ত্রাণ চাই না, টেকসই বেরিবাঁধ চাই! ফসলি জমি বাঁচাতে হবে, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে! এমন সব স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের দক্ষিণ কুপধন এলাকার বিষখালি নদীর পাড়।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে পূর্ব কালমেঘা খাল হইতে বধু ঠাকুরানী ব্লক পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শতাধিক স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টি ও নদীর পানি বৃদ্ধিতে গ্রাস করছে একের পর এক ফসলি জমি। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে কৃষকদের একমাত্র জীবিকার উৎস ধান ও আলুর জমি। যে জমিতে একসময় সোনালি ফসল দুলতো, আজ সেখানে গিলে খাচ্ছে নদীর ভয়াল স্রোত।
স্থানীয় কৃষক আবদুল জলিল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমাদের জীবনের একমাত্র ভরসা এই জমিগুলোই। নদী এখন সেটা কেড়ে নিচ্ছে। সরকার যদি দ্রুত টেকসই বাঁধ না করে, তাহলে আমরা বাঁচবো না ফসল তো দূরের কথা।
মানববন্ধনে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা সাগর উপকূলীয় মানুষ, বছরের পর বছর ঝড় জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে বাঁচি। কিন্তু এখন তো সাধারণ জোয়ারেই ভেঙে পড়ছে আমাদের রক্ষাকবচ বেড়িবাঁধ। এই বাঁধগুলো যদি টেকসইভাবে নির্মাণ না হয়, তাহলে কালমেঘা, দক্ষিণ কুপধন, বধু ঠাকুরানীসহ আশপাশের সব গ্রাম একদিন মানচিত্র থেকে মুছে যাবে।
তারা আরও বলেন, সিডর, আইলা, নার্গিস, মহসেন, মিধিলি, রিমাল প্রতি বছর একের পর এক ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় আমরা দিশেহারা হয়ে যাই। তারপরও পুনরায় ঘুরে দাঁড়াই। কিন্তু এখন আমাদের দাবি একটাই ত্রাণ নয়, চাই টেকসই বেরিবাঁধ। কারণ ত্রাণ ক্ষুধা মেটায়, কিন্তু বাঁধ আমাদের জীবন বাঁচায়।
এলাকাবাসীর দাবি, বিষখালি নদীর ভাঙন রোধে দ্রুত টেকসই বেরিবাঁধ নির্মাণ, ব্লক ফেলা এবং ফসলি জমি রক্ষার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় আগামী বর্ষা মৌসুমে শত শত পরিবার বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মানববন্ধনে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ, কৃষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও অংশগ্রহণ করেন। তাদের একটাই আহ্বান, আমাদের ত্রাণ নয়, টেকসই বাঁধ দিন তাহলেই উপকূলের মানুষ বাঁচবে, দেশও বাঁচবে।

পাথরঘাটা প্রতিনিধি :
প্রকাশের সময়: মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫ । ৭:৩৩ অপরাহ্ণ