হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্সচালকদের সংঘর্ষ, চিকিৎসা না পেয়ে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫ । ৮:২৯ অপরাহ্ণ

বরিশালের গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালের ভেতরে অ্যাম্বুল্যান্সচালকদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাতজন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে জরুরি বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলো অ্যাম্বুল্যান্স মালিক জাবেদ সেলিম, জামাল সিকদার, সালাম বেপারী, ইলিয়াস সরদার, সাইদ সিকদার, শাহাদাত সিকদার ও রাহাত ঘরামী।

তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, সংঘর্ষ চলাকালীন হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় হাফিজুর রহমান (৬০) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার দিয়াশুর গ্রামের নুর মোহাম্মদ আকনের ছেলে।

গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. শাহতা জারাব সালেহিন বলেন, হাসপাতালের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষ চলাকালীন তাৎক্ষণিক বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে।

তবে যে রোগীর মৃত্যু হয়েছে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে জরুরি বিভাগ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। তার পরও বিষয়টি তদন্ত করা হবে। রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে ও স্থানীয় থানাকে অবহিত করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পার্ক করে রাখার কারণে আগত রোগী ও তাদের স্বজনদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সচালকদের ডেকে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে তিনটি করে অ্যাম্বুল্যান্স রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। অন্য সব অ্যাম্বুল্যান্স হাসপাতালের বাহিরে রাখার নির্দেশ দেন।

হামলায় আহত ও প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে স্থানীয় অ্যাম্বুল্যান্স মালিক জাবেদ সেলিম অন্য অ্যাম্বুল্যান্স মালিক জামাল সিকদারকে তার দুটি অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যে একটি ভেতরে রাখতে বলেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে সেলিম ও জামালের সমর্থকরাও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায় চিকিৎসাসেবা।

হামলায় আহত জাবেদ সেলিমের ভাই সালাম বেপারী জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নির্দেশ অন্য সব অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের জানাতে গেলে পরিকল্পিতভাবে জামাল সিকদার ও তার ছেলেরা হামলা চালিয়ে সেলিমকে বেদম মারধর করেছে। হামলার খবর পেয়ে তিনি (সালাম) ও তার স্বজন ইলিয়াস সরদার ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদের ওপরও হামলা চালিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত জাবেদ সেলিমসহ তারা তিনজন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

অপরদিকে জামাল সিকদারের ছেলে সাইদ সিকদার জানান, সেলিম ও তার লোকজন তাদের গালাগাল করার প্রতিবাদ করায় হামলা চালিয়ে তাকে (সাইদ)সহ তার বাবা জামাল সিকদার, ভাই শাহাদাত সিকদার ও হেলপার রাহাত ঘরামীকে জখম করে। তারা শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

প্রকাশক ও সম্পাদক: মেহেরুন্নেছা বেগম।  কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক আজকের বার্তা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন