ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক জানিয়ে নলছিটির দোকানপাট বন্ধ
বৃহত্তর বরিশালের কৃতি সন্তান শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যু যেনো ব্যক্তিগত শোকের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটি পরিণত হয়েছে একটি জাতীয় বেদনায়—যে বেদনা উচ্চকণ্ঠে নয়, বরং নীরবে কাঁদে। এই নীরব কান্না দেশের কোটির মানুষের, যারা স্বপ্ন দেখেছিল একটি ন্যায্য, মানবিক ও দায়বদ্ধ সমাজের।
শরিফ ওসমান বিন হাদি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার একটি সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসে তিনি যে স্বপ্ন ধারণ করেছিলেন, তা কেবল নিজের উন্নয়ন ঘিরে ছিল না—ছিল সমাজ, রাষ্ট্র ও মানুষের সম্মিলিত মুক্তির আকাঙ্ক্ষা। তরুণ বয়সেই তিনি নিজেকে যুক্ত করেন ন্যায়, অধিকার ও পরিবর্তনের সংগ্রামে। তাঁর কণ্ঠ ছিল প্রতিবাদী, কিন্তু দায়িত্বশীল; দৃঢ়, কিন্তু মানবিক। সে কারণেই অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি হয়ে ওঠেন তরুণদের আস্থার প্রতীক।
হাদির মৃত্যু আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে—এই সমাজে সত্য ও প্রতিবাদের পথ কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তাদের জীবন কতটা অনিরাপদ—এই প্রশ্ন আজ নতুন করে সামনে এসেছে। তাঁর চলে যাওয়া কেবল একটি প্রাণহানি নয়; এটি সম্ভাবনার অপমৃত্যু, একটি প্রজন্মের স্বপ্নে গভীর ক্ষত।
এই মৃত্যু দেশের রাজপথ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—সবখানেই প্রতিক্রিয়ার ঢেউ তুলেছে। মানুষ ক্ষুব্ধ, শোকাহত এবং প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু সবচেয়ে গভীর অনুভূতিটা প্রকাশ পাচ্ছে নীরবতায়। সেই নীরবতা আমাদের বলে দেয়—এটি কোনো সাধারণ ঘটনা নয়; এটি রাষ্ট্র, সমাজ ও আমাদের সম্মিলিত বিবেকের সামনে দাঁড় করানো এক কঠিন প্রশ্ন।
আজ হাদির নাম উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে একটি দায়িত্বও উচ্চারিত হয়। দায়িত্ব—সত্যকে আড়াল না করার, বিচারকে বিলম্বিত না করার, এবং এমন একটি পরিবেশ গড়ে তোলার যেখানে আর কোনো তরুণকে স্বপ্ন দেখার অপরাধে প্রাণ দিতে না হয়।
শরিফ ওসমান বিন হাদি আজ নেই, কিন্তু তাঁর চিন্তা, সাহস ও আদর্শ মুছে যায়নি। ওসমান হাদি ছিলেন-আছেন এবং থাকবেন প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে।
রোজা শুরুর সম্ভাব্য তারিখ জানিয়েছেন জ্যোতির্বিদরা। তারা জানিয়েছেন, শনিবার বিভিন্ন দেশে রজব মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে আজ থেকে দুই মাস পরে রমজান শুরু হতে পারে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্র (আইএসি) জানিয়েছে, অধিকাংশ ইসলামি দেশে আজ ১৪৪৭ হিজরির রজব মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রজব হিজরি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস এবং ইসলামের ৪টি পবিত্র মাসের একটি। রজব মাস শুরু হওয়া মানেই রমজানের আগে শেষ ধাপে প্রবেশ।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) যদি রজব মাস শুরু হয় এবং রজব ও শাবান মাস স্বাভাবিকভাবে ২৯ বা ৩০ দিন করে হয়, তাহলে প্রায় ৬০ থেকে ৬১ দিনের মধ্যে রমজান শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে চূড়ান্ত তারিখ নির্ভর করবে সে সময়ের সরকারি চাঁদ দেখার ঘোষণার ওপর।
আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্রের পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ শওকত ওদেহ জানান, শনিবার স্থানীয় সময় ভোর ১টা ৪৩ মিনিটে চাঁদের কেন্দ্রীয় সংযোগ ঘটবে। সূর্যাস্তের পর চাঁদের দৃশ্যমানতা অঞ্চলভেদে ভিন্ন হবে।
কোথায় চাঁদ দেখা যেতে পারে
ওদেহর মতে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার কিছু অংশ এবং দক্ষিণ আমেরিকায় টেলিস্কোপের মাধ্যমে চাঁদ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খালি চোখে চাঁদ দেখার সম্ভাবনা সীমিত থাকবে মূলত পশ্চিম দক্ষিণ আমেরিকা ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। এই কারণে ইসলামি বিশ্বের কিছু অঞ্চল থেকে চাঁদ দেখা সম্ভব হওয়ায় অনেক সরকারি ক্যালেন্ডারে আগেই রোববারকে রজব মাসের প্রথম দিন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও, প্রতিটি দেশে ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাইকৃত চাঁদ দেখার প্রতিবেদন অনুযায়ীই রজব মাসের আনুষ্ঠানিক শুরু ঘোষণা করা হবে বলে জোর দেন ওদেহ।
জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক হিসাব অনুযায়ী, শনিবার সন্ধ্যায় বহু আরব ও ইসলামি রাজধানীতে টেলিস্কোপ বা খালি চোখ—কোনো উপায়েই চাঁদ দেখা সম্ভব হবে না।
জাকার্তায় সূর্যাস্তের ১৮ মিনিট পর চাঁদ অস্ত যাবে, তখন চাঁদের বয়স হবে ১১ ঘণ্টা ১৬ মিনিট। আবুধাবিতে সূর্যাস্তের ১০ মিনিট পর চাঁদ অস্ত যাবে। রিয়াদে ১১ মিনিট পর, আম্মানে ৮ মিনিট পর, কায়রোতে ১০ মিনিট পর এবং রাবাতে ১২ মিনিট পর চাঁদ অস্ত যাবে। এসব এলাকায় চাঁদ দেখা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে জানান ওদেহ।
ওদেহ আরও বলেন, উন্নত জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ইমেজিং প্রযুক্তি ব্যবহার করলে তাত্ত্বিকভাবে ইসলামি বিশ্বের বড় অংশে চাঁদ শনাক্ত করা সম্ভব। তবে এসব পদ্ধতি ধর্মীয়ভাবে বিতর্কিত এবং অনেক দেশই চাঁদ ঘোষণার ক্ষেত্রে সেগুলো গ্রহণ করে না।
তিনি জানান, খালি চোখে চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কম সময়ের রেকর্ড হলো সূর্যাস্তের ২৯ মিনিট পর, আর সবচেয়ে কম বয়সী দৃশ্যমান চাঁদের রেকর্ড ১৫ ঘণ্টা ৩৩ মিনিট।
আপনার মতামত লিখুন
Array