবর নয়াদিল্লি ছিল বেশ সতর্ক অবস্থায়। সেদিন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শত শত শিক্ষার্থী শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, জ্বালানো হয়েছিল মশাল। তাঁদের দাবি—তিস্তা নদী মাস্টারপ্ল্যান অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাঁরা মনে করেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে এক নতুন বিপ্লব ঘটাবে। এই বিক্ষোভ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। দেশের নানা প্রান্তে তিস্তা নিয়ে ক্ষোভ জমছে। কারণ, ভারত-বাংলাদেশের বহুদিনের পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে তিস্তা নদী—৪১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এক আন্তর্জাতিক জলধারা, যা একসময় কৃষির প্রাণস্রোত ছিল, এখন পরিণত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে। তিস্তার উৎপত্তি পূর্ব হিমালয়ের পাওহুনরি পর্বত থেকে। এটি ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অতিক্রম করে বাংলাদেশের রংপুর বিভাগে প্রবেশ করে। পরে যমুনা নদীর সঙ্গে মিশে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ে। দুই দেশই তিস্তার পানি কৃষি ও সেচের কাজে ব্যবহার করে। বাংলাদেশের ছয়টি উত্তরাঞ্চলীয় জেলায় কয়েক লাখ কৃষক শুষ্ক মৌসুমে পানির ঘাটতিতে ফসল ফলাতে হিমশিম খান। আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইএফপিআরআই) হিসাবে, তিস্তার পানির স্বল্পতার কারণে বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ১৫ লাখ টন ধান হারায়। অন্যদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তিস্তা সেচ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গজলডোবা ব্যারাজসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন নদী ৫৪টি। তবে তিস্তা ব্যবস্থাপনা বরাবরই দুই দেশের মধ্যে বিরোধের বিষয়। ১৯৮৩ সালে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তিতে তিস্তার পানির ৩৯ শতাংশ ভারতের এবং ৩৬ শতাংশ বাংলাদেশের ভাগে পড়ে। কিন্তু সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১১ সালে নতুন একটি সমঝোতার আশা জেগেছিল, যেখানে শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের জন্য ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ পানির অংশ নির্ধারণ করা হয়।  কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের কৃষকদের ক্ষতির আশঙ্কায় সেই চুক্তির বিরোধিতা করেন এবং আলোচনা থমকে যায়। এর পর থেকে অগ্রগতি বলতে কার্যত কিছুই হয়নি। এর ফলে ঢাকায় এমন ধারণা তৈরি হয় যে বাংলাদেশ-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ভারত হয় অনিচ্ছুক, নয়তো অক্ষম, যদিও তাদের রয়েছে কৌশলগত ও ভৌগোলিক সুবিধা।

বাংলাদেশের জনগণের দাবির বিপরীতে ভারত নীরব—এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ তিস্তা নিয়ে চীনের সহায়তা চাইছে। ২০২৫ সালের মার্চে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বেইজিং সফরে গিয়ে চীনকে ‘পানিব্যবস্থাপনায় পারদর্শী’ বলে প্রশংসা করেন। সেখানে তিনি ৫০ বছরের তিস্তা মাস্টারপ্ল্যান হাতে পান, যা নদী পুনর্বাসন ও অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দেয়। চীন তিস্তা প্রকল্পে ঋণ, অনুদান ও বিনিয়োগ মিলিয়ে ২১০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তার ঘোষণা দেয়। যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিস্তা রিভার কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন প্রজেক্টে (টিআরসিএমআরপি) অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জলাধার নির্মাণ, নদী খনন, সড়ক ও স্যাটেলাইট শহর উন্নয়ন পরিকল্পনা। এ ছাড়া দুই দেশ যৌথভাবে ইয়ারলুন সাংপো-যমুনা (বাংলাদেশে যা ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নামে পরিচিত) নদীর পানিবিজ্ঞান খাতে তথ্য বিনিময়ের সিদ্ধান্ত নেয়, যা নতুন দিল্লিকে উদ্বিগ্ন করেছে। কারণ, এতে চীনের পানিনিয়ন্ত্রণ দক্ষিণ এশিয়ার নিম্নাঞ্চলের প্রবাহে প্রভাব ফেলতে পারে। এর পাশাপাশি চীন বাংলাদেশের মোংলা বন্দর, চট্টগ্রাম অর্থনৈতিক অঞ্চল, টেক্সটাইল, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ডিজিটাল অর্থনীতিতেও বিনিয়োগ করছে, যা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ হিসেবে দুই দেশের সহযোগিতাকে গভীর করছে। ভারতের কাছে এটি কেবল পানি নয়, ‘নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতির প্রশ্ন’। তিস্তা প্রকল্পের অবস্থান ভারতের কৌশলগত ‘শিলিগুড়ি করিডর’–এর কাছাকাছি, যাকে বলা হয় ‘চিকেনস নেক’। মাত্র ৬০ কিলোমিটার লম্বা ও ২২ কিলোমিটার চওড়া এই স্থলপথ ভারতের মূল ভূখণ্ডকে উত্তর-পূর্বের সাত রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করেছে। ফলে ভারতের দৃষ্টিতে এর আশপাশে কোনো ‘বিদেশি শক্তির’ উপস্থিতি সরাসরি নিরাপত্তা ঝুঁকি। এরই মধ্যে ভারত সরকার ব্রহ্মপুত্রের উজানে চীনের বিশাল বাঁধ প্রকল্প নিয়েও সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। তিস্তা ইস্যু সামনে আসার সময়টাও তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তিস্তা ইস্যুকে কাজে লাগাতে পারে। অপর দিকে আওয়ামী লীগকে অভিযুক্ত ভারতের প্রতি অতিমাত্রায় অনুগত হওয়ার অভিযোগে। তিস্তার তাড়না আরও বেড়েছে ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানি চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে। সেই মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই তিস্তা প্রশ্নে জাতীয় বিতর্ক এখন নতুন মাত্রা পাচ্ছে।

ওষুধে মরছে না মশা, অতিষ্ঠ নগরবাসী

রাসেল হোসেন ॥
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:৫৬ অপরাহ্ণ
ওষুধে মরছে না মশা, অতিষ্ঠ নগরবাসী

মশার ভনভন শব্দে অতিষ্ঠ বরিশাল নগরবাসী। পুরাতন ওষুধ দিয়ে মশা নিধন করছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি)। এতে মরছে না মশা। ফলে বরিশাল নগরীতে বেড়েই চলেছে মশার উপদ্রব। দিনে রাতে সমানে চলছে মশার অত্যাচার। নগরজীবনকে অতিষ্ট করে তুলেছে মশা। পাশাপাশি বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে বরিশাল সিটি করপোরেশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, পুরানো নিম্ন মানের ওষুধ দিয়ে বর্তমানে মশা মারা হচ্ছে। ফলে ঠিকমত মরছে না মশা। সর্বশেষ মশা নিধনের ওষুধ সরবরাহের দায়িত্বে ছিল নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড। বর্তমানে এই কোম্পানির সরবরাহকৃত ওষুধ সিটি করপোরেশনের কাছে নেই। ফলে এর আগের সরবরারকৃত কোম্পানি ঢাকার নাস কাডিল গ্রুপের তুলানামূলক নিন্মমানের পুরানো ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে নগরীর কাউনিয়া, নথুল্লাবাদ ও রূপাতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় মশার উৎপাত আগের থেকে বেড়ে গেছে। বাসিন্দারা বলছেন, সন্ধ্যার পর বাসায় বসা যায় না। মশার কামড়ে বাচ্চারা ঘুমাতে পারে না।

রূপাতলী এলাকার বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম বলেন, ফগিং মেশিনে ধোঁয়া ছিটায় ঠিকই, কিন্তু মশা তাতে মরে না। বরং ধোঁয়াটা এসে চোখে লাগে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একই ধরনের ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে মশার মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। তাই ওষুধ পরিবর্তন ও মশা নিয়ন্ত্রণ কৌশলে বৈচিত্র্য আনা দরকার।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন শাখার কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বলেন, নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের সরবরাহকৃত ওষুধ শেষ হয়ে যাওয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য পুরানো ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। নতুন ওষুধ আসলে সেটাই ব্যবহার করা হবে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল বারী বলেন, মশা নিধনের নতুন ওষুধের জন্য টেন্ডার কল করা হয়েছে। অতি দ্রুত নতুন মশা মারার ওষুধ পেয়ে যাব।

শেখ হাসিনার মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ, আত্মপক্ষ সমর্থন ১৭ নভেম্বর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:১৪ অপরাহ্ণ
শেখ হাসিনার মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ, আত্মপক্ষ সমর্থন ১৭ নভেম্বর

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে এই মামলায় আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৭ নভেম্বর তারিখ ধার্য করা হয়েছে। ঢাকার বিশেষ জজ-৫–এর বিচারক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুনের আদালত আজ সোমবার এই তারিখ ধার্য করেন।

আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাতকে আসামি খুরশীদ আলমের আইনজীবী শাহিন উর রহমান জেরা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তার জেরা শেষ হওয়ায় আইনানুযায়ী আদালত আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের তারিখ ধার্য করেন।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দিন মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, শেখ হাসিনা ছাড়াও তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ হয়েছে। আর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আংশিক জেরা হয়েছে।

এই তিন মামলায় গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি খুরশীদ আলমের পক্ষে আইনজীবী শাহিন উর রহমান জেরা করেন। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের পক্ষে জেরার সুযোগ নেই। ১৭ নভেম্বর জয়ের মামলায় বাদীর সাক্ষ্য ও জেরার দিন, আর পুতুলের মামলার তদন্ত কর্মকর্তার জেরার তারিখ ধার্য করেন আদালত।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী আরিফুল ইসলাম জানান, জয়ের মামলায় ২৮ ও পুতুলের মামলায় ২২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। সেদিন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন জানিয়েছিলেন, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর সড়কের আশপাশের এলাকায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানা ও তাঁর ছেলে-মেয়ের নামে ১০ কাঠা করে ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে আলাদা ছয়টি মামলা করে দুদক। এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অন্য মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়। সব কটি মামলায় গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকার সময় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তাঁরা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হলেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার ছয়টি প্লট তাঁদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

গত ৩১ জুলাই এই তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। এর পর থেকে শেখ রেহানা ও তাঁর তিন ছেলে-মেয়ের বিরুদ্ধে করা আলাদা তিন মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এসব মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আসামি।

পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত ব্যক্তি ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন, বলছে পুলিশ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ৬:৫৪ অপরাহ্ণ
পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত ব্যক্তি ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন, বলছে পুলিশ

পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে গুলিতে নিহত ব্যক্তির বিস্তারিত নাম-পরিচয় জানা গেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি সূত্র প্রথম আলোকে বলছে, নিহত ব্যক্তির নাম তারিক সাইফ মামুন (৫৫), তিনি ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ বলছে, দুর্বৃত্তরা খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে।

পুলিশ বলছে, নিহত ব্যক্তি একসময় আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী ছিলেন, তবে অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।

আরও পড়ুন

গাড়ি থেকে নামলেন, ৬ থেকে ৭টি গুলি, পড়ে গেলেন রক্তাক্ত মামুন

গাড়ি থেকে নামলেন, ৬ থেকে ৭টি গুলি, পড়ে গেলেন রক্তাক্ত মামুন

তারিক সাইফ মামুনের জাতীয় পরিচয়পত্র
তারিক সাইফ মামুনের জাতীয় পরিচয়পত্রছবি: পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া

গুলির ঘটনার সিসিটিভির একটি ভিডিও ফুটেজ প্রথম আলোর হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, মামুন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। তখন দুই ব্যক্তি খুব কাছে থেকে তাঁকে গুলি করছেন। ঘটনাটি ঘটে তিন থেকে চার সেকেন্ডের মধ্যে। গুলি করার পর দুই ব্যক্তি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

মামুনের পরিবার বলছে, তিনি দুই দিন ধরে রাজধানীর বাড্ডার ভাড়া বাসায় ছিলেন। আজ সকালে একটি মামলায় আদালতে তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। এ জন্য তিনি সকালে বাসা থেকে বের হন।

মামুনের স্ত্রী বিলকিস আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ধারণা করছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের লোকজন এই হত্যার সঙ্গে জড়িত। এর আগেও ইমনের লোকজন মামুনকে হত্যার চেষ্টা করেছিল।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত ব্যক্তির স্বজনের আহাজারি
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত ব্যক্তির স্বজনের আহাজারিছবি: প্রথম আলো

পুলিশ জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন ও মামুন একসময় হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকার আতঙ্ক ছিলেন। তাঁদের গড়ে তোলা বাহিনীর নাম ছিল ‘ইমন-মামুন’ বাহিনী। তাঁরা দুজনই চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলার আসামি। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, মামুনের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। তাঁর জন্ম ১৯৭০ সালে।

রাজধানীর কোতোয়ালি থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইয়াসিন বলেন, গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে তিনি ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে যান। গিয়ে দেখেন, এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে আছেন। খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন।

আরও পড়ুন

পুরান ঢাকায় হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

পুরান ঢাকায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে স্বজনের আহাজারি। আজ সোমবার সকালে

প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি বলেন, দুজন ব্যক্তি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের প্রবেশমুখে এসে ওই ব্যক্তিকে (মামুন) পেছন থেকে গুলি করেন। বেশ কয়েকটি গুলি করার পর ওই ব্যক্তি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর গুলি করা ব্যক্তিরা মোটরসাইকেল পালিয়ে যান।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, নিহত ব্যক্তির লাশ মর্গে রাখা হয়েছে।