অবৈধভাবে মেইন লাইনের তার কেটে সংযোগ দিলো ওজোপাডিকো

স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশের সময়: সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫ । ৭:১২ অপরাহ্ণ

বরিশালে ওজোপাডিকো’র বিরুদ্ধে অবৈধভাবে মেইন লাইনের তার কেটে সংযোগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (বিক্রয় ও বিতরণ) বিভাগ-২ এর একজন ইলেকট্রিশিয়ানের সহযোগিতায় মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে দুই পুলের মাঝ থেকে মূল তার কেটে সংযোগ দেওয়া হয়। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবী দুটি বৈদ্যুতিক খুটি গেড়ে কে বা কারা অবৈধভাবে এই চোরা সংযোগ দিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বরিশাল নগরীর শফির গ্যারেজ সংলগ্ন এলাকায় শিক্ষক মনিরুল ইসলাম হাওলাদারের দ্বিতল ভবনে অবৈধ সংযোগের উদ্দেশ্যে পরপর দুটি বিদ্যুৎ খুঁটি বসানো হয়েছে। পরে বিদ্যুতের মূল লাইনের কাভার (প্লাস্টিক) তার কেটে সেই ভবনে সংযোগ নেওয়া হয়। শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বলেন আমি আবেদন করে বৈদ্যুতিক সংযোগটি এনেছি। অনিয়ম দুর্নীতি করলে হয়তো তারা করেছে।

গত সোমবার (৬ অক্টোবর) ইলেকট্রিশিয়ান মো. রেজাউল করিম ওই সংযোগ দেন। পরে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মঞ্জুরুল ইসলাম সেটি বিচ্ছিন্ন করলেও কোনো আইনি ব্যবস্থা নেননি।

অভিযোগ রয়েছে, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুব্রত মালাকারের মাধ্যমে পরবর্তীতে রেজাউল করিম সংযোগটি পুনরায় চালু করেন। জানা যায়, শিক্ষক মনিরুল ইসলামের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে রেজাউল করিমের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য। দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তিনি অফিসে নিয়মিত উপস্থিত না থেকেও বিদ্যুৎ সংযোগ, মিটার রিডিং ও মেইনটেন্যান্সসহ নানা কাজে জড়িত। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরও দিচ্ছেন না ঠিকমতো। বরং নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়িয়ে মক্কেল সংগ্রহ করে নিয়মবহির্ভূতভাবে সংযোগ দিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

৫ আগস্টের পর তাকে বদলি করা হলেও তদবিরের মাধ্যমে তিনি পুনরায় বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র–২ এ যোগ দেন। তারা এই অনিয়মে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন শ্যালক অন্তর। শ্যালকের নিয়োগের বৈধতা নেই ঐ দপ্তরে। এরপরও দ্বাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো নগরী।

ইলেকট্রিশিয়ান রেজাউল করিম ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মালাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে তাদের কিছু জানা নেই। তারা এ ঘটনার সাথে জড়িত নন।

ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র–২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “রেজাউল করিম লাইনের কাজ করেন। তার নিয়মিত হাজিরা আছে কি না সেটা নিয়ে আপনার (সাংবাদিক) মাথা ব্যথা কেন? জনবল সংকট থাকায় তাকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। দুই পুলের মাঝ দিয়ে অবৈধ সংযোগ স্থাপনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এটি চোরা লাইন। যারা এটি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

তিনি আরও বলেন, “সুব্রত মালাকার ও রেজাউল করিম এই ঘটনায় জড়িত নয়। তবে যদি তদন্তে সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ জাকিরুজ্জামান বলেন, তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে অবৈধ সংযোগ দিয়ে আসছেন। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, আর ভোক্তারা ঝুঁকিপূর্ণ সংযোগের কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রয়েছেন।

 

 

 

প্রকাশক ও সম্পাদক: মেহেরুন্নেছা বেগম।  কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক আজকের বার্তা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন