সবজি বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, নাভিশ্বাস ক্রেতাদের

বেতাগী প্রতিনিধি :
প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫ । ৭:৩৭ অপরাহ্ণ

বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাঁচাবাজারে সবজির দাম লাগামহীন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই দাম বাড়তে থাকায় নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ ক্রেতাদের। অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসনের মনিটরিং না থাকায় কয়েকজন প্রভাবশালী পাইকারের সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, আগে একাধিক পাইকার থাকায় প্রতিযোগিতা ছিল, ফলে দামও ছিল ক্রেতা-বান্ধব।

কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে তিনজন পাইকার—মো. আলী, নাসির ও সজিব—যৌথভাবে সবজির পাইকারি ব্যবসা শুরু করার পর থেকেই অস্থিরতা দেখা দেয়। তারা খুলনা ও যশোর থেকে কাঁচামাল এনে স্থানীয় খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছেন এবং নির্দিষ্ট দামে বিক্রির চাপ দিচ্ছেন।

দামের তারতম্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১ অক্টোবর কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৩০০ টাকায়, যেখানে খুলনা থেকে পাইকারি দাম ছিল ২২০ টাকা। কড়োলা বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়, যা পাইকারি ছিল ৫৯ টাকা।

৪ অক্টোবর কাঁচামরিচের পাইকারি দাম দাঁড়ায় ৩৬০ টাকা এবং খুচরায় তা বেড়ে হয় ৪০০ টাকা, অথচ খুলনা থেকে তা আনা হয়েছিল ২৮০ টাকায়। বাজারের এক দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আগে পাইকার বেশি থাকায় দাম কমত। এখন তিনজন মিলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের নির্ধারিত দামে কিনতে হয়, না হলে মাল পাওয়া যায় না।

দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, পচন—সব মিলিয়ে শেষে লোকসান হয়।” অভিযোগ অস্বীকার করে পাইকার মো. আলী বলেন, “খুলনা থেকে ট্রাকভর্তি সবজি আনতে খরচ অনেক বেড়েছে। ভাড়া, লোডিং আনলোডিং, শ্রমিকদের মজুরি—সবকিছু মিলিয়ে দাম কিছুটা বাড়তি নিতে হয়।”

অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, বাজারে অস্থিরতা চলছে এবং প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় সিন্ডিকেট আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

এ অবস্থায় সিন্ডিকেটবিরোধী জনসচেতনতা বাড়াতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ধ্রুবতারা ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন গত ১ অক্টোবর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় “অল্প দামে ব্যাগ ভর্তি বাজার” কর্মসূচি পালন করে।

তবে এরপরও মূল বাজারে দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। বেতাগীর সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, “বাজার এখন কয়েকজনের ইচ্ছামতো চলে।” তারা দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর ব্যবস্থা চান, যাতে একচেটিয়া সিন্ডিকেট ভাঙে এবং বাজারে স্বাভাবিক দাম ফিরে আসে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হরে কৃষ্ণ অধিকারী বলেন, “বাজারে সিন্ডিকেট বা কৃত্রিম সংকটের অভিযোগ পেলে আমরা অবশ্যই তদন্ত করব। ন্যায্য দামে পণ্য বিক্রি নিশ্চিত করতে প্রশাসন নিয়মিত মনিটরিং চালাবে।”

 

প্রকাশক ও সম্পাদক: মেহেরুন্নেছা বেগম।  কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক আজকের বার্তা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন