দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশেও ‎পিআর পদ্ধতি চালু আছে : শামীম সাঈদী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময়: রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫ । ৬:২৬ অপরাহ্ণ

মরহুম জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামীম সাঈদী বলেছেন, ১৯৯৫ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি উত্থাপন করা হয়েছিল তখন আমাদের বন্ধু রাজনৈতিক দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার বুঝতে পারেননি। কিন্তু আন্দোলন করে হরতাল অবরোধের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলাদেশের সংবিধানে সংযোজন করা হয়েছিল। এখন আবার পিআর পদ্ধতি আমরা বুঝতে পারতেছি না। অত্যন্ত সহজ একটি পদ্ধতি। পিআর পদ্ধতি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশেও চালু আছে। সংসদে নির্বাচনের পরে যে ৫০ জন মহিলা সংসদ সদস্যকে নেওয়া হয় ওটাও একটি পিআর পদ্ধতির মাধ্যম। নির্বাচনে তাই আমরা পিআর পদ্ধতি চাই।

রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে পিরোজপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা শাখার আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরারব স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে দলটির নেতাকর্মীরা শহরের সিও অফিস চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হয়।

‎শামীম সাঈদী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে যেভাবে গোটা বাংলাদেশের মানুষ স্বস্তি পেয়েছিল একই রকমভাবে পিআর পদ্ধতি চালু হলে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ছোট বড় সব মানুষ তার অধিকার ফিরে পাবে। সবার মতের মূল্যায়ন হবে। আমরা পাঁচটি দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কথা বলছি, গত ১৬টি বছর ধরে আমরা আমাদের সামনে যারা সাংবাদিক বন্ধু আছেন, আমাদের রাজনৈতিক বন্ধু আছেন, বৃহত্তম দল আছেন, ক্ষুদ্র দল আছেন যারাই আছেন বিরোধীদল বলতে যারা ছিল তারা সকলেই নানান ধরনের নির্যাতন মামলা হামলা গুম খুনের শিকার হয়েছেন আমরা সেই সমস্ত গুম খুনের সুষ্ঠু বিচার চাই।

‎তিনি আরও বলেন, গোটা বাংলাদেশের মানুষ জানে, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এই পিরোজপুর থেকে দুই দুইবার এমপি নির্বাচিত হয়ে মানুষের সেবা করেছেন। যেহেতু তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন, যেহেতু তিনি কুরআনের দাওয়াত দিতেন। এই কুরআনের দাওয়াত দেওয়ার কারণে ইসলামের ছায়াতলে অসংখ্য মানুষ জড়ো হয়েছিল। এই কারণে বাম নাস্তিকেরা, আওয়ামী লীগেরা সহ্য করতে পারে নাই বলে তাকে ১৩টি বছর বন্দি করে রেখেছিল। ১৩ বছর বন্দি করে নির্যাতন করে রিমান্ডে নিয়ে তারা ক্ষান্ত হন নাই। ফাঁসির রায়ও দিয়েছিল। আপনাদের সবার প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, রাজপথে রক্তের মিছিল এবং অনেক মানুষের জীবনের বিনিময়ে তার ফাঁসিকে কার্যকর করতে পারেনি। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র থেমে থাকে নাই। তারা ষড়যন্ত্র করে সুস্থ একজন মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে এসে চিকিৎসার নাম করে অপচিকিৎসা দিয়ে তাকে হত্যা করেছে। আমরা সেই হত্যার বিচার চাই।

‎তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ পাঁচ দফা কিভাবে মানাতে হয়, রাজি করাতে হয় আমরা কিন্তু জানি। আমরা যদি ফ্যাসিস্ট সরকারকে ১৬ বছর থাকার পরে ছাত্র জনতাদেরকে নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারকে তাড়িয়ে দিতে পারি। তবে পাঁচ দফা দাবি মানিয়েও নিতে পারব ইনশাআল্লাহ। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে বাংলাদেশের যে নির্বাচন হয়েছে, তাতে ১৫৪টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। দিনের ভোট রাতে হয়ে গেছে, ডামি প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করে ক্ষমতায় চলে গেছে। এমন নির্বাচন আমরা আর চাই না। কোন ফ্যাসিস্টের অবস্থান আর থাকবে না। কোনো স্বৈরাচারের অবস্থান আর থাকবে না। পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচন হলে দেশের সবার মতামত প্রাধান্য পাবে।

‎বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা শাখার আমীর অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি জহিরুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব, জেলা সহকারী সেক্রেটারি শেখ আব্দুর রাজ্জাক, জেলা পেশাজীবী শাখা সভাপতি ড. আব্দুল্লাহিল মাহমুদ, সদর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, জেলা শিবিরের সভাপতি ইমরান হোসেন প্রমুখ।

প্রকাশক ও সম্পাদক: মেহেরুন্নেছা বেগম।  কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক আজকের বার্তা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন