অবৈধ কাঠের ট্রলিং বন্ধের দাবিতে পাথরঘাটায় মানববন্ধন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময়: রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫ । ৬:১৬ অপরাহ্ণ

বঙ্গোপসাগরে অবৈধ কাঠের তৈরি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলিং ট্রলার বন্ধের দাবিতে বরগুনার পাথরঘাটায় কয়েক হাজার জেলে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। রোববার (১৯ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে পাথরঘাটা গোল চত্বরে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরীর নেতৃত্বে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, আমরা সাধারণ জেলেরা সরকারের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা মেনে ইলিশ রক্ষায় সহযোগিতা করেছি। অথচ কিছু প্রভাবশালী ট্রলিং ট্রলার মালিক প্রশাসনের নীরবতায় সাগরে অবৈধভাবে মাছ ধরছে, ইলিশের পোনা ধ্বংস করছে। এটা শুধু জেলেদের ক্ষতি নয়, জাতীয় সম্পদের ওপরও বড় হুমকি। তিনি আরও বলেন, যদি দ্রুত এসব অবৈধ ট্রলিং ট্রলার বন্ধ না করা হয়, তাহলে সাধারণ জেলেরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন— বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতি, বিএফডিসি মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতি, বিএফডিসি ঘাট শ্রমিক ইউনিয়ন, বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়ন, বিএফডিসি মৎস্য পাইকার সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের শতাধিক প্রতিনিধি।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন— উপজেলা চরদুয়ানী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম, বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দুলাল হোসেন, উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি মারুফ চৌধুরী, ট্রলার শ্রমিক কবির হোসেন সাগর, নিজাম উদ্দিন উপস্থিত থেকে অবৈধ ট্রলিং ট্রলারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বলেন, “ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাঠের তৈরি এসব ট্রলিং ট্রলার প্রতিদিনই বেড়ে যাচ্ছে। তারা সাগর ও নদীতে ছোট পোনা, ডিমওয়ালা মাছসহ সামুদ্রিক সম্পদ ধ্বংস করছে। ফলে ভবিষ্যতে ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির মুখে পড়বে।”

জেলেরা অভিযোগ করেন, সরকারি আইন অনুযায়ী উপকূল থেকে ৪০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে ট্রলিং ট্রলার প্রবেশ করে মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু অবৈধ ট্রলারগুলো প্রতিনিয়ত উপকূলের কাছাকাছি এসে মাছ ধরছে এবং ছোট ট্রলারের জাল কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি প্রতিবাদ করলে স্থানীয় জেলেদের মারধর ও অপমান করা হয় বলেও অভিযোগ জেলেদের।

জেলেরা সতর্ক করে বলেন, “অতি দ্রুত সাগরে অবৈধ ট্রলিং বন্ধ না করলে আমরা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হব। তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে এর দায় আমাদের না, প্রশাসনের থাকবে।”

জেলেরা আরও জানান, অবৈধ ট্রলিং বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে সমুদ্রে মৎস্য সম্পদ দ্রুত কমে যাবে, ফলে রাষ্ট্র রাজস্ব হারাবে এবং উপকূলের হাজারো জেলে পরিবার খাদ্য ও জীবিকার সংকটে পড়বে।

 

প্রকাশক ও সম্পাদক: মেহেরুন্নেছা বেগম।  কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক আজকের বার্তা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন