১০ বছর আগে ভাবিকে গলা কেটে হত্যা, এবার পিটিয়ে মারলেন ভাতিজিকে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময়: বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫ । ৭:০৯ অপরাহ্ণ

বরগুনার তালতলীতে ভাবি তানিয়া বেগমকে গলা কেটে হত্যার ১০ বছর পর এবার ছয় বছর বয়সী ভাতিজি নাহিল আক্তারকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন চাচা হাবিব ওরফে হাবিল খান। ঘটনার পরপরই হাবিলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ইদুরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় পর রাতে নিহত শিশুর বাবা মো. দুলাল খান বাদী হয়ে তালতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত হাবিব ওরফে হাবিল খান ও মামলার বাদী দুলাল খান একই বাড়িতে বসবাস করেন। হাবিব সব সময় নেশাগ্রস্ত থাকায় প্রায় সময়ই পরিবারের সদস্যদের গালিগালাজসহ মারধর করতেন। মঙ্গলবার দুপুরে শিশু নাহিল বাড়ির সামনে একটি মুদি দোকানে রুটি কিনতে যায়। এসময় হঠাৎ হাবিব পেছন থেকে এসে একটি লাঠি দিয়ে নাহিলের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে।

এতে শিশুটি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক বাবা দুলাল খান ও স্বজনরা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটি মারা যায়। ঘটনার পরপরই হাবিবকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে নিহত শিশুর বাবা দুলাল খানের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগমকে গলা কেটে করে হত্যা করেন হাবিব। ওই মামলায় শিশু আইনে তার ৯ বছর সাজা হয়। সাজা ভোগ শেষে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে জামিনে মুক্তি পান। ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পরে ঘাতক হাবিল বড় ভাই দুলাল খানের দ্বিতীয় স্ত্রী ফাহিমা আক্তারের কন্যা নাহিলকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। শিশুর বাবা দুলাল খান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ও আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে।

২০১৫ সালে আমার প্রথম স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করেছে। তখন ওর বয়স ছিল ১৭ বছর। শিশু আইনে ৯ বছর সাজা ভোগ করে ২০২৪ সালের প্রথম দিকে জামিনে মুক্তি পায়। জামিনে মুক্তি পাওয়ার দেড় বছরের মাথায় আমার শিশু কন্যাকে পিটিয়ে হত্যা করল। আমার শিশু কন্যা কী অপরাধ করেছিল? আমি এর বিচার চাই।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. টুকু শিকদার ও সালাম হাওলাদার বলেন, ‘ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা হাবিলকে ধাওয়া করলে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করেছে।’ তারা বলেন, ‘হাবিল এর আগে তার ভাইয়ের প্রথম স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করেছেন।’

তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুটির মাথার ডান পাশে এবং বাঁ হাতের কনুইয়ে গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল। তাৎক্ষণিক শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে জানা যায়, শিশুটি বরিশালে নেওয়ার পথেই মারা গেছে।’

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল বলেন, ‘হাবিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিশুটির মরদেহ থানায় রাখা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার ময়নাতন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।’

 

প্রকাশক ও সম্পাদক: মেহেরুন্নেছা বেগম।  কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক আজকের বার্তা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন